শেষ আপডেট: 28th September 2023 20:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লিউকোমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার, বর্তমান সময়ে অত্যন্ত মারাত্মক একটি রোগ। ছোট ছোট অনেক লক্ষণই আছে, যাতে বোঝা যায় মারণ রোগ বাসা বেঁধেছে রক্তে। ব্লাড ক্যান্সার অত্যন্ত জটিল এবং মারণ রোগ ছিল একসময়। তবে সময় বদলেছে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কোনও রোগীর যদি ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে, তা হলে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। রোগ গোড়ায় ধরা পড়লে তার চিকিৎসা আছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের শরীরে এই রোগ বাসা বাঁধে। যে কোনও বয়সে ব্লাড ক্যান্সার হতে পারে। এর ফলে রক্তের মধ্যে থাকা উপাদানগুলির অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার ও গঠন হতে থাকে। সে লোহিত রক্ত কণিকা হোক বা শ্বেত রক্ত কণিকা হোক বা প্লেটলেট। সাধারণত ব্লাড ক্যান্সারকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। একটি হল অ্যাকিউট বা তীব্র এবং অন্যটি হল ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী।
অ্যাকিউট ব্লাড ক্যান্সারের ফলে শরীরে শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বেড়ে যেতে থাকে। শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যেই সব থেকে বেশি দেখা যায় এই রোগ। এটি দুই প্রকারে হতে পারে, অ্যাকিউট মাইলয়েড লিউকোমিয়া এবং অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া।
ক্রনিক ব্লাড ক্যান্সারের ফলে দেহে তুলনামূলকভাবে পরিণত শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। মূলত ৫০-৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে এই রোগটি প্রায়শই দেখা যায়। এটিও দুই প্রকারে হতে পারে, ক্রনিক মাইলয়েড লিউকোমিয়া এবং ক্রনিক লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া।
৫০ বা তার বেশি বয়স্কদের মধ্যে একাধিক মাইলোমার মতো লক্ষণ দেখা যায়। মাইলোমা হল অস্থি মজ্জার মধ্যে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। এর বিভিন্ন লক্ষণগুলি হল হাড়ের ব্যথা, রক্তাল্পতা, কিংবা রেনাল ফেলিওর ইত্যাদি।
১) রক্তাল্পতার জন্য দুর্বলতা, খাবারের অরুচি, বুক ধড়ফড়, পায়ে জল জমে যাওয়া, ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া।
২) দীর্ঘদিনের জ্বর বা ঘনঘন জ্বরে পড়া।
৩) অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ।
৪) লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া। লিভার ও প্লীহার আকার বেড়ে যাওয়া।
৫) ওজন হঠাৎ করেই কমে যায়।
৬) হাড়ে তীব্র ব্যথা। গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা হতে থাকে রোগীর।
৭) ঘুমের মধ্যে ঘেমে যাওয়া। বিশেষ করে রাতে দরদর করে ঘাম হওয়াও এই রোগের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। ঘরে পাখা বা এসি চললেও ঘাম হবে। শরীরে অস্বস্তি শুরু হবে রোগীর।
৮) ব্লাড ক্যানসার বা অস্থিমজ্জায় ক্যানসার হলে কালশিটে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে। ঘন ঘন কালশিটে পড়তে দেখা যাবে। কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করেন ডাক্তারবাবুরা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ রোগ নিরাময়ের জন্য অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনও করা হয়ে থাকে। আবার এখনকার সময়ে স্টেম সেল থেরাপিতেও অসাধ্য সাধন করছেন ডাক্তারবাবুরা। কাজেই রোগ যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তার নিরাময়ের উপায়ও ততটাই সহজ হবে।