একুশে জুলাইয়ের দাপটে ভিড়ে বেসামাল হল মেট্রো।
শেষ আপডেট: 21st July 2024 16:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রবিবার পড়েছে। একুশে জুলাই ও রবিবার একসঙ্গে পড়ায় নিত্যযাত্রীরা অনেকেই হাঁফ ছেড়েছিলেন। যাক, অফিস-কাছারি নেই, ফলে দিব্যি বাড়িতে বসেই ধর্মতলার সুবিশাল জনসভার আঁচ পাওয়া যাবে। কিন্তু যাদের বেরোতে হল, তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে ছিল বাড়তি ভোগান্তি।
রবিবারে এমনিতেই পনেরো মিনিট ব্যবধানে মেট্রো চলে। কিন্তু একুশে জুলাইয়ের ভিড় যে পনেরো মিনিট ব্যবধানে সামলানো যাবে না, সম্ভবত তা আঁচ করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। দুপুর সাড়ে এগারোটা নাগাদ দেখা গেল, প্ল্যাটফর্মের নোটিস বোর্ডে জ্বলজ্বল করা 'ডিপারচার' সময়ের বাইরেই চলাচল করছে মেট্রো। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই চালানো হচ্ছে ট্রেন।
শোভাবাজার স্টেশনে দুপুর পৌনে বারোটা নাগাদ শোনা গেল, ঘোষণা হচ্ছে, দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ-মুখী লাইনে ট্রেন পর পর রয়েছে শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক, সেন্ট্রাল, এসপ্ল্যানেড, ময়দান ও রবীন্দ্রসদন স্টেশনে। যা পনেরো মিনিট ব্যবধানে চললে থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু তারপর ট্রেনে উঠতেই বোঝা গেল ছবিটা। কার্যত তিলধারণের জায়গা নেই। যাত্রীদের বেশিরভাগই কলকাতার বাইরে থেকে এসেছেন। এসপ্ল্যানেড নামবেন, শহিদ দিবসের সমাবেশ উপলক্ষ্যে। কিছু নিত্যযাত্রীরাও আছেন। ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ করাই দায় হয়ে পড়েছে। বেলগাছিয়া স্টেশনে যেমন দুপুর সোয়া বারোটা নাগাদ মেট্রো এসে দাঁড়ালেও ছাড়তে মিনিট তিনেক লেগে গেল। শ্যামবাজার, শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক সর্বত্র তাই। ট্রেন এসে দাঁড়াচ্ছে, দরজা খুলে যাচ্ছে, কিন্তু বন্ধ হওয়ার জো নেই।
এতে করে প্রায় প্রত্যেক স্টেশনে তিন থেকে চার মিনিট করে থামতে থাকে মেট্রো। যাতে আরও লাগামছাড়া বাড়তে থাকে ভিড়। একটা সময় এসপ্ল্যানেড স্টেশনে এক-একটি মেট্রো প্রায় পাঁচ মিনিট করে দাঁড়িয়েছে। কার্যত জনজোয়ার বয়ে গিয়েছে স্টেশনে। হিমশিম খেয়েছেন মেট্রোকর্মীরা। টিকিটের জন্য বাড়তি কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছিল মেট্রো। তাতেও সামলানো যায়নি। দুপুর পৌনে বারোটার শোভাবাজার-সুতানুটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ভিড় দেখে মনে হবে, যেন অষ্টমীর দিন রাত আটটার ছবি! বাড়তি আরপিএফ বাহিনী মোতায়েন করেছে মেট্রো। ক্রমাগত বেজে উঠছে তাঁদের হুইসল।
রবিবার শহরের বাকি মেট্রো লাইনে পরিষেবা বন্ধ থাকে। হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড রুট বা শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ রুটে ইস্ট-ওয়েস্ট পরিষেবা মেলে না। রুবি-নিউ গড়িয়া রুটেও মেট্রো চলে না। ফলে সবেধন নীলমণি বলতে ছিল উত্তর-দক্ষিণ ব্লু লাইন। যা উত্তরে দক্ষিণেশ্বর-দমদম ও দক্ষিণে কবি সুভাষ-নিউ গড়িয়া দিয়ে শহরতলির দুই প্রধান লাইনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে জলোচ্ছ্বাসের মত ভিড় উপচে পড়েছিল দুই প্রান্তিক স্টেশনে।
আজ শহরে যানচলাচল যে স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকবে, তা জানাই ছিল। সপ্তাহান্ত বলে খুব বেশি অসুবিধেয় পড়তে হয়নি অধিকাংশকে। তবুও যারা বেরোলেন, নানাবিধ ভোগান্তিতে পড়তে হল তাঁদের। বেশিরভাগ রুটের বাস জনসভার জন্য তুলে নেওয়া হয়েছে। যার ফলে রাস্তায় দিব্যি পর পর বাস যেতে দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সবেতেই গায়ে পতাকা সাঁটানো ও রিজার্ভড। অটোও স্বাভাবিকের তুলনায় ঢের কম চলেছে। ফলে গুটিকয়েক যে বাস সাধারণের জন্য পরিষেবা দিয়েছে, তাতে ভিড় হয়েছে। বিশেষ করে জনসভা শেষের আগেই অনেকে সময় থাকতে ফিরতি পথ ধরতে চেয়েছেন। ফলে দুপুর দেড়টা থেকেই বিভিন্ন বাসে ভিড় হতে দেখা গিয়েছে।