শেষ আপডেট: 30th June 2021 21:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এও কি সম্ভব? ১২ বছর বয়সেই দাবার তিনটি আইএম নর্ম (আন্তর্জাতিক মাস্টার) পূর্ণ করে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে গেল ভারতের অভিমন্যু মিশ্র।
এই বিস্ময় কিশোরের পরিবার থাকে আমেরিকার নিউ জার্সিতে। তারা প্রবাসী ভারতীয়, হাঙ্গেরিতে একটি দাবা রেটিং টুর্নামেন্টে তিনটি আইএম নর্ম পূর্ণ করেছে বুধবারই। ২৫০০ এলো রেটিংও সম্পূর্ণ করেছে সে। দাবার এই বিস্ময় প্রতিভা শেষ রাউন্ডে হারায় স্বদেশের লুকা মেন্ডোজাকে। অভিমন্যু খেলেছে কালো ঘুঁটি নিয়ে।
দাবায় বিশ্বরেকর্ড গড়ে এই কিশোর ভেঙেছেন রাশিয়ার সের্গেই কার্জাকিনের রেকর্ড। কার্জাকিন ১২ বছর সাত মাস বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন। এতদিন পর্যন্ত বিশ্বে তিনিই ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ জিএম। সেই নজির ভেঙে দিল অভিমন্যু। সে মাত্র ১২ বছর চার মাস ২৫ দিন বয়সে এই মহানজির গড়ে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
অভিমন্যু তার বাবার সঙ্গে দীর্ঘদিন হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে পড়ে থেকে একের পর এক টুর্নামেন্ট খেলেছে। শুধু খেললেই হবে না, তার জন্য অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ নিয়েছে, পড়াশুনোও করেছে। সোচিতে ফিডে ওয়ার্ল্ড কাপ দাবায় অংশ নিয়েও ভাল ফল করেছিল।
হাঙ্গেরির সের্গেই কার্জাকিন, যাঁর রেকর্ড ভাঙল অভিমন্যু।
বাড়িতে তো বটেই, দাবা মহলে তাকে ‘অভি’ বলে ডাকে সবাই। যার রেকর্ড ভাঙল এই একরত্তি ছেলেটি, সেই কার্জাকিনের বয়স বর্তমানে ১৯ বছর। তিনি এদিন চেজ ডট কম ওয়েবসাইটকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছে আমার এতদিনের নজির কেউ ভেঙে দিল। সাতবছর এই রেকর্ড অক্ষত ছিল। তবে এও ঠিক রেকর্ড গড়াই হয় ভাঙার জন্য। আমি অভিকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। আগামী দিনে আরও ভাল করুক, আরও রেকর্ড গড়ুক।’’
হাঙ্গেরিতে গ্যারি কাসপারভের (বাঁদিক থেকে চতুর্থ) সঙ্গে অভি (বাঁদিক থেকে ষষ্ঠ)।
কার্জাকিন আরও বলেছেন, ‘‘গত কয়েকবছর ধরে শুনে আসছিলাম আরও এক ভারতীয় আমার রেকর্ড ভেঙে দেবে কম বয়সে জিএম হয়ে, সেটি অনেক পরে হল, এটাই আমার পক্ষে স্বস্তির। তবে অভি দারুণ প্রতিভা, ঠিকভাবে এগোলে আরও অনেক বিস্ময় অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।’’
অভিমন্যু নিজেও খুব নার্ভাস এই নজির গড়েছে বলে। সে শুধু তার বাবাকে দেখিয়ে দিয়েছে কথা বলার জন্য। গত দু’বছর আগে হাঙ্গেরিতেই দাবার কিংবদন্তি প্রাক্তন বিশ্ব সেরা গ্যারি কাসপারভের সঙ্গে দেখা হয়েছিল অভির। সেইসময়ই একটা টুর্নামেন্টে এই ভারতীয় কিশোরের খেলা দেখে কাসপারভ বলেছিলেন, এই ছেলে অনেকদূর যাবে। দু’বছরের মধ্যেই সেই ভবিষ্যৎবানী মিলিয়ে দিল এই কিশোর প্রতিভা।