দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। ক্লাইভ লয়েড-ভিভ রিচার্ডসদের পর ক্যারিবিয়ান লেগাসি বয়ে নিয়ে গিয়েছেন একার কাঁধে। টেস্ট ক্রিকেটে একমাত্র ৪০০ রানের ইনিংস বেরিয়েছে তাঁর ব্যাট থেকেই। স্যার ব্রায়ান চার্লস লারা। আর বিশ্বের অন্যতম সেরা বাঁ’হাতি এই ক্রিকেটার কিনা নিজেই বুঁদ অন্য এক ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ‘দ্য জায়ান্ট’ রাসেলে। রাসেলের ব্যাটিংয়ে প্রাক্তন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক এতটাই মুগ্ধ যে সামনের বিশ্বকাপের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলও ঘোষণা করে দিলেন তিনি। লারার মতে, শুধু রাসেল থাকলেই হবে। বাকি দশজন ক্রিকেটার যে কেউ হতে পারে।
শুক্রবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচের পর টুইট করেন লারা। তিনি বলেন, “২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল.........রাসেল এবং যে কোনও ১০।” অর্থাৎ তিনি বলতে চাইলেন এই দলটাতে রাসেল থাকলেই হবে। বাকি ১০জন যে কেউ হতে পারে। সেটাতে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না লারা। এই টুইট করে লারা বুঝিয়েছেন, ক্যারিবিয়ান টিমে আসলে রাসেলের গুরুত্ব ঠিক কতটা। প্রত্যেক দলে একজন ক্রিকেটার থাকে, যাঁকে কেন্দ্র করে বাকি ক্রিকেটাররা খেলেন। একজনের উপরেই ভরসা করে পুরো দল। এই মুহূর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমে সেই জায়গাটা রাসেলের। তাই তাঁকে কেন্দ্র করেই দল গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন ব্রায়ান চার্লস লারা।
https://twitter.com/BrianLara/status/1114236448931078144
অবশ্য লারার যে এ’কথা বলছেন, তার ১০০ শতাংশ যৌক্তিকতা রয়েছে। পাওয়ার হিটার হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে রাসেল এমনিতেই পরিচিত নাম। কিন্তু চলতি আইপিএলে সবকিছুকে যেন ছাপিয়ে গিয়েছেন তিনি। ব্যাট হাতে রান করছেন, বল হাতে উইকেট নিচ্ছেন, দুরন্ত ফিল্ডিং করছেন। কার্যত একার কাঁধে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন নাইট রাইডার্সকে। সবথেকে বড় ব্যাপার হলো ধারাবাহিকতা। কয়েকটা পরিসঙ্খ্যানেই এটা স্পষ্ট। চলতি আইপিএলে এখনও পর্যন্ত রাসেলের রান চার ম্যাচ ২০৭। ডেভিড ওয়ার্নার ও জনি বেয়ারস্টর পর তিন নম্বরে তিনি। বাকি দু’জন কিন্তু ওপেন করেন। আর সেখানে রাসেল নামেন ৬ কি ৭ নম্বরে। প্রথম দশে থাকা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তাঁর ব্যাটিং গড় সবথেকে বেশি ( ১০৩.৫০ ), স্ট্রাইক রেট সবথেকে বেশি ( ২৬৮.৬৩ )। চলতি আইপিএলে সবথেকে বেশি ছক্কা ( ২২টি ) এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। প্রথম দশ বোলারের মধ্যেও নাইট রাইডার্সের একমাত্র প্রতিনিধি তিনি। চার ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন রাসেল।
এমনিতেই টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের দাপট সবথেকে বেশি থাকে। কিন্তু চলতি আইপিএলে সেটা দেখা যাচ্ছে না। ক্রিস গেইল, হেটমায়ের, পোলার্ডের মতো তারকারা ব্যাট হাতে ব্যর্থ। বোলারদের তালিকাতেও রাসেল ছাড়া শুধুমাত্র ডোয়েন ব্র্যাভো রয়েছেন প্রথম দশে। সুনীল নারিনের ভেল্কি দেখা যাচ্ছে না। স্যামুয়েল বদ্রি, এভিন লুইস, কার্লোস ব্রেথওয়েটের মতো তারকারা প্রথম একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন না। এইরকম পরিস্থিতিতে কাঁপাচ্ছেন রাসেল। নিজের মাসেলে বিপক্ষকে কুপোকাত করছেন। আর তাই বিশ্বকাপে লারার বাজিও রাসেল। আসলে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের নতুন ‘অতিমানবের’ উপর ভরসা রেখেই স্বপ্ন দেখছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মানুষ। লারাও তার ব্যতিক্রম নন।