শেষ আপডেট: 16th April 2024 14:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রথম দফার লোকসভা ভোট শুরুর তিনদিন আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার রায়গঞ্জ ও বালুরঘাটে জোড়া সভা রয়েছে মোদীর। তার কিছুক্ষণ আগে বাংলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এক্স-বাণ ছুড়লেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। রমেশ বলতে চেয়েছেন, বিজেপি প্রার্থী তথা কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মহাত্মা গান্ধী ও গান্ধী হত্যাকারী নাথুরাম গডসের মধ্যে কাকে বেছে নেবেন তা নিয়ে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীও কি গান্ধী ও গডসের মধ্যে কাকে প্রথমে স্থান দেবেন, সে বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করবেন? নাকি তাঁকেও ভাবার সময় নিতে হবে?
প্রসঙ্গত, বালুরঘাট বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্বাচনী কেন্দ্র। দুপুরে বালুরঘাটে সভা করে রায়গঞ্জে যাবেন মোদী। রায়গঞ্জে এবারে দেবশ্রী চৌধুরীকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। এখানে এবারে প্রার্থী বদল করেছে গেরুয়া শিবির। উত্তরবঙ্গের এই দুই আসনে দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৬ এপ্রিল ভোটগ্রহণ। যদিও তার আগেই আগামী ১৯ এপ্রিল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে হতে চলেছে প্রথম দফার ভোটপর্ব।
কংগ্রেসের আক্রমণের মূল নিশানা মোদীর বাংলা সফরকে ঘিরেই। রমেশ বলেছেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ইস্তফা দিয়ে বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। দেশের প্রতি বিজেপি এবং মোদীর দায়বদ্ধতা নিয়ে তাঁর মন্তব্য সেই সন্দেহকে আরও গভীর করেছে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর কাছে যখন জানতে চাওয়া হয়েছিল, গান্ধী না গডসে কাকে বেশি পছন্দ করেন তিনি। জবাবে গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাছাই করার জন্য ভাবার সময় লাগবে।
Today’s questions for the PM as he heads to West Bengal:
— Jairam Ramesh (@Jairam_Ramesh) April 16, 2024
1. Has the ED forgotten about Tapas Roy?
2. Why does the BJP keep making empty promises about Gorkhaland?
3. Can the PM help Justice Ganguly in choosing between Gandhi and Godse?
Jumla details below:
1. TMC… pic.twitter.com/qUOBqv3qV2
তাঁর এই মন্তব্য এমন সময়ে উঠছে যখন বিজেপির সাংসদ এবং লোকসভা ভোটে দাঁড়ানো প্রার্থীরা দেশের সংবিধানই বদলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলেছেন। ভারতের জাতীয়তাবোধ এবং রাষ্ট্র নিয়ে বিজেপি কী করতে চায়, তা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী কি গান্ধী ও গডসের মধ্যে কাকে প্রাধান্য দেবেন, তা স্পষ্ট করবেন, প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তাঁর কটাক্ষ, নাকি মোদীও এ নিয়ে ভাবার সময় নিতে চাইবেন।
হ্যাশট্যাগ ছুপ্পি তোড়ো প্রধানমন্ত্রীজি লিখে রমেশ আরও বলেছেন, গতবছর দার্জিলিংয়ে প্রবল বিক্ষোভ-আন্দোলন আছড়ে পড়েছিল। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে গোর্খারা ফেটে পড়েছিল। দার্জিলিং পাহাড়, শিলিগুড়ির তরাই অঞ্চল এবং ডুয়ার্সের সুষ্ঠু ও স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল বিজেপির ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের ইস্তাহারে। কিন্তু, ২০০৪ সাল থেকে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে জিতে আসলেও বিজেপি কোনও পদক্ষেপ করেনি।
প্রতিবার নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ক্ষমতায় আসার পর তা বরাবরের মতো ভুলে যায় ওরা। ২০১২ সালে কংগ্রেসই একমাত্র গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তৈরি করে সমাধানের চেষ্টা করেছিল। যেমনটা করেছিল ১৯৮৮ সালে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদ গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির মধ্যে কি সেই হিম্মত আছে যে, তাঁরা তাঁদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন? গোর্খাদের জন্য কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী তা কি ভেবেছেন, প্রশ্ন তুলেছেন রমেশ।
জয়রাম রমেশ এছাড়াও সদ্য দলত্যাগী তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় নিয়েও প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপিকে কাঠগড়ায় তোলেন এক্সবার্তায়।