আইপিএল ২০২৫
শেষ আপডেট: 5 May 2025 13:19
IPL 2025: প্লে অফের সাপ-লুডোর দৌড়ে আট দল, পারবে কি কেকেআর
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আইপিএল ২০২৫-এ (IPL 2025) এখন পর্যন্ত ৫৪টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। প্লে অফে (Play Off) ওঠার জন্য এখন লড়াই করছে আটটি দল। ইতমধ্যেই প্লে অফের দৌড় থেকে বিদায় নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস। যদিও এখনও কোনও দল আনুষ্ঠানিকভাবে প্লে অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
এবারের আইপিএলে প্লে অফের দৌড় নিয়ে যা টানটান উত্তেজনা চলছে, তা আগে কখনও দেখা যায়নি। গত ১৭ মরশুমে এমন কখনও ঘটেনি যে ১৬ পয়েন্ট পাওয়া কোনও দল যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।
তবে পরিস্থিতি যা বলছে, তাতে মনে হচ্ছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্লে অফ নিশ্চিত। বাকি তিনটি স্থানের জন্য সাতটি দলের মধ্যে লড়াই চলছে। এবার দেখ নেওয়া যাক প্লে অফের দৌড়ে থাকা দলগুলির অবস্থান।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bengaluru):
ম্যাচ খেলেছে: ১১, পয়েন্ট: ১৬, নেট রান রেট: ০.৪৮২
বাকি ম্যাচ: এলএসজি (অ্যাওয়ে), এসআরএইচ (হোম), কেকেআর (হোম)
সিএসকে-র বিরুদ্ধে জয়ের পরই আরসিবি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে পৌঁছেছে। পরিস্থিত বলছে পাঁচটি দলের ১৮ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর অর্থ হল, যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আরসিবির আরও দু’টি জয়ের প্রয়োজন। তবে, যদি অন্যান্য ফলাফল তাদের পক্ষে যায়, তাহলে তারা নেট রান রেটের উপর নির্ভর না করেই ১৬ পয়েন্ট নিয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে।
পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings):
ম্যাচ খেলেছে: ১১, পয়েন্ট: ১৫, নেট রান রেট: ০.৩৭৬
বাকি ম্যাচ: ডিসি (হোম), এমআই (হোম), আরআর (অ্যাওয়ে)
লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে পঞ্জাবের জয়ের পর তারা ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। এখনও তিনটি ম্যাচ বাকি রয়েছে পিবিকেএসের। আরও দু’টি জয় পঞ্জাবকে প্লে-অফে নিয়ে যাবে। যদি পঞ্জাব তাদের বাকি তিনটি ম্যাচ হেরে যায়, তাহলে তাদের অন্যান্য দলগুলির ফলাফলের উপর নির্ভর করতে হবে।
গুজরাট টাইটান্স (Gujrat Titans):
খেলা ম্যাচ: ১০, পয়েন্ট: ১৪, নেট রান রেট: ০.৮৬৭
বাকি ম্যাচ: এমআই (অ্যাওয়ে), ডিসি (অ্যাওয়ে), এলএসজি (হোম), সিএসকে (হোম)
গুজরাটের এখনও আরও চারটি ম্যাচ বাকি আছে। দলটির পয়েন্ট এখন ১৪। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পর তাদের নেট রান রেট দ্বিতীয় সেরা। এই মুহূর্তে প্রতিটি সমীকরণ জিটি-র পক্ষেই রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই দলটি শীর্ষ দুইয়েও স্থান নিশ্চিত করতে পারে। তাদের বাকি তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু’টি ঘরের মাঠে, যা তাদের পক্ষে যাবে বলেই অনুমান। ঘরের মাঠে, সিএসকে এবং লখনউয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে তাদের জয়-পরাজয়ের রেকর্ড ৪-১।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians):
খেলা ম্যাচ: ১১, পয়েন্ট: ১৪, নেট রান রেট: ১.১২৪
বাকি ম্যাচ: জিটি (হোম), পিবিকেএস (অ্যাওয়ে), ডিসি (হোম)
