
ইস্টবেঙ্গলের আইএসএল জট কেটেও কাটছে না, ‘ব্যাকডোর লাইসেন্সিং’ নিয়ে নতুন মাথাব্যথা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইস্টবেঙ্গলের প্রশাসনে তীব্র বিতর্ক মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। এর আগে কোয়েস-এর সঙ্গে যে সমস্যায় বিদ্ধ হয়েছে ক্লাব, সেই সঙ্কট হাজির এবার নয়া ইনভেস্টর লাভের পরেও। আইএসএলের দরপত্রের আবেদন করার সময়সীমা আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর। তার মধ্যে এএফসি-তে ‘এনটিটি’ (ক্লাবের স্বাধিকার স্বত্ত্ব) নিয়ে লাইসেন্সি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে ক্লাবকে।
এর আগে ‘কোয়েস ইস্টবেঙ্গল’ নামে এএফসি-তে লাইসেন্স ছিল ইস্টবেঙ্গলের। ঘনঘন এমন করে এনটিটি বদলানো যায় কিনা, সেই নিয়েও আলোচনা চলছে। কিন্তু এএফসি-তে কোনও ক্লাবের লাইসেন্স পেতে গেলে তাঁকে নতুন করে আবেদন করতে হয়। নয়া ইনভেস্টর এসে যাওয়া মানে তাদের প্রতিনিধিরা এবার থেকে ক্লাবের প্রতিনিধি হয়ে সভায় হাজির থাকবে।
সব থেকে বড় বিতর্ক বেঁধেছে আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল বিড জমা দেবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেড নামে, আর এখানেই সমস্যার ঘনঘটা। যারাই দলে বিনিয়োগ করবে, তারাই দাবি করবে তাদের নামে আবেদন করা হোক, সেক্ষেত্রে শ্রী সিমেন্টও একইভাবে দাবি পেশ করছে। কিন্তু ক্লাব কর্তৃপক্ষের যুক্তি, আইএসএলে ক্লাবের নামে আবেদন করা হলেও ক্লাবের অভ্যন্তরীন রেজিস্টারে ইনভেস্টরের নামই থাকবে। তাতেই বেঁকে বসেছেন শ্রী সিমেন্টের কর্তাব্যক্তিরা। তাঁদের বক্তব্য, এতে আইনি জটিলতা থাকবে, কারণ সেইসময় ফুটবলারদের পেমেন্ট নিয়ে চেকে ইস্টবেঙ্গল প্রাইভেট লিমিটেডের নামই রাখতে হবে, অথচ ইনভেস্টর দলের অন্য কেউ।
এমনকি আইএসএলে খেলার জন্য এফএসডিএল (ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড)-র কাছে আবেদনপত্রেও ইনভেস্টরের নাম থাকবে না। ইনভেস্টর হলে নাম রাখা বাধ্যতামূলক, একমাত্র স্পনসর হলে ক্লাবের নামে আবেদন করলেও চলবে। আইএসএলে এক নামে আবেদন এবং এএফসি-তে অন্য নামে লাইসেন্সিং নিয়ম মানলে পরস্পরবিরোধী ক্ষেত্র তৈরি হবে। আর ‘ব্যাকডোর’ দিয়ে ইনভেস্টরের নাম নথিভুক্ত করতে গেলে অন্য দলগুলি এই বেনিয়মকে হাতিয়ার করে আদালতে চলে যেতে পারে। সব বিষয়ই ভাবাচ্ছে কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তিদের।
এই সমস্যায় প্রথমেই ইনভেস্টরের সঙ্গে একটা সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে ক্লাব অভ্যন্তরে। শ্রী সিমেন্ট-র আধিকারিকরা এই বিষয়টির দ্রুত নিস্পত্তি চাইছেন। তাঁদের ধারণা, স্পনসর করা হলে একরকম মানসিকতা নিয়ে আমরা আসতাম, কিন্তু আমরা যেখানে ইনভেস্টর, সেখানে আমাদের বাড়তি গুরুত্ব দিতেই হবে। ইস্টবেঙ্গল কর্তারাও এই বিষয়টির সমাধানের জন্য মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রীর দূত হিসেবে যিনি হাজির থাকছেন সভায়, সেটিও পরিষ্কার বলা যায়।
ক্লাবের তরফ এই সভার সত্যতা স্বীকার করা হলেও ক্লাবের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, ব্যাকডোর লাইসেন্সিং নিয়ে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি নিয়ে আমি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য নই। আমি এ বিষয়ে ক্লাবের কর্মসমিতির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করব। আবার এও শোনা যাচ্ছে, নয়া ইনভেস্টর নতুন যে ক্লাবের বোর্ড অব ডাইরেক্টর গঠন করবে, তাতে এক নামী কর্তা ও এক প্রাক্তন ফুটবলারকে রাখতে চাইছে না, সেটি নিয়েও কর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।