
ইস্টবেঙ্গলে শুধুই চলছে চিঠিচাপাটি, নিট ফল সেই জিরো, এবার চিঠি ইনভেস্টরের!
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইস্টবেঙ্গলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না, শুধু চিঠি আদানপ্রদান চলছে। কাজের বেলায় বড় একটা অশ্বডিম্ব!
গত দু’মাসে ক্লাব ও বিনিয়োগকারী সংস্থা একের পর এক চিঠি দিয়েই চলেছে। একবারও নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসছে না। বরং কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়লে যা হয়, ঠিক সেটাই ঘটছে।
কোভিড পরিস্থিতিতে যেখানে অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে, সেই আবহের মধ্যে একটা কোম্পানি ক্লাবে অর্থ ঢালবে বলে ঠিক করে রেখেছে। কিন্তু কর্তারা সেই পথেই যেতে চান না। তাঁরা রীতিমতো জেদ ধরে বসে রয়েছেন, নিজেদের ক্ষমতা কিছুতেই যেতে দেবেন না।
ফল যা হওয়ার তাই হয়েছে, বিনিয়োগকারী সংস্থার আধিকারিকরাও কম যান না। তাঁরা চাইছেন সস্তা প্রচার, প্রতিদিন মিডিয়া লিখবে, তাঁদের নাম প্রকাশ পাবে, এটিতে তাঁরা প্রচ্ছন্ন আনন্দ উপভোগ করছেন।
একেক সময় মনে হচ্ছে শ্রী সিমেন্টের কলকাতায় কোনও মুখপাত্রই নেই। যাও বা ছিলেন শ্রেনিক শেঠ নামে এক মধ্যস্থতাকারী, তিনি মুখ বন্ধ করে রেখেছেন, যা বলছেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরিমোহন বাঙুর। তিনি দুবাইতে বসে একের পর এক যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেখিয়ে চলেছেন। তার মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়া যায় কিনা। কেননা তাঁর সামনেই গত বছর ১ সেপ্টেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
জেদ ধরে বসে রয়েছেন শ্রী সিমেন্টের মালিকও, আর বারবার বলছেন, ‘‘আগে সই, পরে কথা।’’ শুক্রবারও শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে একটি চিঠি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘‘আপনারা টার্মশিট নিয়ে যা বলেছেন, তা আমাদের পছন্দ হয়নি। আগে আপনাদের অবস্থান ঠিক করুন, তারপর আমাদের জানান। শুধু এটুকু বলতে পারি, সই না করলে আমরা আইএসএলের অ্যাপিয়ারেন্স মানি বাবদ ১৮ কোটি টাকা দেব না, এটা আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’’
এই নিয়ে আবার এদিনই রাতে ক্লাব তাঁবুতে মুখ খুলেছেন লাল হলুদের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমরা একবারও বলিনি যে টার্মশিটে সই করব না, কিন্তু আগে টার্মশিটের শর্তগুলি ঠিক করুন, তারপর সই করব।’’
এও ক্লাবের পক্ষ থেকে শ্রী সিমেন্টকে বলা হয়েছে, ‘‘আপনারা মিডিয়ায় বিবৃতি বন্ধ করে আলোচনার টেবিলে বসুন, তা হলেই তো সমস্যা মিটে যেতে পারে।’’
এমনকি বিনিয়োগকারী সংস্থার পক্ষ থেকে কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি, সেই নিয়ে বাঙুর গোষ্ঠীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘কেন আমরা সময়সীমার কথা বলব, এটা তো কর্তাদেরও বোঝা উচিত। আইএসএল খেলতে গেলে কবের মধ্যে সই করে দিতে হবে। যেহেতু কোভিড আবহের কারণে ১৭ মে অ্যাপিয়ারেন্স মানি দেওয়ার সময়টা বাড়িয়েছে এফএসডিএল, না হলে তো আমাদের বক্তব্য সেই একই। কেন এই নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছে?’’
সব থেকে বড় কথা, দুই তরফে এমন এক মনোভাব নেওয়া হয়েছে, তাতে লাল হলুদ সমর্থকরা প্রতিদিন বিভ্রান্ত হচ্ছেন। কোভিডের কারণে তাঁরা ক্লাবে প্রতিবাদ সংগঠিত করতে পারছেন না, কিন্তু ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেলে, এবার সেটিও ঘটবে অদূর ভবিষ্যতে, আন্দাজ করাই যায়।