শেষ আপডেট: 1st January 2019 12:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো : কবে আসছে স্পনসর? নির্বাচনের আগে থেকেই এই একটা প্রশ্ন বারবার উঠে আসছিল মোহনবাগান সমর্থকদের মনে। এই স্পনসরের প্রতিশ্রুতিতেই ফের বাগান গদিতে প্রত্যাবর্তন টুটু বসু-সৃঞ্জয় বসু-দেবাশিস দত্তদের। পালাবদলের এতদিন পরেও প্রশ্নটা কিন্তু রয়েই গিয়েছে। আর এই নিয়েই মঙ্গলবার এক নতুন নাটক দেখলো ময়দান। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ময়দানে খবর ছড়ায়, নতুন বছরের শুরুতেই স্পনসর আসতে চলেছে বাগানে। বাগান কর্তা দেবাশিস দত্ত নাকি বলেছেন ১৫ জানুয়ারি ঘোষণা করা হবে এই নতুন স্পনসরের নাম। তিনি নাকি আরও বলেছেন, গঙ্গাপারের ক্লাবের প্রধান স্পনসর হতে চলেছে 'স্যামসাং'। এছাড়াও আইটি কোম্পানি টিসিএস নাকি হতে চলেছে কো-স্পনসর। আর এই খবর পাওয়ার পরেই খুশির হাওয়া বয়ে যায় বাগান সমর্থকদের মনে। অনেকেই বসু গোষ্ঠীকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, নির্বাচনে জয়ের পরে নিজেদের প্রতিশ্রুতি রেখেছেন তাঁরা। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম তো এই মর্মে খবরও করে। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু সমর্থক এই খবরের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা বলেন, ক্লাবের তরফে কিছু না জানানো পর্যন্ত বিশ্বাস নেই। শেষ পর্যন্ত এই সমর্থকদের শঙ্কাটাই সত্যি হয়ে দেখা দেয়। মোহনবাগান সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু এ দিন বিকেলবেলা নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক বিবৃতি দিয়ে জানান, "খুব বিরক্তির সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, কেউ একজন বাগান কর্তা দেবাশিস দত্তের নাম ও ছবি ব্যবহার করে একটি নকল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই স্পনসর সম্বন্ধে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছেন তিনি। আমরা মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আবেদন করছি, এই ভুল খবরে কান দেবেন না। আমরা এই বিষয় নিয়ে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। শিগগির এই ঘটনার পিছনে থাকা ব্যক্তি ধরা পড়বেন। মোহনবাগান সমর্থকদের কাছে আবেদন, আপনারা ক্লাবের অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট না দেওয়া পর্যন্ত কোনও কথাতে বিশ্বাস করবেন না। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।" এই ব্যাপারে সৃঞ্জয় বসুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন তোলেননি। তাঁর বক্তব্য এলে পরে তা আপডেট করে দেওয়া হবে। কিন্তু ফেসবুক পেজের এই বিবৃতিই প্রমাণ করে দিচ্ছে, বাগানের স্পনসর আসা নিয়ে সকাল থেকে যে খবর ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ছড়িয়ে পড়েছিল তা ভুয়ো। কিন্তু তাহলেও প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে? কবে আসছে স্পনসর? নিজেদের নির্বাচনী প্রচারে সৃঞ্জয় বসুরা বারবার দাবি করেছেন, তাঁদের হাতে স্পনসর রয়েছে। ক্ষমতায় এলেই তা প্রকাশ করা হবে। এই স্পনসরের কার্ড খেলেই মূলত বাগানের গদি পুনরায় দখল করেছেন তাঁরা। কিন্তু এতদিন পরেও স্পনসরের দেখা মেলেনি। সমর্থকদের মন জয় করতে আধ-ফিট সনি নর্ডিকে উড়িয়ে এনেছিলেন সৃঞ্জয় বসু-দেবাশিস দত্ত। সনি সাকুল্যে খেলেছেন আড়াইটে ম্যাচ। বসে বসে ২ কোটি টাকা নিচ্ছেন হাইতির এই ফুটবলার। সনির প্রতিও ধীরে ধীরে বিতৃষ্ণা জন্মাচ্ছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। সত্যি তো, পারফরম্যান্স করতে না পারলে শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে আর কতদিন চলে? বিক্ষোভ তৈরি হচ্ছে সমর্থকদের মনে। দিনকয়েক আগেই বাগান তাঁবুতে বেশ কিছু সমর্থক গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে এসেছেন। যুবভারতীর গ্যালারিতে দেখা যাচ্ছে, টুটু বসুদের বিরুদ্ধে ব্যানার। ক্লাবের পারফরম্যান্সও খারাপ। এই মুহূর্তে লিগ টেবিলে ৫ নম্বরে বাগান। ডার্বিতেও ৩৩ মাস পরে হারতে হয়েছে। সব মিলিয়ে শতবর্ষ পার করা এই ক্লাব তাঁবুর ভিতরের পরিবেশ কিন্তু মোটেই শান্ত নয়। কিন্তু কর্মকর্তাদের সেই নিয়ে হেলদোল আছে কি? স্পনসরের দেখা মিলবে কবে?