গতকাল পহেলগাম নাশকতার (Pahalgam Terrorist Attack) দায় ঠেলেছিলেন ভারতের সেনা জওয়ানদের (Indian Army) ঘাড়ে। তাদের ব্যর্থতাকেই জঙ্গিহানার কারণ হিসেবে দেগে দেন শহিদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)।
শহিদ আফ্রিদি
শেষ আপডেট: 28 April 2025 18:32
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গতকাল পহেলগাম নাশকতার দায় ঠেলেছিলেন ভারতের সেনা জওয়ানদের ঘাড়ে। তাদের ব্যর্থতাকেই জঙ্গিহানার কারণ হিসেবে দেগে দেন শহিদ আফ্রিদি।
চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে ফের একবার একই ইস্যুতে বোমা ফাটালেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অলরাউন্ডার। এবার আরও জোরালোভাবে। জানালেন, ইসলাম সবাইকে শান্তির শিক্ষা দেয়। পাকিস্তান জঙ্গি হামলার মতো কাজকে সমর্থন করে না। ভারত নিজেরাই দেশের নাগরিকদের হত্যা করে। তারপর দায় ঠেলে পাকিস্তানের উপর।
কেন এহেন ধারণা? সবাই যখন পাকিস্তানকেই দুষছে, এমনকী খোদ পাকিস্তান সরকারের অন্দরমহল থেকে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন, তখন কীসের ভিত্তিতে নিজের দেশকে ক্লিনচিট দিয়ে ভারতের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন আফ্রিদি? সাম্প্রতিকতম সাক্ষাৎকার, যা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তিনি যুক্তির সুরে বলেছেন, ‘জঙ্গিরা পহেলগামে এক ঘণ্টা ধরে মানুষদের হত্যা করে গেল আর মোতায়েন থাকা আট লক্ষ জওয়ানের মধ্যে কেউ এগিয়ে এল না। তারপর সবকিছু যখন শেষ, ওরা পাকিস্তানকে দোষী সাব্যস্ত করা শুরু করল।‘
পহেলগাম কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এই চেনা ছকেই এতদিন ধরে কাজ করে এসেছে ভারত। ঠারেঠোরে এও বুঝিয়ে দিয়েছেন আফ্রিদি। একধাপ এগিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘ভারত নিজেই সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়, নিজেদের নাগরিকদের খুন করে এবং তারপর পাকিস্তানের উপর দায় চাপায়।‘
ভারতের গায়ে কলঙ্ক লেপে দিলেও নিজের দেশের গায়ে এতটুকু আঁচ পড়তে দিতে রাজি নন পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেটার আফ্রিদি। তিনি আরও বলেছেন, ‘কোনও দেশ বা ধর্মই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। আমরা সব সময় শান্তির পক্ষে। ইসলাম আমাদের শান্তির শিক্ষা দিয়েছে। আর পাকিস্তানও এমন কাজ কখনও সমর্থন করে না।‘
তবে এতকিছুর পরেও ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট হতে দিতে রাজি নন তিনি। যদিও এতে পাকিস্তান হাত বাড়িয়ে দিলেও ভারত বরাবর হাত গুটিয়ে রেখেছে বলে মনে করেন আফ্রিদি। বলেন, ‘আমরা ভারতে খেলতে যাওয়ার আগে অনেক হুমকি পেয়েছিলাম। ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপে, যখন আমি অধিনায়ক ছিলাম, আমার কোনও ধারণাই ছিল না শেষমেশ যেতে পারব কি পারব না। ক্রীড়া কূটনীতি সবসময় ভাল। ভারত নিজেদের কাবাডি দলকে আমাদের দেশে পাঠাতে পারল। কিন্তু ক্রিকেট টিমকে পাঠাল না। যদি তুমি সবকিছু বন্ধ করতে চাও, তাহলে করে দাও। নয়তো খেলা চালু রাখো।‘
এর আগে আফ্রিদি জানান, পাকিস্তানের (Pakistan) ঘাড়ে দোষ ঠেলে লাভ নেই। পহেলগাম হানার (Pahalgam Terrorist Attack) আসল দায় নিতে হবে ভারতকে (India)। বিশেষ করে কাশ্মীর সীমান্তে মোতায়েন ভারতীয় সেনাকে (Indian Army)। দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। অতএব ভারতের সেনা জওয়ানেরা স্বীকার করে নিন তাঁরা ‘অপদার্থ’ এবং ‘অকর্মণ্য’।
সেনা ও সরকারকে তুলোধনা করার পাশাপাশি ভারতের সংবাদমাধ্যমকেও বিঁধেছেন শহিদ আফ্রিদি। ব্যঙ্গের সুরে বলেছেন, ‘এটা বেশ অবাক করা বিষয়, যে হামলার একঘণ্টা বাদেই মিডিয়া বলিউডে রূপান্তরিত হয়। ঈশ্বরের দোহাই, সবকিছুকে বলিউড বানিয়ে দিও না। আমি বিস্মিত। যদিও সত্যি বলতে, যেভাবে ওরা কথা বলছিল তাতে মজাও পেয়েছি। বলছিলাম, দ্যাখো, কীভাবে চিন্তা করছে। এরপরেও এরা নিজেদের শিক্ষিত নাগরিক বলে!’
মিডিয়ার পরই ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের নিশানা করেন আফ্রিদি। কারও নাম না করে তিনি বলেন, ‘এমন দুজন খেলোয়াড় ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন, ভাল ক্রিকেটার তাঁরা, ক্রিকেটের বার্তাবাহকও বটে, তা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে সবকিছুর জন্য দায়ী করেছেন।‘