চাকরি ছাড়ুন বাস কনডাক্টর মা, স্বপ্ন দেখেন ২২ গজের অথর্ব
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাবা ছিলেন বৃহন্মুম্বই ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ( বেস্ট )-এর বাস কনডাক্টর। সেইসঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু ছেলের যখন মাত্র ১০ বছর বয়স তখনই মারা যান তিনি। তার আগেই অবশ্য ছেলের মনেও ক্রিকেট খেলার বীজ ঢুকিয়ে
শেষ আপডেট: 7 February 2020 13:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাবা ছিলেন বৃহন্মুম্বই ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট ( বেস্ট )-এর বাস কনডাক্টর। সেইসঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। কিন্তু ছেলের যখন মাত্র ১০ বছর বয়স তখনই মারা যান তিনি। তার আগেই অবশ্য ছেলের মনেও ক্রিকেট খেলার বীজ ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। সেই বীজটাই আজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ছেলে ভারতের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। কিন্তু মা এখনও কনডাক্টরের কাজ করেন। ছেলে চান, এবার অন্তত কাজ ছাড়ুন মা। বিশ্রাম নিন। কিন্তু এখনও আশা-আশঙ্কার দোলাচলে রয়েছেন অথর্ব আঙ্কোলেকরের মা বৈদেহী আঙ্কোলেকর।
কে এই অথর্ব আঙ্কোলেকর?
এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের যে দল অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলছে, সেই দলের সদস্য তিনি। প্রধানত স্পিন বোলার। তার সঙ্গে ব্যাটটাও ভালই করেন। সব মিলিয়ে এক কমপ্লিট প্যাকেজ। আর সেই ছবিই ধরা পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কোয়ার্টারফাইনালে। ব্যাট করতে নেমে একসময় চাপে ছিল ভারত। সেখান থেকে ৫৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন অথর্ব। তাঁর এই হাফসেঞ্চুরির দৌলতেই ২০০-র গণ্ডি পেরিয়েছিল ভারত। বল হাতেও নিজের কাজ করেছিলেন তিনি। রবিবার প্রিয়ম গর্গরা যে ফাইনাল খেলতে নামবেন তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব এই অথর্বর। তিনি সেদিন না দাঁড়ালে হয়তো বিদায় হয়ে যেত ভারতের।
এত ভাল খেলেও ম্যাচের সেরার সম্মান জোটেনি তাঁর। এভাবেই নিজের কাজটা করে যাচ্ছেন অথর্ব। কিন্তু তারপরেও একটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। ২০২০ সালের আইপিএল নিলামে ৯৭১ জন ক্রিকেটারের মধ্যে নাম ছিল তাঁর। কিন্তু লিস্ট এ ক্রিকেট খেলেননি বলে শেষ মুহূর্তে নাম বাদ যায় তাঁর। নইলে হয়তো কোনও একটা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে জায়গা মিলত।
তারপরেও অবশ্য আশা ছাড়তে নারাজ অথর্ব। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকেই এগিয়ে যেতে চান সামনের দিকে। আর চান এবার অন্তত নিজের কনডাক্টরের চাকরিটা ছাড়ুন মা। বাবার মৃত্যুর পর থেকে বাস কনডাক্টরি করে দু'ভাইকে মানুষ করেছেন বৈদেহী। ছোট ভাইও ক্রিকেট খেলে। সারাদিন কনডাক্টরি করে ফিরে এক কামরার ঘরে টিউশন পড়ান বৈদেহী। যতটুকু পয়সা আসে।
এত পরিশ্রমের পরেও নিজের চাকরি এখনই ছাড়তে চান না বৈদেহী। কারণ, তিনি জানেন, এখনও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেননি অথর্ব। ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। পরিশ্রমের সঙ্গে ভাগ্যও দরকার। আগেও অনেক প্রতিভা হারিয়ে গিয়েছে ক্রিকেটের ময়দান থেকে। যতদিন না ছেলে ভারতের বড়দের দলে ছেলে সুযোগ পাচ্ছে, ততদিন নিজের কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি।
অথর্বর অবশ্য একটাই স্বপ্ন। কঠিন পরিশ্রম করে ভারতের হয়ে খেলা। আর সেইসঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চান মা যেন চাকরি ছেড়ে বিশ্রাম নিন। অনেক পরিশ্রম করেছেন মা। এবার যে তাঁর বিশ্রাম নেওয়ার পালা। সেটাই এখন একমাত্র স্বপ্ন অথর্বর।