শেষ আপডেট:
দ্য ওয়াল ব্যুরো : রবিবার বিকেল থেকেই ছবিটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করেছিল। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মোহনবাগানের একজন বয়স্ক সমর্থক মোবাইলের পর্দায় প্রিয় দলের খেলা দেখছেন। নাম সমর কুমার চাকি। এই ছবিটা দেখার পর অনেকেই তাঁর দ্রুত শারীরিক সুস্থতা কামনা করেছিলেন। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি মারা গেলেন।
নিয়মিত ছেলে সৌমেনের সঙ্গে খেলা দেখতে আসতেন সমরবাবু। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মোহনবাগানের প্রতি তাঁর ভালবাসা আরও বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু, অনেকদিন ধরেই এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন তিনি। হারিয়ে ফেলেছিলেন গলার স্বরও। শেষপর্যন্ত গত ৩০ জানুয়ারি তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সোহম ঘোষের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু, শেষরক্ষা আর হল না। ৬৮ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন।
ইতিমধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে হাসপাতালে দৌড়ে আসে তাঁর পরিবার। নিজের বিদায়বেলা বোধহয় আগেই বুঝতে পেরেছিলেন এই আদ্যপান্ত মোহনবাগানি সমর্থক। পরিবার সূত্রের খবর, সেকারণেই বোধহয় ছেলে সৌমেন চাকির কাছে জানতে চান সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের পরবর্তী ম্যাচ কবে আছে? এরপর ছেলের মোবাইলে দেখতে থাকেন মেরিনার্সদের খেলা। সেই ছবিটাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
সমরবাবুর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই মোহনবাগান সমর্থকরা দুঃখে ভেঙে পড়েছেন। এমনকী মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের পক্ষ থেকেও শোকজ্ঞাপন করা হয়েছে। দলের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, সবুজ-মেরুন শুধু একটা রঙ নয়, এক আবেগের নাম!
সেইসঙ্গে ওই বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়েছে, 'সমরবাবুর জীবনের শেষ মুহূর্তেও মোহনবাগানের প্রতি ভালোবাসা অটুট ছিল। হাসপাতালের বেডে শুয়েও মোহনবাগানের ম্যাচ দেখা, তাঁর চোখে আনন্দের ঝিলিক—এটাই তো প্রকৃত সবুজ-মেরুন প্রেম!'
শেষকালে লেখা হয়েছে, 'এই আবেগই আমাদের শক্তি, আমাদের গর্ব। মোহনবাগানের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শ্রী দেবাশিস রায় মহাশয় তাঁর আত্মার শান্তি কামনার্থে মাল্যদান করে সম্মান জানিয়েছেন।'