শেষ আপডেট: 6th January 2021 05:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিরাট কোহলি যখন ভারতীয় শিবির ছেড়ে দেশে ফিরে এলেন, সেইসময় মৌচাকে প্রথম ঢিলটি মেরেছিলেন সুনীল গাভাসকর। তিনি জানিয়েছিলেন, দল যখন বিপদে সেইসময় বিরাট না যেতেই পারত। কারণ আমাদের সময়ে এরকম বিলাসিতার সুযোগ ছিল না। আমরা ছুটিও পেতাম না। শুধু সানি নয়, সতীর্থের প্রতি নিজের সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন কপিলদেবও। তিনিও বলেছিলেন, সানির যখন পুত্র সন্তান জন্ম নেয়, সেইসময় ও দেশে ফিরতে পারেনি। সেইসময় আমাদের বলার জায়গাও ছিল না, দুম করে আমরা দেশে ফিরতে পারতাম না। সানি, কপিল যেমন বিরোধিতা করেছেন, আবার অনেকেই কোহলির পাশেও দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের মত ছিল, সন্তানের জন্মের সন্ধিক্ষণের চেয়ে বড় কিছুই হতে পারে না। তাঁদের যুক্তিটা এই রকম, ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনকে তো মূল্য দিতেই হবে। ভারতের আরও এক নামী প্রাক্তন ক্রিকেটার অংশুমান গায়কোয়াড বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেননি, আবার তিনি যে কোহলিকে সমর্থন করেছেন, সেটিও নয়। পারিবারিক জীবনের এই সব আবেগের মুহূর্তে আসলে একজন মানুষের মনের মধ্যে কী ঘটে, সানির ওই পুরনো সতীর্থ মনে করিয়ে দিয়েছেন। তিনি একটি ঘটনার কথা তুলে ধরেছেন। উদাহরণটি ১৯৭৬ সালে ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের। সুনীল গাভাসকরের ছেলে রোহনেরও জন্ম হয়েছিল সেই সিরিজ চলাকালীন। রোহনের জন্মের পর জামাইকা টেস্টে সানি বাউন্সার খেলতে চাননি ওই টেস্টে। ১৯৭৬ সালের সেই সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলাররাও যেন বাউন্সারের বাগান সাজিয়ে বসেছিলেন। আর সেইসময় এক ওভারে যত খুশি সম্ভব বাউন্সারও দিতে পারতেন বোলাররা। এবং গাভাসকর যেহেতু ওপেন করতে আসতেন, তাঁকে লক্ষ্য করে বাউন্সার শুরু হয়ে যেত। বাউন্সার এর আগেও অনেক সামলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান গাভাসকর। কিন্তু পুত্র রোহন জন্মের পরে তিনি খানিক দুর্বলচিত্ত হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে গায়কোয়াড বলেছেন, ১৯৭৬ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জামাইকা টেস্টে সত্যিকার অর্থেই রক্ত ঝরেছে। সুনীল বোলারদের বাউন্সার ও বিমার নিয়ে আম্পায়ারদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। আম্পায়াররা শুধু হেসেছিলেন। এরপর যা হয়েছে সেটা যেন কল্পনাও করতে পারেননি গায়কোয়াড। তিনি স্মৃতিরোমন্থন করে জানান, ‘‘সুনীল মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিল মাঠেই। ব্যাটিং করার সময় সুনীলকে সেবারই প্রথম আমি মেজাজ হারাতে দেখেছি। তিনি হাত থেকে গ্লাভস আর ব্যাট ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হাঁটতে শুরু করেন।’’ যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, কেন তিনি এমন আচরণ করছেন, সেইসময় মাঠেই সতীর্থ ব্যাটসম্যানকে বলেন, ‘‘আরে তুমি আমাকে কী করে শান্ত থাকার কথা বলছ? আমি বাড়ি গিয়ে সদ্যোজাত পুত্রের মুখ দেখতে চাই। আমি তো এখানে মরতে আসিনি!’’ তারপরেই প্রাক্তন ওই তারকা ব্যাটসম্যান বলেন, ‘‘এখনকার সময়ের সঙ্গে তখনের সময়ের অনেক ফারাক ছিল। এখন দল ছেড়ে চলে আসতে পারলেও, সেইসময় এমন ব্যবস্থা ছিল না।’’