শেষ আপডেট: 11th March 2025 15:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শ্রেয়স আইয়ারের ক্রিকেট কেরিয়ারে যথেষ্ট টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। একদিকে তিনি যেমন বিসিসিআই-এর কেন্দ্রীয় বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলেন। অন্যদিকে, তাঁর নেতৃত্বেই কলকাতা নাইট রাইডার্স ১০ বছর পর আইপিএল খেতাব জয় করেছিল। আর এবার টিম ইন্ডিয়ার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়েও তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। টিম ইন্ডিয়ার ৪ নম্বরে শ্রেয়স যে ভরসা দিয়েছেন, তা প্রশংসা করেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। সেকারণেই তাঁকে 'সাইলেন্ট হিরো' খেতাব দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতার পর কলকাতা নাইট রাইডার্স নিয়ে একটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন শ্রেয়স। জানিয়েছেন, কলকাতা নাইট রাইডার্সে নাকি তিনি যোগ্য সম্মান পাননি।
এই নিয়ে তৃতীয়বার কেকেআর ব্রিগেড আইপিএল খেতাব জয় করেছে। কিন্তু, ট্রফি জয়ের পরই শ্রেয়সকে রিলিজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে মেগা অকশনে পঞ্জাব কিংস ২৬.৭৫ কোটি টাকার বিনিময়ে এই ডান-হাতি ব্যাটারকে দলে টেনে নেয়। আসন্ন মরশুমে তিনিই পঞ্জাবকে নেতৃত্ব দেবেন।
২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শ্রেয়স আইয়ার যতগুলো সুযোগ পেয়েছেন, প্রতিবারই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। ৩০ বছর বয়সি এই ভারতীয় ব্যাটার ৫ ম্যাচে ২৪৩ রান করেছেন। গ্রুপ পর্যায়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি সর্বাধিক ৭৯ রান করেছিলেন। এমনকী, ফাইনাল ম্য়াচে কিউয়িদের বিরুদ্ধেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন। শুভমান গিল, বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর শ্রেয়স ভারতীয় ক্রিকেট দলের হাল ধরেছিলেন।
শ্রেয়স জানালেন, গত কয়েকটা মাস তাঁর বেশ ভালই কাটছে। তাঁর কঠোর পরিশ্রম অবশেষে প্রতিদান দিচ্ছে। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন, এতদিন ধরে কোথায় তিনি ভুলটা করছিলেন, সেটাও খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। আর সেটা মেরামত করতেই ফলাফল হাতেনাতে পেয়েছেন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি ইন্টারভিউয়ে শ্রেয়স বলেছেন, 'আমি খুব খুশি। সত্যি কথা বলতে কী, এটা আমার কাছে একটা যাত্রা ছিল। জীবনের এই পর্যায়ে আমি অনেককিছু শিখেছি। একদিকে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার পর বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিলাম। এরপর কোথায় ভুল হয়েছে, সেটা পর্যালোচনা করার চেষ্টা করি। কী করতে হবে, সেটা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু করি। আরও বেশি করে নিজের ফিটনেসের উপর জোর দিই। আমি সবসময় নিজেকে প্রশ্ন করলাম। একটা রোজনামচা তৈরি করেছিলাম। নিজেক ফিটনেসের উপর আরও বেশি করে ফোকাস করি। তারপর বাকিটা নিজের ছন্দতেই হয়ে গিয়েছে।'
সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছেন, 'ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি যখন নিয়মিতভাবে খেলতে শুরু করি, তখনই বুঝতে পারি যে ফিটনেসটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত আমি নিজেকে নিয়ে খুবই খুশি। প্রত্যেকটা সাফল্য যেভাবে একের পর এক আসছে, যেভাবে আমি গোটা পরিস্থিতি সামলেছি, তা নিয়ে আমি অত্যন্ত খুশি। সবথেকে বড় কথা, নিজের আত্মবিশ্বাসটা বজায় রেখেছিলাম।'
কিন্তু, কেরিয়ারের এই কঠিন পরিস্থিতিতে কখনও হতাশ হয়ে পড়েছিলেন শ্রেয়স? জবাবে এই ভারতীয় ব্যাটার বললেন, 'হতাশ তো ছিলাম না। কারণ আইপিএল খেলছিলাম। আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল আইপিএল জয় করা। ঈশ্বরের কৃপায় সেটা জিততে পেরেছি। তবে আমার মনে হয়, এই দলে আমি যথাযোগ্য সম্মান পাইনি। আইপিএল জেতার পর যে সম্মান দরকার ছিল, সেটা আমি পাইনি। তবে আপনি যখন নিজের উপর বিশ্বাস রাখবেন এবং সৎ পথে থাকবেন, তারপরও যদি কেউ আপনার পরিশ্রম খেয়াল না করে, সেটা অবশ্যই খারাপ লাগে।'
'আমার পরিশ্রমটা কারোর নজরে আসেনি'
একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই জয়ের পিছনে শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বের একটা বড়সড় ভূমিকা ছিল। শ্রেয়সের কথায়, দল জিতলেও তাঁর পরিশ্রমটা কারোর নজরে আসেনি।
তবে এই ব্যাপার নিয়ে কারোর কাছে অভিযোগ করতে চান না তিনি। আপাতত সাফল্যটাই তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে চান।