গৌতম গম্ভীর
শেষ আপডেট: 7 May 2025 13:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাচের ঘরে বসে অন্যের দিকে ঢিল ছুড়বেন না।
নাম না করে গতকাল একটি আলাপচারিতায় সমালোচক ও নিন্দুকদের একহাত নেন গৌতম গম্ভীর। যারা সমালোচক, বাতানুকূল ঘরে বসে কমেন্ট্রি করেন, ক্রিকেট তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। ক্রিকেটে ১৪০ কোটি ভারতীয় নাগরিকের সমান অধিকার বলেও মন্তব্য করেন গম্ভীর।
কিন্তু ঠিক কাদের নিশানা করেছেন, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও অনেকের মতে, গৌতম গম্ভীরের টার্গেট দুজন। একজন সুনীল গাভাসকার। অন্যজন আরও এক প্রাক্তন ক্রিকেটার, যিনি একদা টিম ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব সামলেছেন। তাঁকে বর্তমানে ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় দেখা যায়।
গতকাল ‘ইন্ডিয়া অ্যাট ২০৪৭’ সামিটে যোগ দিয়ে নিজের ব্যাটিং কেরিয়ার এবং কোচিংয়ের ভূত-ভবিষ্যৎ নিয়ে মতামত পেশ করেন গম্ভীর। বলেন, ‘আমি জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছি আট মাস আগে। যদি ফলাফল ঠিকঠাক না আসে, তাহলে সমালোচনা যুক্তিযুক্ত। মানুষের কাজই হচ্ছে সমালোচনা করা। এমন বেশ কিছু মানুষ রয়েছেন, যারা ২৫ বছর ধরে কমেন্ট্রি বক্সে বসে। তাঁরা ভারতীয় ক্রিকেটকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি বলে মনে করেন।‘ এরপরও না থেমে তিনি জুড়ে দেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, ভারতীয় ক্রিকেট কারও বাপের সম্পত্তি নয়। এতে ১৪০ কোটি নাগরিকের সমান অধিকার।‘
২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম কাণ্ডারী গম্ভীর। চার বছর বাদে দেশের মাটিতে টিমকে খেতাব জেতাতে বিশেষ ভূমিকা নেন তিনি। খেলোয়াড় হিসেবে হাতে তুলেছিলেন ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও। সেই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রাইজ মানি নিয়ে সমালোচকদের টার্গেট হয়ে ওঠেন। সেই প্রসঙ্গে গম্ভীরের ব্যাখ্যা, ‘ওরা আমার আর্থিক পুরস্কার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। এই প্রবাসীরা দেশের টাকায় খায়, তারপর ট্যাক্স বাঁচাতে দেশের বাইরে চলে যায়।‘
কোচিং নিয়ে তিনি কাদের কাছে দায়বদ্ধ সেই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন গম্ভীর। বলেছেন, ‘আমি কোনও ছোট ক্লাব বা দলের কোচ নই। রাজনীতিতে বিশ্বাসী করি না। আমি এমন দল গড়তে চাই, যারা ভয়হীন ক্রিকেট সম্মানের সঙ্গে খেলতে উৎসুক!’
এই প্রসঙ্গেই অনেকে মনে করছেন গম্ভীরের টার্গেট সুনীল গাভাসকার। কারণ কিছুদিন আগে প্রাইজ মানি ইস্যুতেই টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচকে নিশানা করেন সুনীল। প্রশ্ন তোলেন: রাহুল দ্রাবিড়ের দেখানো পথই কি অনুসরণ করবেন গৌতম গম্ভীর? বোর্ডের দেওয়া আর্থিক পুরস্কার সমানভাবে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেবেন সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে?
উল্লেখ্য, টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রদত্ত প্রাইজ মানি ড্রেসিং রুমে তাঁর সমস্ত সহকর্মীর সঙ্গে সমান ভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার তৎকালীন হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়। বিসিসিআই ভারতীয় টিমকে ১২৫ কোটি টাকা পুরস্কার দিয়েছিল। তার মধ্যে কোচ, সহকারী কোচ, ফিজিও, ডাক্তার, অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফ ও সর্বোপরি সমস্ত খেলোয়াড়—সকলের ভাগ ছিল। হিসেবমতো, সেখান থেকে ৫ কোটি টাকা পেতেন দ্রাবিড়। আর তাঁর বাকি সহকারীদের জুটত আড়াই কোটি করে। কিন্তু দ্রাবিড় সেই অসম হিসেব মেনে নেননি। নিজের জন্য বরাদ্দ অর্থ কমিয়ে আর্থিক উপহার ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং কোচ সকলের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেন।
এরপরই গাভাসকার ছুড়ে দেন আসল প্রশ্ন, ‘দু’সপ্তাহ আগে বিসিসিআই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রাইজ মানি ঘোষোণা করেছে। কিন্তু এখনও আমরা বর্তমান ক্রিকেট কোচের থেকে দ্রাবিড়ের তুল্য কাজ তিনি করবেন কি না—সেই বিষয়ে কিছুই শুনিনি। তাহলে কি এটা মেনে নিতে হবে, এক্ষেত্রে রাহুল খুব ভাল রোল মডেল নন?’