শেষ আপডেট: 12th January 2025 13:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একদিকে তিনি কঠোরভাবে নিরামিষাশী। শাকপাতা, মরশুমি সবজি ছাড়া কিচ্ছুটি দাঁতে কাটেন না। অন্যদিকে তাঁর প্রিয়তম বন্ধু একটি ব্রাজিলীয় ডমুর গাছ! খেতাব জিতে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে না ভেসে সটান চলে যান ডুমুরতলায়, চড়ে বসেন গাছের মগডালে! সার্বিয়ার টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচের আজব-অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা কোর্টে ও কোর্টের বাইরে বরাবর নজর কেড়েছে। এর জন্য ডাকনামও জুটেছে তাঁর—‘জোকার’!
জোকোভিচের আশ্চর্য কারনামার নবতম সংযোজন ‘এনার্জেটিক ডিস্ক’। আকারে ডিনার প্লেটের মতো দেখতে। তৈরি করেছেন সার্বিয়ার এক ইঞ্জিনিয়ার। ‘জোকারে’র দাবি ৩৭ বছরে দাঁড়িয়ে তাঁর অফুরান প্রাণশক্তির উৎস এই চাকতি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে জার্নি শুরুর আগে এমন মন্তব্যে স্বভাবতই চর্চায় রয়েছেন জোকোভিচ।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে এই নিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেন তিনি। জানান, এই এনার্জেটিক ডিস্ক বহুবার তাঁর শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দূর করেছে। কীভাবে কাজ করে এই চাকতি? জকোভিচের বক্তব্য: যন্ত্রটি সুইচ অন করা মাত্র চারিদিকে একটি তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয়। আর এটাই তার যাবতীয় রহস্যের চাবিকাঠি।
জকোভিচ বলেন, ‘আপনি যখনই এটি শরীরের কোনও অংশে রাখবেন, যেমন আমার পেটের সমস্যা রয়েছে কিংবা আমি ম্যাচের আগে নার্ভাস বোধ করি, তখন সেই সেই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে আরাম লাগে। আমার স্নায়বিক অসুবিধা কিংবা হজমের গোলমাল সেরে যায়।’ জকোভিচের দাবি, তাঁর কাছে এমন একগাদা চাকতি রয়েছে। কোনও টুর্নামেন্টে যাওয়ার সময় বিমানে বসে মাঝেসাঝেই এই ডিস্ক তিনি মাথায় রেখে দেন। আর কুড়ি থেকে তিরিশ মিনিটেই কেল্লাফতে! সমস্ত দুশ্চিন্তা এক নিমেষে গায়েব।
দুর্দান্ত মানসিক শক্তির পরিচয় বিভিন্ন সময় দিয়েছেন জকোভিচ। আমাদের মনে পড়বে ২০১২ সালের অস্ট্রেলিয়া ওপেনের ফাইনাল। ৫ ঘণ্টা ৫৩ মিনিটের ম্যারাথন লড়াইয়ে সেবার নাদালকে হারিয়েছিলেন সার্বিয়ার তারকা। টেনিসের ইতিহাসে সেটাই দীর্ঘতম সময় ধরে চলা কোনো ম্যাচ।
খেতাব জিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার পর জকোভিচ জানান তাঁর জীবনের বহু অজানা রহস্য। সেই সময়ই মিডিয়ার সামনে এসেছিল তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু পেপ ইমাজের কথা। লোকে জেনেছিল, কীভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত বেলগ্রেডে কেটেছিল তাঁর ছেলেবেলা। পরিত্যক্ত সুইমিং পুলে জীবনের একটা বড় সময় ধরে চালিয়ে গেছেন প্র্যাকটিস। তবু আত্মবিশ্বাস হারাননি। পাশে থেকেছে পরিবার৷ আজও রাতের আলো মুছে যাওয়ার আগে কাকভোরে উঠে পড়েন জকোভিচ। তারপর চলে সপরিবারে সূর্যোদয় দেখার প্রতীক্ষা। মানসিক সুস্থিতি এভাবেই ধরে রেখেছেন তিনি।
পঁচিশতম গ্র্যান্ডস্ল্যাম জিতে টেনিসের রেকর্ডবুকে নতুন করে নিজের নাম খোদাই করবেন তিনি? সে উত্তর অবশ্য সময়ই দেবে। আপাতত অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরুর প্রাক্কালে চাকতি-রহস্য খোলসা করে খবরের শিরোনামে সার্বিয়ার ‘জোকার’।