শেষ আপডেট: 24th June 2024 18:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো, বীরভূম: পঞ্জিকা অনুযায়ী ৭ আষাঢ় থেকে শুরু হয়েছে অম্বুবাচী। এই দিন থেকে রামপুরহাটের ব্যাঘ্রচণ্ডীর মন্দিরে শুরু হয়েছে অম্বুবাচী উৎসব। জঙ্গলে ঘেরা বনহাট গ্রাম। সেখানেই রয়েছে ব্যাঘ্রচণ্ডী দেবীর মন্দির। বহু বছর ধরে চলে আসা এই পুজোয় হিন্দু-মুসলিম-জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। এক সঙ্গে ভোগ রান্না করে পাত পেড়ে খান। এই পুজোকে অনেকে সম্প্রীতির মেলবন্ধন বলেও মনে করেন।
বনহাট গ্রামটি মূলত মুসলিম অধ্যুষিত। খুব অল্প সংখ্যক হিন্দু ও জনজাতি পরিবার রয়েছে এখানে। তবুও প্রতি বছর ঘটা করে সেখানে অম্বুবাচী উৎসব পালিত হয়। শনিবার থেকেই দেবীর বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। দুপুরে পাঁচরকমের ফল, কাজু, কিসমিস দিয়ে পায়েস, সঙ্গে খিচুড়ি, পাঁচ তরকারি, ও চাটনি দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়েছিল। রবিবারও একই ভাবে পুজো দেওয়া হয়। অন্যান্য তিথিতে এখানে বলি দেওয়ার প্রথা থাকলেও এই দিনটিতে কোনও বলিদান হয় না। ভোগ রান্নার দায়িত্বে থাকা গ্রামবাসী কাপাস শেখ, হৃদয় চট্টোপাধ্যায়, সাবা হেমব্রমরা বলেন, "দেবী ব্যাঘ্রচণ্ডীর অম্বুবাচী উৎসব সব সম্প্রদায়ের মিলন উৎসব হিসাবে পালিত হয়। এখানে জাত ধর্ম বলে কিছু নেই।"
এই পুজো সূচনার ইতিহাস বলতে গিয়ে গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় সাতশ বছর আগে মুলুটির রাজা বাজবসন্ত রায়ের নাতি বাম রায় এই মন্দির নির্মাণ করে দেবী শীলামূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা তারাপীঠ থেকে মুলুটি গ্রামে দেবী তারার বোন মৌলীক্ষা কালীর মন্দিরে যাওয়ার আগে ব্যাঘ্রচণ্ডীদেবীর পুজো করে তবে সেখানে যেতেন। বহু বছর ধরে মন্দিরটি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ছিল। গ্রামের মানুষ বহুবার প্রশাসনের কাছে মন্দির সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পরে এলাকাবাসীর দানেই মন্দিরের সংস্কার হয়েছে। সেখানে মন্দির সংস্কারের পাশাপাশি ভোগের জন্য আলাদা রান্নাঘর ও একটি গেস্ট হাউসও গড়ে তোলা হয়েছে।