
হাতে খোদাই করা মায়ের ট্যাটু, ইস্টবেঙ্গলে বিদেশীদের ভিড়ে চকমক করছেন হীরা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জীবনে বারবার ঠোক্কর খেয়েছেন, উঠেও দাঁড়িয়েছেন। একবার পুনেতে সেনাবাহিনীর ট্রায়ালে গিয়েছিলেন হীরা মন্ডল, সেবার কম উচ্চতার জন্য বাতিল হয়ে যান।
ভাগ্যিস বাতিল হয়েছিলেন, না হলে এই দিনটি দেখাই হতো না। যেদিন তিনি আইএসএলে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হলেন। ইস্টবেঙ্গল হয়তো তাদের চারনম্বর ম্যাচে চেন্নাইয়ান এফসি-র বিপক্ষে জয় পায়নি, কিন্তু ম্যাচের প্রাপ্তি অবশ্যই হীরা। বৈদ্যবাটির এই ফুটবলার সারা ম্যাচে দাগ কেটেছেন।
গোলরক্ষক শুভম সেন তো বটেই, পাশাপাশি এই সাইডব্যাক না থাকলে চেন্নাইয়ান দলটি একাধিক গোলে জিততে পারত। হয়নি হীরার সাহস ও শুভমের ক্ষীপ্রতার কারণেই। তাই ম্যাচ সেরা হয়ে বলেছেন, এই ম্যাচের একপয়েন্টই বাকি ম্যাচের জন্য মনোবল বাড়াবে।
Hira Mondal was brilliant tonight, showing grit of the highest order at left-back as we held Chennaiyin FC to a 0-0 draw.
🗣 Hear what he had to say after the game.#CFCSCEB #WeAreSCEB #HeroISL pic.twitter.com/t5KTz3Sp2d
— SC East Bengal (@sc_eastbengal) December 3, 2021
এই সাফল্য উৎসর্গ করতে হীরা সঙ্গে সঙ্গে বাঁহাতে মায়ের ট্যাটু দেখিয়ে বলেন, ‘‘মায়ের জন্যই এতদূর আসতে পেরেছি। মা-কেই এই সাফল্য উৎসর্গ করতে চাই।’’ হীরা আরও জানিয়েছেন, “মায়ের ভালবাসা, আশীর্বাদ না থাকলে এতদূর পৌঁছতে পারতাম না। এই যে হাতে মায়ের ট্যাটু। সব কৃতিত্বটাই মায়ের।”
বছর তিনেক আগে অনেক স্বপ্ন নিয়ে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন। কিন্তু সেবার স্প্যানিশ কোচ আলেজান্দ্রো মেনেন্দেজ তাঁকে ভালভাবে ব্যবহার করেননি। অভিমানে পিয়ারলেস চলে গিয়েছিলেন, এমনকি এটিকে-মোহনবাগানে খেলার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। হীরা চলে গিয়েছিলেন মহামেডানে, সেখানেও আই লিগ খেলে সফল। তিনবছরে হীরার জীবন বারবার বদলেছে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলে বিদেশী ও ভিনরাজ্যের ফুটবলারদের ভিড়েও স্বতন্ত্র স্থান করে নিয়েছেন এই বঙ্গসন্তান।
কষ্ট করে এগিয়েছেন হীরা। আট বছর আগে বাবা অশোক মন্ডলকে হারিয়েছিলেন হীরা। তখন থেকে ছেলেকে বড় করার সব দায়িত্ব এসে পড়ে মা বাসন্তী দেবীর কাঁধে। অভাবের মধ্যেই ছেলেকে বড় করেছেন। শত সমস্যার মধ্যেও ছেলেকে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন মা। তিনিই সাফল্যের রাস্তা দেখিয়েছেন হীরাকে, তাই তো মায়ের কথা বলতে গিয়ে তাঁর চোখে জল চলে এসেছে।