শেষ আপডেট: 4th September 2024 10:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মণিপুরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষ নিয়ে সব নিরাপত্তা বাহিনীই চিন্তায় পড়েছে। জাতিদাঙ্গায় বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে রাজ্য পুলিশ ছাড়াও আধা সেনা এবং সেনা মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ ও সেনার বিরুদ্ধে আগেই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে। তার উপর বিবাদমান দুই গোষ্ঠীর এক পক্ষ মৈতেই সমাজের অসম পুলিশের উপর আস্থা নেই। অন্যদিকে, কুকিরা রাজ্য পুলিশকে একপ্রকার বয়কটের রাস্তা নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তিনদিন আগে শুরু হওয়া হিংসায় জঙ্গিরা ড্রোন থেকে বোমা ফেলায় সব নিরাপত্তা এজেন্সিই চিন্তায় পড়েছে। জঙ্গিদের ড্রোন ব্যবহারে নিরাপত্তা বাহিনীও বিপন্ন বোধ করছে।
রাজ্যের এক বিজেপি বিধায়ক দিনগাংলুই গাংমেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়ে অবিলম্বে মণিপুরে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। দিনগাংলই জাতিতে নাগা। সেই কারণে মৈতেই ও কুকিদের মধ্যে মীমাংসা সূত্র বের করতে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং তাঁকে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছেন। সেই বিজেপি বিধায়ক জানাচ্ছেন, তিনি গুয়াহাটি ও ইম্ফলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন। তাঁর মনে হয়েছে, পরিস্থিতি শান্ত করতে হলে কিছু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কেন্দ্রকে নিতে হবে।
অন্যদিকে, জঙ্গিরা কীভাবে মারণ ড্রোন পাচ্ছে, তারমধ্যে দেশি বোমা কীভাবে যুক্ত করে আক্রমণ শানাচ্ছে সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত জরুরি বলে মনে করছেন বাহিনী প্রধানেরা। তিন দিন আগে শুরু হওয়া অশান্তিতে কুকি ও মৈতেই এলাকা মধ্যবর্তী বাফার জোন অর্থাৎ নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ড্রোন থেকে বোম নিক্ষেপ করা হয়।
হিংসা বন্ধের পাশাপাশি কী ধরনের রাজনৈতিক সমাধান সূত্র দাবি করছে বিবদমান দুই জাতি গোষ্ঠী? গত বছর ৩ মে জাতিদাঙ্গা শুরুর কয়েক মাসের মাথায় মৈতেইরা দাবি করে তারা কুকিদের সঙ্গে একত্রে বাস করবে না। অন্যদিকে, কুকিরাও জানিয়ে দেয়, তারা মৈতেই মুক্ত পৃথক প্রশাসন চায়। সেই দাবি আদায়ে পার্বত্য মণিপুরে কুকি এলাকায় সরকারি অফিসকাছারি থেকে এলাকার মৈতেই নাম মুছে কুকি ভাষায় নতুন নামকরণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় রাজনৈতিক বিবাদের বিষয় মুখ্যমন্ত্রী বীরেন স্বয়ং। মৈতেই সম্প্রদায়ের মানুষ বীরেনকে নিয়ে কুকিদের আপত্তি নতুন নয়। জাতিদাঙ্গা শুরুর পর থেকে তাঁর অপসারণ দাবি করে আসছে কুকিরা। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় সরকারের এখনও বীরেনের অপসারন নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা নেই। উত্তর-পূর্বে দলের তরফে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। বীরেন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, হিমন্ত দলকে পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যে এখন বীরেনের বিকল্প কেউ নেই। তাঁকে সরালে প্রশাসনিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে।
কিন্তু বিজেপির নাগা বিধায়ক ভিন্ন কথা বলছেন। তাঁর বক্তব্য, মণিপুর বিবাদ এখন আর আইন-শৃঙ্খলার সমস্যায় আটকে নেই যে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করলেই মিটে যাবে। তাঁর কথায়, বিবাদের রাজনৈতিক সমাধান চাই। যে বিষয়ে কোনও সদর্থক ভূমিকা তিনি পালন করতে পারছেন না। এই কথাই তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়েছেন।