
দ্য ওয়াল ব্যুরো : ভাল করে সম্পর্কের বন্ধনই তৈরি হলো না, তার মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে গেলেন ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্টের কর্তাব্যক্তিরা। যাদের হাত ধরে লাল হলুদের আইএসএলে খেলার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছিল। তারা সরে গেলে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল খেলা কার্যত বাতিল হয়ে যেতে পারে।
বিতর্কের ঘনঘটা গত সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছিল। ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যরা তিনটি শর্ত নিয়ে বিরোধিতা করে। তারা জানায়, এভাবে ইনভেস্টরদের হাতের পুতুল হয়ে গেলে ক্লাবের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনটি শর্ত ছিল, আইএসএলে খেলতে হবে এস সি ইস্টবেঙ্গল নামে। যা মানতে নারাজ ক্লাব সদস্যরা। ক্লাবের কর্মসমিতির সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই ক্লাবের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইনভেস্টররা। শেষটি, সদস্যদের বিষয়েও এবার থেকে ক্লাবের কর্মসমিতি নয়, সিদ্ধান্ত নেবে নয়া ইনভেস্টরদের আধিকারিকরা।
এই শর্ত মানা হবে না, এরকম একটি অলিখিত প্রস্তাব কর্তারা দিয়েছিলেন ইনভেস্টরদের। সেইসময় শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রথম থেকে আপনারা বলে এসেছিলেন আমাদের কোনও সমস্যা নেই কোনও শর্তে, এখন এসব বলার মানেটা কী? এই নিয়ে ঠান্ডা যুদ্ধ চলছিল কয়েকদিন ধরেই।
এমনকি শ্রী সিমেন্টের কর্তাব্যক্তিরা এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও এই বিষয়ে অবহিত করেছেন। রাজ্যের পক্ষ থেকে আর যে কোনও বিষয়ে নাক গলানো হবে না, তাও নাকি স্পষ্ঠ করে দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্তা সোমবার জানালেন, ‘‘জানি না যেভাবে জট পাকিয়েছে, তাতে কী হবে। তবে নাম বদল নিয়ে তাদের বক্তব্য মানা গেলেও সদস্যদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোম্পানিই শেষ কথা বলবে, এটা মানা যায় না। এমনকি ক্লাবের কর্মসমিতির সদস্যদেরও কোনও ক্ষমতা থাকবে না, তা কী করে হয়?’’
তা হলে শুরুতে কী করে ক্লাব সব শর্ত মানা হবে, এমন কথা বলেছিল? সেই প্রশ্নে ওই কর্তা বলছেন, ‘‘ওভাবে তারাও তখন পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি। তারা একটা খসড়া লিখে আমাদের পাঠিয়েছিল, সেটি দেখেই আমরা আপত্তি জানাই।’’
যা পরিস্থিতি আগামী দুই দিনের মধ্যে ক্লাব শর্ত না মানলে ইনভেস্টররা চলে যাবে। তারা আর সম্পর্ক রাখবে না, তার আভাস দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কী করে সেইসময় ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে, সেই নিয়েও জটিলতা তৈরি হল। কেননা এফএসডিএল-র কাছে যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়, তার সবটাই শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ক্লাব নামে। এখন সেই প্রশ্নে কী সিদ্ধান্ত নেবে ফেডারেশন সেটিও বিষয়।
এমনকি ক্লাবের তরফ থেকে আইএসএল খেলার জন্য ইনভেস্টরা যে অর্থ দিয়েছিল, সেটি যদি তারা ফেরতও চায়, তা হলে বিষয়টি কোথায় যাবে, কেউ জানে না। ইতিমধ্যেই ইনভেস্টররা আইনজীবির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। তারা কোনও সংঘাতে না গিয়ে কার্যোদ্ধার চায়, আর ক্লাব কর্তারা কোন পথ বেছে নেবেন, সেটিও তাদের ভাবতে হবে। একদিকে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচানোর প্রচেষ্টা, পাশাপাশি আইএসএলে খেলার স্বপ্ন।
এই বিতর্কের কারণেই যে লাল হলুদের কোচের নাম ও বিদেশীদের নাম ঠিক করা হয়নি, তাও জলের মতো পরিষ্কার। এখন যদি আইএসএলে খেলার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে যায়, সেইসময় চুক্তি হয়ে যাওয়া ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।