শেষ আপডেট: 9th August 2024 15:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণের পর একে একে যখন শোকবার্তা আসছে সেই সময়ে কার্যত অন্য পথে হাঁটলেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ফেসবুকে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে লম্বা পোস্ট করেছেন তিনি। কিন্তু তাতে শোকের চিহ্নমাত্র নেই। বরং লেখিকা স্পষ্ট বলেছেন, তাঁর চোখের জল বেরোবে না! কেন এমন পোস্ট তিনি করেছেন তার জন্য একটু অতীতে ফিরে যেতে হবে।
তসলিমা যে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেছেন তাতে স্পষ্ট, তাঁর বই নিষিদ্ধ করার ইস্যুতে তিনি এখনও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তৎকালীন সিপিএম সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। লেখিকার কথায়, ''২০০৩ সালের আগে এরকম খবর শুনলে আমি হয়তো চোখের জল ফেলতাম। কিন্তু তিনি আমার চোখের জল অনেক বছর ঝরিয়েছেন, তিনি বেঁচে থাকাকালীন। তাই চোখ থেকে আজ কোনও জল ঝরলো না তাঁর জন্য।'' এই পোস্টেই আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তসলিমা। স্পষ্ট বলেন, অন্য সবার মতো তিনি 'ভাল থাকুন, রেস্ট ইন পিস'ও লিখতে পারবেন না।
নিজের 'দ্বিখণ্ডিত' বইটি নিষিদ্ধ করা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। বুদ্ধবাবু সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, ''২০০৩ সালে বলা নেই কওয়া নেই আমার দ্বিখণ্ডিত বইটি তিনি নিষিদ্ধ করলেন। সেদিনই মনে হয়েছিল আমি তাঁর চেয়ে খাঁটি বামপন্থী।'' তসলিমার অভিযোগ, রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে পৃথক করার জন্য লিখেছিলেন বলে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর বই নিষিদ্ধ করেছিলেন। তাঁর এও দাবি, কলকাতা হাইকোর্ট বই সংক্রান্ত মামলা জেতার পর তাঁকে কলকাতা থেকে তাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল বামফ্রন্ট সরকার।
লেখিকা স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, ২০০২ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সখ্য ছিল। একসময়ে বুদ্ধবাবুর সঙ্গে সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে আড্ডা দিতেন, প্যারিস থেকে তাঁর জন্য তিনি যা চাইতেন উপহার এনে দিতেন। তবে পরে সেই মানুষটি একসময় বাংলায় তাঁর শেষ আশ্রয়টিকে চিরকালের মতো টেনে নেবেন তা প্রথমে ভাবেননি তিনি। এই প্রসঙ্গে বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও খোঁচা দিয়েছেন তসলিমা। বলেছেন, তিনিও বুদ্ধবাবুরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁকে অচ্ছুৎ হিসেবে ট্রিট করেন।