শেষ আপডেট: 3rd August 2024 16:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশের পরিস্থিতি ফের অগ্নিগর্ভ। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গণ বিক্ষোভের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বহু জায়গায় পথ অবরোধ করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরুদ্ধ।
দেশের বেশ কিছু জায়গায় শাসক দল আওয়ামী লিগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের সঙ্গে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। তারমধ্যে কুমিল্লার ঘটনাটি বড়। সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্র লিগের সংঘর্ষে ২৬জন আহত হয়েছেন। তাঁদের পাঁচজন গুলিবিদ্ধ বলে আন্দোলনকারীদের দাবি। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ছাত্র লিগ তাদের উপর হামলা চালিয়েছে।
মাঝে ক’দিন শান্ত থাকার পর শুক্রবার থেকে ফের অশান্তি ছড়াতে শুরু করেছে বাংলাদেশে। শুক্রবার দু’জন মারা গিয়েছেন। তাঁদের একজন হবিগঞ্জের বাসিন্দা। পেশায় শ্রমিক। তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলার সময় লাগোয়া রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন। অন্যদিকে, খুলনায় আন্দোলনকারীরা একজন পুলিশ কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা করে।
শনিবার দেশব্যাপী গণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে আন্দোলনকারীরা। রবিবার থেকে শুরু হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য অসহযোগ আন্দোলন। সেই আন্দোলনের চরিত্র কেমন হবে এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রশাসনিক মহলের আশঙ্কা, আন্দোলনকারীরা ট্যাক্স না দেওয়ার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে আর্থিকভাবে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করতে পারে। ইতিমধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই দেশে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের রোজগারের অর্থ বা রেমিট্যান্স থেকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পায়। সেই আয়ে ভাটা পড়তে শুরু করেছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার ঢাকায় তাঁর সরকারি বাসভবনে এক অনুষ্ঠানে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমার দুয়ার খোলা। আন্দোলনকারীরা আসুন। আমি যে কোনও সময় তাঁদের কথা শুনতে রাজি। আলোচনায় সমস্যার সমাধান মিলবে।’ হাসিনা জানান, তিনি পড়ুয়াদের মুক্তি দিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে সরকার কঠোর অবস্থান বজায় থাকবে।
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান নিয়ে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সমন্বয়কেরা কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও আওয়ামী লিগের প্রস্তাব তারা বর্জন করেছে। আওয়ামী লিগ তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়েছে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। দলের তিন শীর্ষ নেতা জাহাঙ্গির কবীর নানক, বাহাউদ্দিন নাসিম এবং মাহবুব উল আলম হানিফকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে। আওয়ামী লিগের বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে এই তিনজনের দলের বাইরেও গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলকভাবে বেশি।
যদিও আন্দোলনকারীদের এক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এখন আর আলোচনার অবকাশ নেই। সিদ্ধান্ত যা হওয়ার রাজপথেই হবে। তাঁর অভিযোগ ছয় সমন্বয়ককে গোয়েন্দা বিভাগে নিয়ে আটকে রেখে জোর করে আলোচনায় বসানোর চেষ্টা হয়েছিল। তখনও আমরা প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলাম।