শেষ আপডেট: 11th July 2024 12:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসে পিএইচডি করার প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। কিন্তু এখনও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি তিনি। এমনকি তাঁর কারণেই গোটা ইতিহাস বিভাগের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হুগলি জেলে দু'দিন প্রতীকী অনশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্ণব।
এই পরিস্থিতিতে কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, মাওবাদী অভিযোগে বন্দি অর্ণব দামকে পিএইচডি করতে দিতে হবে। কারণ তিনি যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। তিনি টুইট করে আরও জানান, এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ও কারামন্ত্রীর মধ্যে কথা হয়েছে। তাঁরা সহযোগিতা করবেন। অর্ণবকে হুগলি থেকে বর্ধমান জেলে সরানো হবে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গে অভিযোগ করেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ আন্তরিক হলেও উপাচার্য অকারণে জট তৈরি করছেন এই নিয়ে।
মাওবাদী অভিযোগে বন্দি অর্ণব দামকে পিএইচডি করতে দিতে হবে। ও যোগ্যতা প্রমাণ করেছে।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 11, 2024
শিক্ষামন্ত্রী ও কারামন্ত্রীর কথা হয়েছে। ওঁরা সহযোগিতা করবেন। অর্ণবকে হুগলি থেকে বর্ধমান জেলে সরানো হবে।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ আন্তরিক । তবে উপাচার্য অকারণ জট তৈরি করে বাধা দিচ্ছেন।
সোমবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছিল, ইতিহাসের পিএইচডি কোর্সে ভর্তি আপাতত বন্ধ রাখা হল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে। তবে অন্য বিষয়ে পিএইচডিতে ভর্তি চলবে নিয়মমাফিক। ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য মঙ্গলবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল অর্ণবের। তা হয়নি।
এই নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র জানান, জেল সুপারের আবেদনের ভিত্তিতে অর্ণবকে ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জেল থেকে একজন ছাত্রের ক্লাস বা গবেষণা করার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে হবে। সেই জন্যই আপাতত ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে।
ইতিহাসে গবেষণার জন্য গত ২৬ জুন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারভিউ দেন অর্ণব। শুক্রবার ফল বার হলে দেখা যায়, সফল আবেদনকারীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে অর্ণবের নাম। কিন্তু তাঁকে ভর্তি না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়, পিএইডি করার জন্য অর্ণবকে রাজ্য সরকার অনুমতি দিয়েছে কিনা, এবং কীভাবে তিনি এই কোর্স করবেন, তা জানতে চেয়ে হুগলি জেলের সুপারকে চিঠি পাঠানো হবে।
এই অবস্থায় অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অর্ণব। বিষয়টি তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দিয়েছেন। বুধবার রাত থেকে দু'দিন অনশন করছেন তিনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় অর্ণবই ছিলেন মূল অভিযুক্ত। পরে হিংসার পথ ছেড়ে পড়ায় মন দেন। গরাদের আড়ালে থেকেই স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও সেট উত্তীর্ণ হন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শিলদা কাণ্ডে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয় অর্ণব দামের। প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। ১৭ মার্চ হুগলি জেলা সংশোধনাগারে পাঠানো হয় অর্ণবকে। অর্ণবের বাবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। খড়্গপুর আইআইটিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় মাওবাদী সংগঠনে নাম লেখান অর্ণব। এখন অবশ্য জেলে থেকেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই মেধাবী ছাত্র।