শেষ আপডেট: 23rd January 2025 16:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মানুষের জীবন এরকমই। কার জীবন কখন কোথায় মোড় নেয়, ভাগ্যে কী লেখা আছে আগে থেকে কেই বা জানতে পারে! এই গল্পও তেমনই এক মিরাকেল। নইলে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জের এক যুবক সুদূর ব্রাজিলে গিয়ে নেইমার জুনিয়ারের বন্ধু হয়ে উঠতে পারে? নেইমারের সঙ্গে তাঁর পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা এমনই যে জুনিয়ারের মা নাদিন গঞ্জালভেস জন্মদিনে তাঁর বাড়িতে কেক বানিয়ে এনেছিলেন। এ ঘটনা স্বপ্নের মতো শোনালেও ষোলো আনা বাস্তব।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার গাজীর টেক গ্রামের এক সাধারণ ঘরে জন্ম রবিন মিঞাঁর। এখন বয়স ৩৪। ছোট থেকে ফুটবল প্রেম। ঘরোয়া মাঠে ফুটবল খেলতেন রবিন। যদিও পেশাদার ফুটবলার হয়ে ওঠার স্বপ্নপূরণ হয়নি। ১৭ বছর আগে ব্রাজিলে পাড়ি দেন রবিন। সেখানে শুরুতে নানা ধরনের কাজ করলেও ফুটবলের প্রতি তাঁর ভালবাসা একসময়ে তাঁকে নিয়ে যায় কিংবদন্তি নেইমারের কাছে। তবে সেই যাত্রাপথ মোটেও সহজ ছিল না। প্রথমে নেইমারের ছোটবেলার বন্ধু জোয়াও সেলসোর সঙ্গে পরিচয় হয় রবিনের। তাঁর মাধ্যমে ২০২০ সালের শেষ দিকে নেইমারের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়।
নেইমারের সঙ্গে প্যারিসে প্রথম দেখা হওয়ার দিন রবিন কথা বলেন নিজের জীবনের গল্প আর বাংলাদেশের ফুটবল সংস্কৃতি নিয়ে। নেইমারের পরিবারের প্রতি তাঁর আন্তরিকতা এবং স্প্যানিশ ও পর্তুগিজ ভাষায় দক্ষতা তাঁকে এই পরিবারের আরও কাছাকাছি নিয়ে যায়। এই যোগাযোগের সূত্র ধরেই নেইমারের বাবা নেইমার সিনিয়রের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান রবিন।
গত চার বছরে অন্তত ৪০ বার নেইমারের পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন দেশে ঘুরতে গেছেন রবিন। এমনকি বর্ষশেষের উদ্যাপন করেছেন দুবাইয়ে নেইমারের পরিবারের সঙ্গে। সেখানে নেইমার নিজস্ব বিমানে আসেন, আর রবিন বাণিজ্যিক বিমানে।
রবিন নিজেকে ব্রাজিলে প্রতিষ্ঠিত একজন বাঙালি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। ব্রাজিলের পারানা রাজ্যে তাঁর পাঁচ হাজার বিঘার জমিতে সয়াবিন চাষ হয়। পাশাপাশি তিনি ব্রাজিলের সেকেন্ড ডিভিশন একটি ফুটবল ক্লাবের পরিচালক এবং ফুটবলারদের ট্রান্সফার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে সফরে থাকা রবিন বিকেএসপির ফুটবল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। তাঁদের নেইমারের অনুশীলন, জীবনযাপন নিয়ে নানা গল্প শুনিয়েছেন। পাশাপাশি বিকেএসপির ফুটবলারদের ব্রাজিলে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমকে রবিন বলেন, "নেইমার বাংলাদেশে আসতে চায়, তবে সময় মিলছে না। আমি নিশ্চিত, একদিন নেইমার বাংলাদেশে আসবেই।"