শেষ আপডেট: 7th March 2025 13:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ধামাকাদার এন্ট্রি নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। আগামী রবিবার (৯ মার্চ) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের তাদের খেলতে হবে। এই টুর্নামেন্টে ভারতীয় ক্রিকেট দল এখনও পর্যন্ত একটাও ম্যাচ হারেনি। এই রেকর্ড দেখে গোটা দেশ আপাতত উচ্ছ্বাসের জোয়ারে গা ভাসালেও, হাতেগোনা কয়েকজন সমর্থক কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। তাঁদের কথায়, অন্তত একটা ম্যাচ হেরে গেলে ভারতীয় ক্রিকেট দলের 'ফাঁড়া' কেটে যেত।
আর এই ফাঁড়ার কথা বলতে গিয়ে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ তাঁরা টেনে আনছেন। এই টুর্নামেন্টে রোহিত শর্মার দল একটাও ম্যাচ হারেনি। এমনকী,যে অস্ট্রেলিয়াকে গ্রুপ পর্বে ৬ উইকেটে হারিয়েছিল, সেই ক্য়াঙারু ব্রিগেডের কাছেই ফাইনাল ম্যাচে ৬ উইকেটে হেরে ট্রফি হাতছাড়া করতে হয়েছে। ১৯ নভেম্বরের সেই রাতের ক্ষত এখনও ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের হৃদয়ে দগদগে রয়েছে রয়েছে।
এবারও ছবিটা অনেকটা একইরকম। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টিম ইন্ডিয়া এখনও পর্যন্ত একটাও ম্যাচ হারেনি। এমনকী, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তারা নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারিয়েও দিয়েছে। ফাইনালে আবারও সেই কিউয়ি ব্রিগেডের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের আগে অনেকেই বলেছিলেন যে গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয় টিম ইন্ডিয়াকে অ্যাডভান্টেজে রাখবে। কিন্তু, একা ট্রাভিস হেড যাবতীয় অঙ্ক বদলে দেন। আগামী রবিবার নিউজিল্যান্ডের কোনও ক্রিকেটার সেই 'ট্রাভিস হেড' হয়ে উঠবেন না তো? আপাতত সেই আশঙ্কায় দিন গুনছেন ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকদের একাংশ।
এমনিতে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ২২ গজে টিম ইন্ডিয়ার সখ্যতা নেই বললেই চলে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এই ব্ল্যাক ক্যাপসদের কাছে পরাস্ত হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। ধোনির চোখের জল আরও প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকের হৃদয় ভেজায়। এই ধাক্কার ঠিক ২ বছর পর অর্থাৎ ২০২১ সালে আইসিসি টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ ফাইনালে আবারও এই দুটো দল একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল। সাউদাম্পটনে আয়োজিত সেই ম্যাচে কাইল জেমিসন নায়ক হয়ে উঠেছিলেন। প্রথম ইনিংসে তিনি ৩১ রানে ৫ উইকেট শিকার করে ভারতীয় শিবিরকে কার্যত শুইয়ে দেন। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে হারতে হয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়াকে।
আইসিসি নকআউট ম্যাচে ভারত এবং নিউজিল্য়ান্ড এখনও পর্যন্ত মোট ৪ বার একে অপরের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছে। এরমধ্যে নিউজিল্যান্ড যে এগিয়ে রয়েছে, সেটা ভারতীয় ক্রিকেট দলের কাছে দূর্ভাগ্য বলা যেতে পারে। এই লড়াইয়ে কিউয়িরা ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে।
২০১৯ এবং ২০২১ ছাড়া আরও একবার আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। সেটাও ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল। ২০০০ সালে আয়োজিত এই ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত শতরান করেছিলেন ক্রিস কেয়ার্নস। শেষপর্যন্ত ২৬৫ রান তাড়া করে ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিল। তবে এসব তো নেহাতই পরিসংখ্যান। আশা করা যায়, আগামী রবিবারের পরিস্থিতি একেবারে আলাদা হবে। ব্যাট হাতে রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার সকলেই বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছে। গত রবিবার (২ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বরুণ চক্রবর্তী ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন। ফাইনালেও ভেলকি দেখানোর অপেক্ষায় তিনি মুখিয়ে রয়েছেন। আগুন ফর্মে রয়েছেন মহম্মদ সামি এবং হর্ষিত রানাও। আশা করা যায়, এবার টিম ইন্ডিয়া পরাজয়ের ইতিহাস বদলাতে পারবে।