শেষ আপডেট: 22nd July 2024 23:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দীর্ঘ টানাপড়েনের পর গত সোমবার মাওবাদী নেতা অর্ণব দামের গবেষণার জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কাউন্সেলিং হয়। এরপর শুক্রবার নথিপত্র যাচাইয়ের পর আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে অর্ণবের ইতিহাস নিয়ে পিএইচডির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এরই মাঝে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। জেলবন্দি মাওবাদী নেতা আদৌ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারবেন কিনা তা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অর্ণব দাম। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর সাজাও ঘোষণা হয়েছে। বর্তমানে জেলবন্দি অর্ণবের জন্য রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। আর এই পরিস্থিতিতে তাঁর ক্লাস করা সম্ভব হবে কিনা আর সম্ভব হলেও তা কীভাবে, এই যাবতীয় বিষয়ে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, জেলের সুপারের পক্ষ থেকে সোমবার চিঠি মারফত জানানো হয়েছে, ক্লাসে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কিংবা ভার্চুয়ালি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাস করতে পারেন অর্ণব। তবে প্রয়োজন ছাড়া তাঁকে পিএইচডির ক্লাসে পাঠাতে রাজি নয় জেল কর্তৃপক্ষ। তাই মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে উপস্থিত নাও পারেন না অর্ণব। যদিও এই নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর হয়েছেন অর্ণব। এরপর তাঁকে পিএইচডি করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আদালতে আর্জি জানান তিনি। সেই আবেদনে সাড়া দেন বিচারক।
এরপর গত ২৬ জুন পুলিশের কড়া পাহারায় ইন্টারভিউয়ের জন্য বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল অর্ণব দামকে। ৫ জুলাই মেধা তালিকা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই তালিকা দেখেই অনেকের চোখ কপালে ওঠে। ইতিহাস বিভাগের মেধা তালিকায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৬.৮৬৭০ নম্বর পেয়ে প্রথম হন অর্ণব। ইতিহাসে পিএইচডি করার ইন্টারভিউয়ে ২৪৯ জনকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থান অধিকার করেন জেল বন্দি অর্ণব ওরফে বিক্রম। আর এই পরেই ঘটে বিপত্তি। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী মেধা তালিকায় থাকা পরীক্ষার্থীদের জন্য ৯ জুলাই কাউন্সেলিংয়ের দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ৮ জুলাই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় অনিবার্য কারণে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়।
এরপরই আসরে নামেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য ডাঃ গৌতম চন্দ্রের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন তিনি। তারপরই অর্ণব দামের ভর্তি নিয়ে জট কাটে। দীর্ঘ টালবাহানার পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডির ছাত্র হিসেবে পরিচিত হলেও তাঁর ক্লাসে উপস্থিতি ফের একপ্রস্থ জটিলতা তৈরি হয়েছে।