শেষ আপডেট: 18th October 2023 17:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: টেনিস কিংবদন্তি আন্দ্রে আগাসির সেই বিখ্যাত সংলাপটা মনে পড়ে যায়। আগাসি বলেছিলেন, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার মধ্যে কোনও কৃতিত্ব নেই, কৃতিত্ব জেগে স্বপ্ন দেখার মধ্যে। আমি সেটাই দেখি, তাই আমার সঙ্গে অন্যজনের হিসেব মেলে না।
আগাসির আত্মজীবনী কি পড়েছেন বাংলার দুই বীরাঙ্গনা, সুতীর্থা ও ঐহিকা? চিনের গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক জিতে ফিরেছেন বাংলার টেবল টেনিসের দুই সেরা প্রতিভা। চিনের প্রতিযোগীকে হারিয়ে পদক জিতেছেন নৈহাটির দুই বঙ্গতনয়া। দুই তরুণীও জেগেই স্বপ্ন দেখেছেন, আর নিভৃতে লড়াই করে এগিয়ে গিয়েছেন।
ঐহিকা এখনও জাতীয় সিনিয়র খেতাব জেতেননি। কিন্তু তাঁর ঝুলিতে আন্তর্জাতিক পদকের সম্ভার। সুতীর্থার অতীত আরও বেশি কন্টকাকির্ণ। তাঁর নামে বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ ছিল। একটা সময় ঘর বন্ধ করে কাঁদতেন। সারা টেবল টেনিসমহল একঘরে করে দিয়েছিল তাঁকে। সেই জায়গা থেকে নিজের ক্ষমতাবলে ফিরে এসে দেশের একনম্বর টিটি তারকা হয়েছেন।
নৈহাটি ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন ক্লাবে কোচ মিহির ঘোষের হাত ধরে উঠে এসেছেন দুই বান্ধবী। দেড়বছর ধরে ডাবলস খেলছেন। তাতেই বোর্ডে এত ভাল সখ্য গড়ে উঠেছে মনে হচ্ছে যেন বহুদিনের জুটি।
মিহির ঘোষের তালিমে টিটি-র প্রাথমিক পাঠ শুরু হলেও আরও বেশি উন্নতি হয়েছে সৌম্যদীপ রায় ও পৌলমী ঘটকের কোচিংয়ে। এই টেবল টেনিস দম্পতির কোচিংয়ে সুতীর্থা ও ঐহিকা আরও ধারালো হয়েছেন।
সুতীর্থার মা যেমন মেয়ের সবটা দেখেন, ঐহিকার তেমনি বাবা গৌতম মুখোপাধ্যায়ই নিজের আদর্শে মেয়েকে গড়ে তুলেছেন। এশিয়াডে পদক জয়ের পরে পুজো উদ্বোধনের অনেক অনুরোধ এসেছে। সবটাই খুব সযত্নে প্রত্যাখ্যান করেছেন দুই তারকা।
দুই ধন্যি মেয়ের কাছে পাখির চোখ প্যারিস অলিম্পিক্সের পদক। সেই কারণেই দু’দিন ঘরে থেকেই দক্ষিণ কলকাতায় সৌম্যদীপদের কোচিংয়ে চলে গিয়েছেন। ফাঁকি শব্দটাই নেই দুই সফল তরুণীদের জীবনে। চিনের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে হারিয়ে তাঁরা চমক দেখিয়েছেন। এশিয়ান গেমসের পদকের পরে দু’জনেই ছুটছেন, পিছন ফিরে তাকাতে চান না। তাঁদের একটাই লক্ষ্য, গো ফর মেডেল!