জসপ্রীত বুমরাহ
শেষ আপডেট: 27th January 2025 11:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্যালেন্ডারে ১১ ফেব্রুয়ারিকে সম্ভবত লাল কালি দিয়ে মার্ক করে রেখেছেন বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারা। কারণ ওইদিনই আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিতে চলা সমস্ত দেশকে তাদের চূড়ান্ত টিমলিস্ট যাবতীয় কাটছাঁট এবং রদবদলের পর আইসিসির টেবিলে জমা করতে হবে। ভারতের তরফে পেশ করা তালিকায় কি নাম তুলতে পারবেন জসপ্রীত বুমরাহ? ১১ ফেব্রুয়ারির আগেই কি চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে নিউজিল্যান্ডের এক অর্থ্রোপেডিক সার্জেনের রিপোর্টে। আপাতত সেদিকেই নজর রেখেছে বিসিসিআই।
সূত্রের খবর, ওই চিকিৎসকের নাম ডা. রোয়ান স্খাউটেন। বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিম বুমরাহর আপডেট নিয়ে তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। বিশ্বের এক নম্বর পেসারকে এর আগে নিউজিল্যান্ড পাঠানোর চিন্তাভাবনাও সেরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। এত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১০০% সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা যে ক্ষীণ, তা কার্যত মেনে নিয়েছেন বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা।
তবু নিজেদের তরফে কোনও ঘাটতি রাখতে চাইছেন না তাঁরা। পাশাপাশি প্ল্যান-বি হিসেবে হরষিত রানার মতো পেসারকেও হাতে রাখা হচ্ছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের জন্য যে দল বাছা হয়েছে, সেখানে প্রথম দুটি ম্যাচে জায়গা পেয়েছেন হরষিত। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ম্যাচে ঘোর অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বুমরাহকে রাখা হয়েছে। সেই ম্যাচে যে তিনি নামতে পারবেন না, এটা কার্যত চূড়ান্ত। এখন দেখার--ওই খেলায় হরষিতই জায়গা পান নাকি অন্য কারও ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে। বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র বলছে, বুমরাহ যদি শেষ মুহূর্তে বাদ পড়ে যান, তাহলে মহম্মদ সিরাজ ফিরে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে কপাল পুড়বে হরষিতের।
এই পরিস্থিতিতে বুমরাহর কামব্যাককে একপ্রকার ‘মিরাকেল’ বলে দেগে দিয়েছে বিসিসিআই। আর সেই মিরাকেলকে বাস্তবায়িত করতে রোয়ান স্খাউটেনের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। এর আগে বছর তিনেক আগে বিশ্বকাপের পর চোট পান বুমরাহ। তখনও স্খাউটেনের অধীনে সেরে ওঠেন তিনি। ভারতের পেসার আপাতত ‘অফলোডিং প্রসেসে’র মধ্যে রয়েছেন। ক্রিকেটীয় পরিভাষায় এর সরল অর্থ হচ্ছে: কিছুদিনের জন্য শীতঘুমে চলে যাওয়া। মূলত টেস্ট ক্রিকেটে কোনও দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওভার বল করা পেসারকে ওই মরশুমে তিন সপ্তাহের জন্য ছুটি নিতে বলা হয়। ওই কুড়ি-একুশ দিন তিনি মাঠে নামা থেকে বিরত থাকেন, নেন পরিপূর্ণ, অখণ্ড বিশ্রাম।
বুমরাহও এতদিন অফলোডিং প্রসেসের মধ্যে ছিলেন। যার মেয়াদ গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিম এবার পেসারের শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন। তারপর সেই পরীক্ষার রিপোর্ট চলে যাবে রোয়ানের কাছে। রোয়ান যদি মনে করেন, তাহলে সামনাসামনি দেখতে বুমরাহকে নিউজিল্যান্ডেও পাঠানো হতে পারে। নয়তো বিসিসিআইয়ের মেডিক্যাল টিমের রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি চূড়ান্ত মতামত জানিয়ে দেবেন।
বুমরাহর ফিরে আসা নিয়ে যদিও ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করতে চলেছে বিসিসিআই। এর আগে ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে পেসারকে তাড়াহুড়ো করে ফিরিয়ে এনে ভুল চাল চেলেছিল দেশের ক্রিকেট বোর্ড। কারণ, তারপরই ফের চোট পেয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যান জসপ্রীত বুমরাহ। একই কারণে মহম্মদ শামিও ইংল্যান্ড বিরুদ্ধে চলতি টি-২০ সিরিজে প্রথম দুটি ম্যাচে দলে জায়গা পাননি। তাই ১১ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত লিস্টে বুমরাহর নাম কতটা দেখা যাবে, এ বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।