শেষ আপডেট: 29th June 2024 14:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: খাস কলকাতার হস্টেলে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। মোবাইল চুরির অভিযোগে হাত-পা বেঁধে ওই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। বউবাজারের হস্টেলে মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন ইরশাদ আলম।
বেলগাছিয়ার জে কে ঘোষ রোডে থাকতেন ইরশাদ। চাঁদনি চকের একটি টেলিভিশন সারাইয়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। ইরশাদের পরিবার জানিয়েছে, রোজকার মতো শুক্রবারও কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি। এদিন সকালে বউবাজারের নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ইরশাদ। সেখানেই সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ উদয়ন হস্টেলের সামনে ভীম নাগ মিষ্টির দোকানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময়েই তাঁকে মোবাইল চোর সন্দেহে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যায় আবাসিকরা। এরপর হস্টেলের গেট বন্ধ করে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
এমনকী মারধরের পর দীর্ঘক্ষণ হস্টেলের মধ্যেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন ইরশাদ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেও প্রাথমিকভাবে ঢুকতে পারেনি পুলিশ। প্রায় আধ ঘণ্টা পর গুরুতর জখম অবস্থায় যুবককে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইরশাদের দুই হাতের কব্জিতে গভীর ক্ষত ছিল। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমাট বেঁধেছিল রক্ত। তাঁর পা ভাঙা ছিল। কিন্তু কেনই বা আইন হাতে তুলে নিয়ে তাঁকে এমন বেধড়ক মারধর করা হয়?
আবাসিকদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার হস্টেল থেকে একটি মোবাইল ফোন চুরি যায়। মুচিপাড়া থানায় মোবাইল চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়। ইরশাদকে ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে আবাসিকদের তাঁকে মোবাইল চোর বলে সন্দেহ হয়। অভিযুক্তদের দাবি, মোবাইল চুরি করার কথা নাকি স্বীকার করেন ইরশাদ। ১ হাজার টাকায় ফোনটি তিনি চাঁদনিচকে বেচে দিয়েছেন বলে জানান। আবাসিকরা তখন তাঁকে সেই ফোন এনে দেওয়ার কথা বলেন। ইরশাদ জানান, এখন আর তাঁর পক্ষে সেটি সম্ভব নয়। তখনই শুরু হয় বেধড়ক মারধর।
ঘটনাটিতে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে হস্টেলের ঘর থেকে ৬টি ব্যাট ও ১ টি লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে ১ টি ব্যাট দুই টুকরো হয়ে গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, এই ব্যাট দিয়েই ইরশাদকে মারধর করা হয়। শনিবার ধৃত ১৪ জনকে ব্যাঙ্কশাল আদালত তোলা হয়।