ম্যান সিটি বনাম লিভারপুল
শেষ আপডেট: 24th February 2025 11:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: যে এতিহাদ স্টেডিয়ামকে (Etihad Stadium) একা হাতে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করেছিলেন পেপ গোয়ার্দিওলা, কোনওদিন রিয়াল মাদ্রিদ, কোনওদিন লিভারপুল এসে তা পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়ে যাচ্ছে। দিনকয়েক আগে কার্লো আন্সেলোত্তির বাহিনী এসে তাণ্ডব চালিয়েছিল। গতকাল ছিল আর্নে স্লটের দিন। প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে লিভারপুলের (Liverpool) হাতে ধরাশায়ী হল ম্যাঞ্চেস্টার সিটি (Manchester City)। ফাইনাল স্কোর: ২-০। অফসাইডের ফাঁদে না জড়ালে, ভাগ্য আরও কিছুটা সুপ্রসন্ন হলে আদত স্কোরলাইন বাজেভাবে বেইজ্জত করতে পারত সিটিকে।
চোট পেয়ে মাঠের বাইরে আর্লিং হালান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের বিরুদ্ধে ফিরতি লেগেও মাঠে নামেননি তিনি। তাই গতকাল বল গড়ানোর আগেই ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ব্যাকফুটে ছিল। কাইল ওয়াকার দল ছেড়ে আপাতত এসি মিলানে। জন স্টোনস আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন। মিডফিল্ডে নেই নির্ভরযোগ্য মিডিও রদ্রি। ফলে আক্রমণ, মাঝমাঠ, রক্ষণ—তিন জায়গাতেই রক্তাল্পতা প্রকট। আর সেটা ধরা পড়ে ম্যাচের শুরুতেই। হাইলাইনে খেলা সিটিকে চাপে ফেলতে একের পর এক আক্রমণ শানায় লিভারপুল। ডাইনে মো সালাহ, বাঁয়ে লুইজ দিয়াজের দাপুটে উইং প্লে রুখতে সিটি ডিফেন্সে ত্রাহি ত্রাহি রব ওঠে। ১৪ মিনিটের মাথায় দুরন্ত শুরুয়াতের ফলও পায় আর্নে স্লটের টিম। আর্জেন্তিনীয় আলেক্স ম্যাক আলেস্টারের কর্নারকে বুদ্ধিদীপ্তভাবে ডান পায়ে ফ্লিক করেন সাবোজলাই। ঠিক কাঁটাকম্পাসের হিসেবে সেটা গিয়ে পড়ে সালাহর পায়ে। ওয়ান টাচেই জোরালো শট এবং গোল। চলতি মরশুমে এই নিয়ে ২৫তম গোল করে ফেললেন সালাহ। পরের মরশুমে তিনি সম্ভবত লিভারপুল ছাড়বেন। তার আগে কেরিয়ারের দ্বিতীয় প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জেতার জন্য তিনি কতটা মরিয়া, তার প্রমাণ প্রতি ম্যাচে রেখে যাচ্ছেন ‘ইজিপশিয়ান কিং’!
সালাহর গোলে পিছিয়ে পড়ে তেড়েফুঁড়ে নামার বদলে আরও কুঁকড়ে যায় সিটি। একদা ঘরের মাঠে কম করেও ৭০ শতাংশ বল পজেশন ধরে রাখত যে টিম, তারাই গতকাল প্রথমার্ধে সারাক্ষণ বল তাড়া করে বেড়ায়। রীতিমতো ছেলেখেলা শুরু করেন কার্টিস জোনস, লুইস দিয়াজরা। যার নিট ফল ব্যবধান বাড়ানো। এবার গোলদাতা প্রথম গোলের মাস্টারমাইন্ড ডমিনিক সাবোজলাই।
২-০-তে এগিয়ে যাওয়ার পর মিরাকেল ছাড়া ম্যাচে ফেরত আসা সিটির পক্ষে অসম্ভব ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে তারই প্রতীক্ষায় ছিল গোটা এতিহাদ স্টেডিয়াম। কিন্তু স্ট্রাইকার মারমুশের অফসাইড গোল বাতিল, জেরেমি ডকুর দু-একটা হাফ চান্স ছাড়া সেভাবে হুল ফোটাতে পারেনি পেপ বাহিনী। উলটে কার্টস জোন্সের গোল ভার অফসাইড বলে না দিলে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত লিভারপুল।
এই জয়ের সুবাদে প্রিমিয়ার লিগ খেতাব জয়ের লক্ষ্যে আরও কয়েক কদম এগিয়ে গেল লিভারপুল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা টিম আর্সেনালের থেকে আপাতত ১১ পয়েন্টে এগিয়ে তারা। আর সিটি? চার নম্বরে থাকলেও লিভারপুলের থেকে ২০ পয়েন্ট পিছনে রীতিমতো ধুঁকতে শুরু করেছে টানা চারবারের ইংল্যান্ড-সেরা টিম।