শেষ আপডেট: 19th June 2024 19:35
মঙ্গলবার রাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল হলং এর ঐতিহ্যবাহী বন বাংলো। আগুন নিভলেও ক্ষতির ক্ষত গভীর। কারণ জলদাপাড়া অভয়ারণ্যের গভীরে সবুজে ঢাকা এই বন বাংলোর প্রতি বরাবরই অন্যরকম টান অনুভব করেন রাজ্যের ভ্রমণপ্রিয় মানুষ। বিষয়টা জানা আছে বন দফতরেরও। কিন্তু ফিনিক্স পাখির মতো সেই বাংলোর বেঁচে ফেরা হবে কিনা তা নিয়ে এখনও অন্ধকারেই রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
হলং বাংলো পুড়ে যাওয়ার পর বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে হয় দফতরের মন্ত্রীকে। অনিবার্যভাবেই ওঠে হলং-এর পুনর্নির্মাণ নিয়ে কী পরিকল্পনা রয়েছে,সেই প্রশ্ন। উত্তরে বীরবাহা বললেন, "আমাদের অভিভাবক আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা আদেশ দেবেন আমরা পালন করব।"
এমনকী ঠিক কী কারণে হলং বাংলোর এমন পরিণতি তাও এখনও স্পষ্ট নয় বীরবাহার কাছে। সাংবাদিকরা হলং-এ অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "একটা কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আমরা সেই কমিটিকে পাঠাব তদন্ত করার জন্য। বিনা তদন্তে বলতে পারব না কেন আগুন লেগেছে। কমিটি তদন্ত করে রিপোর্ট দিলে বলতে পারব। ১৫ তারিখ থেকে যেহেতু ফরেস্টে টুরিস্ট আসা বন্ধ রয়েছে তাই প্রাথমিক অনুমান যে শট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। তবে তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। একদম সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই।"
এরপরেই মন্ত্রী বলেন, "হলং বাংলো একটা ঐতিহ্যবাহী বাংলো। সেটার এই পরিণামে আমরা, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের প্রত্যেকটা কর্মীই মর্মাহত। যেসব কর্মীরা দিন রাত বনকে আগলে রাখেন তাঁদের জন্য খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। আমি দফতরে রয়েছি বলে বুঝতে পারছি। তাই আমরাও চাই সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসুক।" মন্ত্রী জানান, প্রাথমিক ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়েছিল পোড়া গন্ধ পাওয়ার পরেই। কিন্তু যেহেতু কাঠের কাঠামো, তাই নিমেষেই আগুন ছড়িয়ে যায়। সেটা রোখা যায়নি।
জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে ১৯৬৭ সালে তৈরি হয়েছিল এই বনবাংলোটি। বরাবরই এই সুদৃশ্য বনবাংলোর কদর ছিল দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছেও। রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ছুটি কাটাতে সপরিবারে যেতেন হলং এর বন বাংলোয়। এই বন বাংলো ঘিরে ছিল তাঁর অনেক স্মৃতি। সেই সবই আরও রাজকীয় করে তুলেছিল হলংকে। আগুনে পোড়া সেই বন বাংলো পুনর্নির্মাণের কোনও আভাস বনমন্ত্রী দিতে না পারায় আরও একটু গাঢ় হল মন খারাপের মেঘ।