শেষ আপডেট: 20th August 2024 15:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আরজি কর কাণ্ডে সারা কলকাতা ময়দানে অন্য কারণে নায়কের সম্মান পাচ্ছেন হালতুর শিলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তিনি আদ্যপ্রান্ত মোহনবাগানী, সেদিন যুবভারতীর সামনে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।
আচমকা দেখা যায়, পুলিশ লাঠিচার্জ করছে, পাশেই ছিলেন শিলাদিত্যর স্ত্রী। তিনি কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শিলাদিত্যর স্ত্রী এক পুলিশকে অনুরোধ করেন, এভাবে আমাদের মিছিলে লাঠিচার্জ করতে পারেন না। আমাদের ভাষা তো সঙ্গত, দাবিটাও তাই।
সেইসময়ই বুদ্ধি খেলে যায় শিলাদিত্যর মাথায়। তিনি ভিড়ের মধ্যেই এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে কাঁধে তুলে নেন। সেই প্রসঙ্গে ওই সবুজ মেরুন সমর্থক বলেছেন, আমি এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম, একটাই কারণে, আমি জানতাম একটু উপর থেকে কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁর কন্ঠ সকলের কাছে পৌঁছে যায়। আমি কিছু ভেবে আর করিনি।
শিলাদিত্য এও জানান, ‘‘আমার কাঁধে যে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক উঠেছিলেন, ওঁর নাম রোহন গুহ। আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টও পাঠিয়েছেন, আমি অ্যাকসেপ্টও করেছি। রোহন চিরপ্রতিপক্ষ দলের সমর্থক হতে পারে, কিন্তু আমরা ভাল বন্ধু।’’
ভারী চেহারার শিলাদিত্যর ছবি অনেকের হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাস হিসেবে ঘুরছে। কেউ ডিপিও করেছেন। সেই কথা শুনে লজ্জায় পড়ে যান ছোটখাটো ব্যবসায়ী বছর ৩২-র শিলাদিত্য। যাঁর কসবা হালতুতে রাস্তার পাশেই একটা টেবিলে পোলাও-মাংসের ব্যবসা। মোহনবাগানের খেলা থাকলে যিনি মাঠে যাবেনই।
এদিন এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কারও বিপদে পাশে থাকা, এটা আমার মায়ের শিক্ষা। আর আমাদের এক বোনের এভাবে অত্যাচার করে খুন করার ঘটনায় কীভাবে প্রতিবাদ জানাব, সেটাই ভাবছিলাম। তাই যুবভারতীর সামনে বাইপাসে সেদিন উই ওয়ান্ট জাস্টিস.. স্লোগান নিয়ে আমি হাজির ছিলাম আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে।
শিলাদিত্যর মা-কে প্রতি শুভ বিজয়ায় প্রণাম সারতে যাবেন, এই বার্তা দিয়েছেন টালিগঞ্জের নামী অভিনেতা দেবদূত ঘোষ। তিনি এদিন ফেসবুকে মোহনবাগানী শিলাদিত্য সম্পর্কে লিখেছেন, ‘‘ভাই তোর ঠিকানা দিস। আমি আজীবন ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তুই আমার ভাইকে কাঁধে নিয়েছিস। বিজয়ার দিন, যতদিন বেঁচে আছি, তোর মাকে প্রণাম করে আসব। জয় মোহনবাগান।’’
ওই অভিনেতার বার্তা দেখে চোখের জল ফেলেছেন শিলাদিত্য। বলেছেন, ‘‘উনি আমাদের বাড়ি এলে মায়ের হাতের রান্না খাওয়াব। ভাল লাগছে উনি আমার মা-কে এই সম্মান জানিয়েছেন।’’