শেষ আপডেট: 10th March 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মারণ রোগকেও তাহলে জয় করা যায়! এইডসের কবল থেকেও সুস্থ শরীরে ফেরানো যায় রোগীকে! দু’দশকের লড়াই জিতল আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান। এইডস আক্রান্ত পৃথিবীর প্রায় কোটি মানুষকে রোগমুক্তির দিশা দেখালেন লন্ডনের চিকিৎসক-গবেষকরা। এইডস শুধু নয় চিকিৎসার আধুনিক পদ্ধতিতে সারল রক্তের ক্যানসারও। মারণ রোগের আস্ফালণ বন্ধ করল অস্থিমজ্জা (স্টেম সেল) প্রতিস্থাপণ। চার বছর টানা পর্যবেক্ষণে রেখে দেখা গেল ওই রোগী শুধু এইডস নয়, জয় করেছেন ক্যানসারকেও। ভাইরাসের ছিটেফোঁটাও বেঁচে নেই তাঁর শরীরে। অ্যাডাম ক্যাস্টিল্লেজো। বয়স ৪০ বছর। তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় গোটা বিশ্ব তাঁকে চেনে ‘লন্ডন পেশেন্ট’ নামে। স্টেম শেল থেরাপিতে এইডস আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করা হয়েছে এমন গত বছরই প্রকাশিত হয়েছিল ‘নেচার’ পত্রিকায়। সাফল্যের কথা বলেছিলেন লন্ডনের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। সেই সময় রোগীর নাম. পরিচয় গোপন রাখা হয়েছিল। চিকিৎসায় সাড়া মেলার পরেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল এতদিন। ভাইরাস ফের বেঁচে উঠছে কিনা তার জন্যই কড়া নজরদারিতে ছিলেন অ্যাডাম। দিন দুয়েক আগে লন্ডনের চিকিৎসকরা ঘোষণা করেন, সম্পূর্ণভাবে রোগমুক্তি হয়েছে অ্যাডাম ক্যাস্টিল্লেজার। তাঁর নাম ও পরিচয়ও সামনে আনা হয়।
ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের ভাইরোলজিস্ট ডাক্তার রবীন্দ্র গুপ্ত।
বিজ্ঞানী বলছেন, হোস্ট সেলের এই সিসিআর-৫ বাহকের জিনগত গঠনের বদল বা মিউটেশন হয় অনেক সময়। এইডস রোগীর শরীরে এই বাহক জিনের মিউটেশন হলে সে এইচআইভি-১ ভাইরাসের জন্য অপ্রিতিরোধ্য হয়ে ওঠে। অর্থাৎ ভাইরাসকে আর চিনে উঠতে পারে না। কাজেই তার সঙ্গে জোটও বাঁধতে পারে না। আর ভাইরাস যদি বাহকের সঙ্গে জুটি না বাঁধে তাহলে তার আর কোষে ঢোকা সম্ভব হয় না। গবেষকরা বলছেন, তাই এমন ডোনার (দাতা) খুঁজতে হয় যার শরীরে এই বিশেষ জিন রয়েছে। সেই ব্যক্তির অস্থিমজ্জা থেকেই বানানো হয় এমন স্টেম-সেল যা এইচআইভির সঙ্গে লড়াই করতে পারে। অ্যাডামের শরীরেও এমনই স্টেম-সেল ঢোকানো হয়েছিল। অ্যাডামের শরীরের ৯৯ শতাংশ Immune Cells বদলে দেওয়া হয়েছিল ওই ডোনার সেল দিয়ে। যার কারণেই দেখা যায় নতুন করে আর ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারেনি তাঁর শরীরে। রোগমুক্তি ঘটে ধীরে ধীরে। অ্যাডমকে ‘এইডস-ফ্রি’ ঘোষণা করেছেন কেমব্রিজের গবেষক-চিকিৎসকরা। রবীন্দ্র গুপ্ত বলেছেন, এর পরেও তাঁর শরীরে মারণ রোগের জীবাণু তেকে গেলে সেটা সুপ্ত অবস্থায় বা ঘুমিয়ে থাকবে, কোষকে আক্রান্ত করতে পারবে না কোনওভাবেই।