শেষ আপডেট: 3rd February 2025 16:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমার কাছে গাড়ি, বাংলো, পাকাবাড়ি, ব্যাঙ্কব্যালেন্স সবকিছু রয়েছে। তোমার কাছে আছেটা কী? স্মাগলার, আন্ডারওয়ার্ল্ড নেতা বিজয়ের (অমিতাভ বচ্চন) বিত্ত নিয়ে অহংয়ের বেলুন চুপসে একটিমাত্র জবাব দিয়েছিলেন তাঁর ভাই, পেশায় পুলিশের ছাপোষা সাব-ইন্সপেক্টর রবি বর্মা (শশী কাপুর)—‘মেরে পাস মা হ্যায়’।
বলিউডি প্রবাদে পরিণত হওয়া এই সংলাপ ধার করেই টাটা স্টিল চেস মাস্টার্সজয়ী আর প্রজ্ঞানন্দকে শুভেচ্ছা জানালেন বিশ্বনাথন আনন্দ। এক্স হ্যান্ডেলে লিখলেন, ‘মেরে পাস পাঁচ হ্যায়’। ১৯৮৯, ১৯৯৮, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৬ সাল মিলয়ে মোট পাঁচ বার এই গ্র্যান্ড খেতাব জেতেন আনন্দ। বছর উনিশের প্রজ্ঞানন্দকে সেই কথাটিই মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
Mere pass panch hai .. IYKYK! pic.twitter.com/nhf97N9WIL
— Viswanathan Anand (@vishy64theking) February 3, 2025
১৪ খেলোয়াড়ের রাউন্ড-রবিন ফরম্যাট। ১৩ খানা রাউন্ড। শেষে টাইব্রেকার। তাতেও ফয়সালা হল না। একদম অন্তিম লগ্নে সাডেন ডেথ। যা জিতে শেষ হাসি হাসলেন আর প্রজ্ঞানন্দ। হারালেন চেন্নাইয়েরই দাবাড়ু, বিশ্ব দাবা প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ডি গুকেশকে।
২০০৬ সালে বিশ্বনাথন আনন্দ শেষ ভারতীয় হিসেবে এই খেতাব জেতেন। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়েছে। ভারতের কোনও দাবাড়ুর হাতে টাটা স্টিল চেস মাস্টার্সের খেতাব ওঠেনি। শেষমেশ এই বন্ধ্যাদশা ঘোচালেন প্রজ্ঞানন্দ।
গতকাল (রবিবার) গুকেশ ও প্রজ্ঞানন্দ দুজনেই যুগ্মভাবে শীর্ষে থেকে ফাইনাল রাউন্ডে মুখোমুখি হন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবেই গুকেশকে হারিয়ে দেন অর্জুন এরিগাইসি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ক্লাসিকাল দাবায় এটাই তাঁর প্রথম হার। প্রজ্ঞানন্দের কাছে ফায়দা নেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। কিন্তু ভিনসেন্ট কেইমারের কাছে পয়েন্ট খুইয়ে ব্যাকফুটে চলে যান তিনি। ক্লাসিকাল রাউন্ডের শেষে প্রজ্ঞানন্দ ও গুকেশ—দুজনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ৮.৫ পয়েন্টে। এর ফলে বিজয়ী নির্বাচন করতে লড়াই গড়ায় টাইব্রেকারে। র্যাপিডে হেরেও ব্লিৎজ গেমে কিস্তিমাত করেন প্রজ্ঞানন্দ। ফলে সাডেন ডেথ ছাড়া কোনও উপায় ছিল না।
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর চেন্নাইয়ের দাবাড়ুকে কুর্নিশ জানান বিশ্বনাথন আনন্দ। লেখেন, ‘প্রথম টাটা স্টিল চেস টুর্নামেন্ট জেতার জন্য প্রজ্ঞানন্দকে শুভেচ্ছা। শেষদিনে স্বাভাবিক, পরিচিত ছন্দে ছিলেন না। তবু পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়েও প্রজ্ঞানন্দ কামব্যাক করেন। হারানো জমি ফিরে পান। ফের ভুল করে বসেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছেও মারাত্মক ত্রুটি করে ফেলছিলেন প্রজ্ঞানন্দ। এত উত্থান-পতন সত্ত্বেও টিকে থাকার যে জেদ দেখিয়েছেন, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়।‘
গুকেশও যে গতকাল ছন্দে ছিলেন না, তাঁর মুভ যে ক্ষমতার প্রতি সুবিচার হয়নি—স্বীকার করেছেন আনন্দ। এই দ্বিতীয়বার টাটার টুর্নামেন্টের ফাইনালে টাইব্রেকারে হারলেন গুকেশ। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই পারফরম্যান্স প্রমাণ করে গুকেশ কতটা ক্ষুধার্ত। স্পষ্ট জানিয়েছেন আনন্দ।