যদিও এত বড় সিদ্ধান্ত স্রেফ নিজের মনে মনে এবং খুব দ্রুত নেননি বিরাট। গোড়ায় জানিয়েছিলেন দুজনকে। একজন রবি শাস্ত্রী। অন্যজন আইসিসির চেয়ারম্যান ও বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সেক্রেটারি জয় শাহ।
বিরাট কোহলি
শেষ আপডেট: 14 May 2025 08:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোমবারের সকালে যখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল, টেস্ট ক্রিকেটকে (Test Cricket) বিদায় জানাতে চলেছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli), তখন সেই খবর জানামাত্র ক্রিকেট দুনিয়া চমকিত হয়ে ওঠে। অনেকে বিস্মিত হন। ছড়ায় সংশয়ও। কেন অবসর নিলেন? কেন এখনই সরে যেতে হল?—এমন নানাবিধ প্রশ্নে দিনভর ছয়লাপ সোশ্যাল মিডিয়া।
যদিও এর বাইরে একটি বৃত্ত রয়েছে, সীমিত ও সংকুচিত, যেখানে বিরাটের অবসর ততটাও আকস্মিক ও অপ্রত্যাশিত নয়। প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী থেকে জয় শাহ—অনেকেই সেই তালিকায় রয়েছেন, যাঁদের কাছে অনেক দিন আগেই টেস্টকে বিদায় জানানোর বিষয়টি (Virat Kohli Retirement) তুলে ধরেছিলেন কোহলি। চলেছিল আলোচনা, বিচার, এমনকি মানভঞ্জনের পালাও। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। শেষমেশ মিডিয়ায় প্রচারিত ‘গুঞ্জন’কে সত্য প্রমাণ করে লাল বলের ক্রিকেটকে আলবিদা জানান কোহলি।
ঠিক কী হয়েছিল পর্দার আড়ালে? এই রহস্য বিশ্বাসযোগ্যভাবে কবে জানা যাবে কেউ জানে না। আদৌ জানা যাবে কি না, স্পষ্ট নয়। কিন্তু আপাতত একটি সর্বভারতীয় ক্রিকেট ওয়েবসাইট সূত্রে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে টিম ইন্ডিয়ার টেস্টের ময়দানে ভরাডুবি এবং নাগাড়ে ব্যক্তিগত বিপর্যয়ের জেরে নিজের ভূমিকা বদলে ফেলতে চেয়েছিলেন বিরাট। ব্যাটিং লাইন আপ শুধু নয়, গোটা দলের ‘অ্যাঙ্করে’র ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ইচ্ছে ছিল বিরাটের। সেই কথা নির্বাচকদের জানিয়েওছিলেন। কিন্তু নির্বাচকদের তরফে সেই প্রস্তাব, অর্থাৎ, টিম ইন্ডিয়ার টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার বাসনা পত্রপাঠ খারিজ করে বোর্ড। জানানো হয়, রোহিত-উত্তর জমানায় তরুণতর কোনও ক্রিকেটারের হাতে দায়িত্ব ন্যস্ত হবে। বিরাট কোনওভাবেই ভবিষ্যতে টিম ইন্ডিয়ার নেতৃত্ব পাবেন না।
অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব নাকচ হওয়ার ধাক্কাই নাকি কোহলির মধ্যে জমতে থাকা অবসাদকে বের করে আনে। এমনিতে গম্ভীর কোচের হট সিটে বসার পর থেকেই অস্থিরতা তুঙ্গে। দল বাছাই থেকে খেলোয়াড়দের বাদ পড়া—সবেতে স্পষ্টতার অভাব। দলে প্রত্যাশিত স্বাধীনতা, সুস্থ পরিবেশ এবং বন্ধুত্বের পরিসর নষ্ট। আগের জমানা থেকে, সেটা শাস্ত্রী হতে পারে, দ্রাবিড় হতে পারে, বদলে গিয়েছে ড্রেসিং রুমের পরিস্থিতি।
এমনিতেও ব্যাট হাতে খুব একটা ছন্দে ছিলেন না বিরাট। গত তিন বছরে টেস্টে রান তুলেছেন বত্রিশের গড়ে। তাই ঘরে-বাইরে চাপ ছিলই। তার উপর নিজের ভূমিকা বদল এবং নয়া চ্যালেঞ্জ শুরুর যে বাসনা, সেটাও অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। ফলে লাল বলের ক্রিকেট থেকে সরে আসা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও উপায় বিরাটের হাতে ছিল না বলেই মনে করছে ক্রিকেট মহল।
যদিও এত বড় সিদ্ধান্ত স্রেফ নিজের মনে মনে এবং খুব দ্রুত নেননি বিরাট। গোড়ায় জানিয়েছিলেন দুজনকে। একজন রবি শাস্ত্রী। অন্যজন আইসিসির চেয়ারম্যান ও বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন সেক্রেটারি জয় শাহ। তাঁদের সঙ্গে ঠিক কী কথাবার্তা হয়, সেটা এখনও সাফ নয়।
ওই ওয়েবসাইটের রিপোর্টে বলা হয়, মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকরের সঙ্গেও নাকি অন্তত দু’বার কথা হয় বিরাটের। কিন্তু সেই ফোনালাপে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি বিদায়ী ক্রিকেটার। লাল বলের ক্রিকেটকে সেই গুডবাই জানিয়েই আপাতত সস্ত্রীক বৃন্দাবনে যাত্রা করেছেন বিরাট কোহলি।