
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন ভারতের লভলিনা বড়গোহাঁই। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, পারলেন না লড়াইতে। বিশ্ব সেরা তুরস্কের বুসেনাজ সুরমেনেলির বিরুদ্ধে পরাস্ত হলেন ০-৫‘য়ে। ভারতের নামী বক্সারকে ব্রোঞ্জ পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল। কোনও রাউন্ডেই তিনি রাশ ধরে রাখতে পারেননি।
তুরস্কের প্রতিদ্বন্দ্বী সুরমেনেলি ছিলেন কঠিন প্রতিপক্ষ। যিনি এ বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে দু’টি সোনা পেয়েছেন। ছ’বছর আগে তিনি দেশের প্রেসিডেন্টকে অলিম্পিক্স পদক এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাঁর সেই স্বপ্ন পূর্ণ হল। এ সবে অবশ্য অবিচলিত ছিলেন অসম কন্যা লভলিনা। তিনি বলে এসেছিলেন, আমার লক্ষ্য সোনা, কিন্তু বিপক্ষ যখন ক্ষুধার্ত বাঘের মতো থাকে, সেদিন তাঁকে হারানো কষ্টকর, ঠিক তাই হয়েছে বুধবার রুপো জয়ের ম্যাচে।
India is confirmed of 2nd Olympics medal🇮🇳
What a lovely Boxing from Lovlina🥊@LovlinaBorgohai has reached semi-finals and looking for Gold medal in #Tokyo2020 Olympics!#Cheer4India pic.twitter.com/Rc3IU93svF— Kiren Rijiju (@KirenRijiju) July 30, 2021
লভলিনার কোচ বঙ্গসন্তান আলি কামার টোকিও থেকে মঙ্গলবার রাতে হোয়াটসঅ্যাপ কলে বলেছিলেন, ‘‘লভলিনা এখন খুবই আত্মবিশ্বাসী এই লড়াইয়ের আগে। পুরোপুরি তৈরি আমার ছাত্রী। এই দুই বক্সার এর আগে মুখোমুখি হয়নি। ফলে দু’জনেরই সমান সমান সুযোগ থাকবে।’’ কিন্তু প্রথম রাউন্ডে হারের পরেই তাঁর ছাত্রী ব্যাকফুটে চলে যান। আলি রিংয়ের বাইরে সমানে পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন লভলিনাকে, কিন্তু তাঁর যেটি সেরা অস্ত্র আপারহুক সেটিই ভাল করে মারতে পারেননি তুরস্কের বক্সারকে।
এর আগে বক্সিংয়ে অলিম্পিক্সে দেশকে পদক এনে দিয়েছেন মাত্র দু’জন। বিজেন্দর সিং ও মেরি কম। এ বার পদকের লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েও মেরি কম বলেছিলেন, আমি পারিনি, কিন্তু আমাদের সোনা এনে দেবে লভলিনা। কিন্তু অসম কন্যা নিরাশ করলেন আসল লড়াইয়ে। তিনি আক্রমণাত্মক শুরু করলেও যত রাউন্ড এগিয়েছে রাশ ধরে রাখতে পারেননি।
And India wins its THIRD medal at #Tokyo2020!! 🥳
Lovlina Borgohain clutches #Bronze in the women's #Boxing welterweight category! 🔥
To win a medal in your first #Olympics; India is extremely proud of you @LovlinaBorgohai!! 🇮🇳
— MyGovIndia (@mygovindia) August 4, 2021
Take a bow! 🙌🏼 pic.twitter.com/OUylnqrXtF
তুরস্কের বক্সারের কাছে হারলেও তিনি যে দেশকে গর্বিত করেছেন, সেটিও টুইট করে জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজেজু। তিনি লিখেছেন, তুমি এই লড়াইয়ে হারলেও পদক জিতে আমাদের গর্বিতই করেছ। তোমাকে অনেক অভিনন্দন।
টোকিও অলিম্পিকে প্রথম কোনও বক্সার হিসেবে লভলিনা ব্রোঞ্জ পদক পেলেন। তাঁকে হারিয়ে বিপক্ষ বক্সার এতটাই উত্তেজিত ছিলেন যে টারম্যাকে গজরাতে গজরাতে আঙিনা ছাড়ছিলেন। লভলিনা অবশ্য প্রমাণ করলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কিভাবে লড়াই করে দেশের জন্য পদক আনা যায়। তিনি হয়তো শেষমেশ সোনা কিংবা রুপো এনে দিতে পারেননি, এও ঠিক, আমাদের দেশের যা পরিকাঠামো তাতে সোনা পেলে হয়তো অনেক ত্রুটি ঢেকে যেত, তাতে আখেরে দেশের ক্রীড়ারই ক্ষতি হতো। তাতে হাওয়ায় ভাসতে শুরু করতেন নেতা, মন্ত্রী, কর্তারাও।