শ্রেয়স আইয়ার
শেষ আপডেট: 26th March 2025 13:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়ার সঙ্গে কি ক্রিকেটারদের ফর্মে ফেরার কোনও সম্পর্ক আছে?
রবিবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে ঈশান কিষানের বিস্ফোরক শতরানকে অনেকে নিছক ‘ঝলক’ ভাবতেই পারেন। তাহলে গতাকাল শ্রেয়সের ইনিংসকে কী বলবেন তাঁরা? সেঞ্চুরি পেলেন না বটে। কিন্তু মাত্র ৪২ বলে করা ৯৭ রানের জন্য কোনও বিশেষণই যেন যথেষ্ট নয়। ৯ খানা ছক্কা ও ৫টি চারে সাজানো ইনিংস। যার সুবাদে রানের পাহাড় দাঁড় করায় পাঞ্জাব কিংস। নির্ধারিত ২০ ওভারে ওঠে ২৪৩ রান। জবাবে ২৩২ রানে খতম হয় গুজরাতের ব্যাটিং।
এই টানটান লড়াই ছাপিয়ে যদিও সামনে চলে এসেছে শ্রেয়সের ফর্ম। ঈশানের মতো তিনিও বিসিসিআইয়ের সেন্ট্রাল কন্ট্র্যাক্ট লিস্টে ব্রাত্য। অগ্নিপরীক্ষা দিতে নামতে হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে। তারপর আচমকা সাদা বলের ক্রিকেটে অভূতপূর্ব উত্থান। গত বারো মাস প্রায় নিঃশব্দে, সকলের চোখের আড়ালে অস্ত্রে শান দিয়ে গিয়েছেন শ্রেয়স। যার সুফল পেয়েছে ভারতীয় দল। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের অন্যতম কাণ্ডারী তিনি, টিমের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আর এবার ‘সকাল দেখে বোঝা যায় দিন কেমন যাবে’—প্রবাদটি যদি সত্যি হয়, তাহলে পাঞ্জাবের ‘কিং’ হতে চলেছেন চলতি মরশুমে যোগ দেওয়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
শ্রেয়সের এই নিভৃত সাধনায় মগ্ন থেকে ফিরে আসার লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের আরেক ‘কামব্যাক-ম্যান’ সৌরভ গাঙ্গুলি। টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন অধিনায়কের সাফ দাবি: গত এক বছরে শ্রেয়স আইয়ারের মতো উন্নতি ভারতের আর কোনও খেলোয়াড় করেননি। মন্তব্যের সমর্থনে তুলে এনেছেন তাঁর শর্ট বল খেলায় দক্ষতার প্রসঙ্গও। সৌরভ বলেন, ‘শ্রেয়স ক্রিকেটের সমস্ত ফরম্যাটে সমান স্বচ্ছন্দ। শর্ট বলে আর অসুবিধায় পড়তে দেখা যায় না তাঁকে।‘
কিন্তু পর্দার আড়ালে প্রস্তুতির ছবিটা ঠিক কেমন ছিল? তথ্যই তার প্রমাণ। মুম্বইয়ের হয়ে গত মরশুমে ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেন। প্রথমে রঞ্জি। লাল বলের ক্রিকেট। ভরপুর চ্যালেঞ্জ। ৫ ম্যাচে করেন ৪৮০ রান। গড় ৬৮.৫৭। ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় মুম্বইয়ের জার্সি গায়েই নামেন মুস্তাক আলি ট্রফিতে। এবার চ্যালেঞ্জ ওয়ান ডে। তোলেন ৩৪৫ রান। বিজয় হাজারে ট্রফিতেও একই ছবি। পারফরম্যান্সের গ্রাফ চড়তেই থাকে। শ্রেয়স এই টুর্নামেন্টে সাকুল্যে ৩২৫ রান করেন।
আর সাদা বল এবং লাল বলের ক্রিকেটে এহেন ধারাবাহিকতা দেখানোর পুরস্কার হিসেবে মেলে জাতীয় দলে সুযোগ। কামব্যাক করেন ইংল্যান্ড সিরিজে। প্রথম ম্যাচে চোট পাওয়া বিরাট কোহলির জায়গায় দলে সুযোগ পান। ৩৬ বলে করেন ৫৯ রান। লড়াই জেতে ভারত। অন্যতম কাণ্ডারী হয়ে ওঠেন শ্রেয়স। ওই একটি পারফরম্যান্সই যথেষ্ট ছিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে জায়গা দিতে দু’বার ভাবেননি নির্বাচকরা।
আইপিএলে সেই ধারাবাহিকতার ছায়াই কি প্রলম্বিত হতে চলেছে? সকাল দেখে দিনের অনুমান সঠিক হলে পাঞ্জাব সমর্থকরা আশায় বুক বাঁধতেই পারেন।