শেষ আপডেট: 16 April 2024 17:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আন্তোনিও লোপেজ হাবাস যেন ম্যাজিশিয়ান। তিনি মোহনবাগানের কোচ হয়ে এসে পুরো দলকে বদলে দিয়েছেন। হাবাস সমর্থকদের কাছেও বড় ভরসা। তিনি ডাগআউটে থাকলে দল অনেকবেশি নিরাপদে থাকে, আর না থাকলে কী হতে পারে, তার দৃষ্টান্ত দেখা গিয়েছে চেন্নাই ম্যাচে।
সোমবার যুবভারতীতে যখন হাবাস দলের সঙ্গে মাঠে নামছিলেন, সেইসময় সারা মাঠ জুড়ে হর্ষধ্বনি ও করতালি। তখনই মনে হয়েছে, মোহনবাগান যেন জিতে গিয়েছে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই। তারপরেও ৯০ মিনিট বাকি ছিল। কিন্তু সমর্থকদের আবেগ কাজ করছিল ৬৬ বছরের স্প্যানিশ কোচকে নিয়ে।
জুয়ান ফেরান্দো যখন বাগানের দায়িত্ব থেকে সরলেন, সেইসময় দল টানা তিনটি ম্যাচে হেরেছে। মোহনবাগান কর্তারা বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে হাবাসকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। প্রথমে তিনি দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি ভিসা সমস্যার জন্য। পরে এসেই দলের প্রতিটি ফুটবলারকে আলাদা সময় দিয়ে তাঁর থেকে মত নিয়েছেন। তিনি দলের রির্জাভ বেঞ্চ তৈরিতে মন দিয়েছেন। অনিরুদ্ধ থাপা, অভিষেক সূর্যবংশী, দীপেন্দু বিশ্বাসদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। জনি কাউকোকে নিয়ে এসে বাতিল করেছেন বহুদিনের যোদ্ধা হুগো বুমোসকে।
কাউকো দলে আসতেই মাঝমাঠ হয়ে গিয়েছে তেল খাওয়ানো মেশিনের মতো। পুরো দলকে পরিচালনা করেছেন কাউকো। যিনি হাবাসের কোচিংয়ের মাস্টারস্ট্রোক। সবথেকে বড় কথা, ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে রণকৌশল বদল করতে সিদ্ধহস্ত এই অভিজ্ঞ কোচ। যিনি একটা সময় বলিভিয়া দলকে কোচিং করিয়ে প্রভূত সাফল্য পেয়েছিলেন।
দলের ফুটবলাররা সবাই প্রায় মানছেন হাবাসের কোচিংয়ে ম্যাজিক রয়েছে। দলের গোলমেশিন দিমিত্রি পেত্রাতোস বলেছেন, এই সাফল্যে প্রধান ভূমিকা কোচেরই। আরও একজনের কথা বলব, তিনি জনি কাউকো। আমাদের দল যখন প্রবল চাপে, সেইসময় কোচ ও কাউকো এসে পুরো দলকে বদলে দিয়েছেন।
অনিরুদ্ধ থাপাও জানান কোচ হাবাস কেন বাকিদের থেকে আলাদা। তরুণ তারকা বলেছেন, ‘‘আমাদের কোচের অনেক দাবি, তিনি একটুতে সন্তুষ্ট হতে পারেন না। আমাদের থেকে সেরাটা বের করার জন্য সমানে পড়ে থাকেন। এমন কোচ থাকলে সাফল্য আসতে বাধ্য।’’
ক্লাবের সচিব দেবাশিস দত্ত বলেছেন, এই নিদারুণ সাফল্যের মূলত দুটি কারণ। এক, কোচ হাবাস। তিনি এসেই দলকে দক্ষ সেনাপতির মতো পরিচালনা করেছেন। ফেরান্দো সরে যেতেই আমরা বিন্দুমাত্র দেরি না করে তাঁকে কোচ করে নিয়ে এসেছিলাম। তিনি সেই ভরসার যোগ্য মর্যাদা দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, দলটি লড়েছে টিমগেমে ভরসা করে। শুধু মাঠে নেমে ফুটবলাররা আসল কাজ করেনি, পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্তরেও যে ঐক্য দেখানো গিয়েছে, এটিও সাফল্যের প্রধান রহস্য।