শুরুটা ভাল না হলেও টানা ছয়টি জয়ের মাধ্যমে মুম্বই এই মরশুমে অসাধারণ প্রত্যাবর্তন করেছে। মুম্বইয়ের শীর্ষ চারে থাকা প্রায় নিশ্চিত। যদি তাদের বর্তমান ফর্ম অব্যাহত থাকে তাহলে মুম্বই শীর্ষ দুইয়েও জায়গা করে নিতে পারে। বাকি দলগুলির থেকে মুম্বইয়ের নেট রান রেটও সেরা। মুম্বই যদি ১৪ পয়েন্টেও শেষ করে, তবুও দলটি শীর্ষ চারে পৌঁছতে পারে, তবে এর জন্য তাদের অন্যান্য ফলাফল এবং নেট রান রেটের উপর নির্ভর করতে হবে। পাশাপাশি মুম্বইয়ের ১৮ বা তার বেশি পয়েন্ট পাওয়ারও সুযোগও আছে। দলটির এখনও দু’টি হোম ম্যাচও আছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। চলতি মরশুমে তারা এখনও পর্যন্ত ঘরের মাঠে পাঁচটির মধ্যে চারটিতে জিতেছে, যা যেকোনও দলের মধ্যে সর্বোচ্চ।
দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals):
খেলা ম্যাচ: ১০, পয়েন্ট: ১২, নেট রান রেট: ০.৩৬২
বাকি ম্যাচ: এসআরএইচ (অ্যাওয়ে), পিবিকেএস (অ্যাওয়ে), জিটি (হোম), এমআই (অ্যাওয়ে)
প্রথম ছয় ম্যাচে পাঁচটি জয়ের সঙ্গে দিল্লি মরশুমের শুরুটা দুর্দান্ত করলেও পরবর্তীতে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেনি। পরবর্তী চার ম্যাচে তারা জেতে মাত্র একটিতে। এই কারণেই একসময় শীর্ষে থাকা দিল্লি পঞ্চম স্থানে নেমে গিয়েছে। পাঁচ দিনের বিরতির পর আজ (সোমবার) তারা ঘরের মাঠে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মুখোমুখি হবে। এই মরশুমে প্রতিপক্ষের মাঠে ডিসি চারটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জিতেছে, যেখানে ঘরের মাঠে দলটি ছয়টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছে। দিল্লিকে তাদের শেষ চারটি ম্যাচের তিনটি খেলতে হবে বাইরে। অন্যান্য দলের মতো, দিল্লির ১৮ পয়েন্ট থাকা সত্ত্বেও প্লে-অফে যাওয়া নিশ্চিত নয়, তবে ১৪ পয়েন্ট থাকা সত্ত্বেও, তারা সমীকরণের বাইরে পুরোপুরি থাকবে না। যদি অন্যান্য ফলাফল তাদের পক্ষে যায় তাহলে এই দলটিও প্লে অফে যেতে পারে। তবে, দলের লক্ষ্য থাকবে প্রথমে ১৬ পয়েন্টে পৌঁছনো।
কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders):
খেলা ম্যাচ: ১১, পয়েন্ট: ১১, নেট রান রেট: ০.২৪৯
বাকি ম্যাচ: সিএসকে (হোম), এসআরএইচ (অ্যাওয়ে), আরসিবি (অ্যাওয়ে)
রবিবার রাজস্থানের বিপক্ষে জিতে শেষ চারের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে কেকেআর। নাইটরা বর্তমানে ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। তবে তারা সর্বোচ্চ ১৭ পয়েন্ট পেতে পারে। বর্তমানে পাঁচটি দলের পক্ষে ১৮ বা তার বেশি পয়েন্ট অর্জন করা সম্ভব। এর মানে হল কেকেআরের প্লে অফে পৌঁছনো নিশ্চিত নয়। পঞ্জাবের মতো কেকেআর যদি তাদের বাকি তিনটি ম্যাচই জিততে পারে, তাহলেও ১৫ পয়েন্ট পেলেই প্লে-অফের দৌড়ে থাকবে কেকেআর। কিন্তু ১৩ পয়েন্ট পেলেই তাদের যাত্রা শেষ হবে।
লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Jiants):
খেলা ম্যাচ: ১১, পয়েন্ট: ১০, নেট রান রেট: -০.৪৬৯
বাকি ম্যাচ: আরসিবি (হোম), জিটি (অ্যাওয়ে), এসআরএইচ (হোম)
টানা তিনটি ম্যাচ হেরে লখনউ নেমে গিয়েছে সপ্তম স্থানে। এখন প্লে অফে উঠতে গেলে তাদের বাকি ম্যাচগুলিতে জিততে তো হবেই, পাশাপাশি তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির ফলাফলের দিকেও। বাকি তিনিট ম্যাচ জিতলে লখনউয়ের পয়েন্ট হবে ১৬। আরসিবি ইতিমধ্যেই ১৬ পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছে। প্লে-অফ দৌড়ে থাকা আটটি দলের মধ্যে লখনউয়ের নেট রান রেটও নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে। তাদের থেকে কম রানরেট রয়েছে কেবলমাত্র হায়দরাবাদের।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (Sunrisers Hyderabad):
খেলা ম্যাচ: ১০, পয়েন্ট: ৬, নেট রান রেট: -১.১৯২
বাকি ম্যাচ: ডিসি (হোম), কেকেআর (হোম), আরসিবি (অ্যাওয়ে), এলএসজি (অ্যাওয়ে)
বাকি চারটি ম্যাচ জিতলেও হায়দরাবাদের পয়েন্ট হবে ১৪। তাদের প্লে অফে উঠতে গেলে বাকি দলগুলিকে শুধু হারলেই হবে না, বড় ব্যবধানে হারতে হবে।