গৌতম গম্ভীর
শেষ আপডেট: 12th March 2025 12:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মধুচন্দ্রিমা আপাতত শেষ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের রেশ কাটিয়ে ময়দানে ফিরছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকারা। আইপিএল শুরু হতে আর দু’সপ্তাহও বাকি নেই। ইতিমধ্যে বিভিন্ন খেলোয়াড় নিজেদের দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন, কেউ যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই আবহে, কিছুটা অন্তরালেই, নিজের মতো রোডম্যাপ ছকে নেওয়ার কাজ শুরু করলেন টিম ইন্ডিয়ার হেড কোচ গৌতম গম্ভীর। সূত্রের খবর, আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজ এবং তারপর সাতাশের বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করেছেন তিনি। তবে সবার আগে লক্ষ্য ইংল্যান্ড সফর। যা শুরু হতে চলেছে ২০ জুন থেকে। সেই কারণে ট্যুর শুরুর আগেই ভারতের এ-দলকে নিয়ে ইংল্যান্ড যাত্রার চিন্তাভাবনা করছেন তিনি। সরকারিভাবে এখনও এই নিয়ে কিছু জারি না হলেও বিসিসিআইকে গম্ভীর নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বলে খবর।
এর আগে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোনও হেড কোচ এ টিম কিংবা অনূর্ধ-উনিশ দল—কাউকে নিয়ে কোনও সিরিজ খেলতে বিদেশ যাননি। রাহুল দ্রাবিড় যতদিন দলের দায়িত্বে ছিলেন ততদিন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি থেকে কাউকে বেছে খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাঠানো হত। এবার গৌতম অবসার্ভার বা পরিদর্শক হিসেবে যাবেন নাকি তাঁর বদলি হিসেবে ভিভিএস লক্ষ্মণের মতো কাউকে বেছে নেবেন নির্বাচকরা, সেদিকে নজর থাকবে।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে ভাল পারফরম্যান্স সত্ত্বেও টেস্টে সাম্প্রতিক সময়ে ল্যাজেগোবরে হয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের হাতে তিন টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পাশাপাশি বর্ডার গাভাসকার ট্রফি হার—দুবাই যাত্রার আগে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহলে ‘কোচ হটাও’ স্লোগান ভাসতে শুরু করেছিল। ট্রফি জয়ের পর সেই আওয়াজ সাময়িকভাবে থিতবে ঠিকই। কিন্তু ইংল্যান্ড টেস্টের অ্যাসিড টেস্টে ব্যর্থ হলে পুরোনো আওয়াজ নতুন করে চাগাড় দিয়ে উঠতেই পারে। মত বিশেষজ্ঞদের।
সূত্রের খবর, শুধু ইংল্যান্ড সিরিজ নয়। সাতাশের বিশ্বকাপ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ছাব্বিশের টি-২০ বিশ্বকাপকেও নজরে রেখেছেন গম্ভীর। আর সেটাও আজ নয়। অস্ট্রেলিয়ায় নাস্তানাবুদ হয়ে ফেরার পরই নাকি তিনি রোডম্যাপ নিয়ে আঁক কাটা শুরু করে দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, রাহুল দ্রাবিড় যখন এ-দলের দায়িত্বে, তখন ঘরের মাঠে হোক, বিদেশের জমিতে হোক—প্রচুর সিরিজ খেলত ভারতীয় দল। দ্রাবিড় কুর্সি থেকে সরে গিয়ে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার পর সেই সিরিজের সংখ্যা কমতে থাকে। এখন যা প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। ইদানীং এ টিম যে ম্যাচগুলি খেলে সেগুলি প্রায়শই মূল টিমের কোনও না কোনও হেভিওয়েট সিরিজের প্রস্তুতি মাত্র। তাতে নতুন কোনও তারকার উদয় কিংবা পুলে থাকা ক্রিকেটারদের যাচাই—কোনওটাই হয়ে ওঠে না। গম্ভীর এই অভ্যাসের বদল এনে পুরোনো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।
মূলত দুটো জায়গা নিয়ে নাখুশ গুরু গম্ভীর। একটি ওপেনিং জুটি। অন্যটি মিডল অর্ডার। সরফরাজ খান কিংবা অভিমন্যু ঈশ্বরনের কেউই তাঁর আস্থা অর্জন করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যর্থ হয়েছেন দুজনেই। আসন্ন এ-টিমের ট্যুরে করুণ নায়ার কিংবা সাই সুদর্শনরা নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পেতে পারেন। পাশাপাশি পেস বোলিং ইউনিট নিয়েও চিন্তিত গম্ভীর। জসপ্রীত বুমরাহ এবং মহম্মদ সামির ফিটনেস চিন্তার ভাঁজ বাড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন কোনও সিমারকে যাচাই করে নিতে চান তিনি।
টেস্টের মতো ওয়ান ডে, টি-২০-তেও একটি কাঠামো গড়ে তুলতে আগ্রহী গম্ভীর। পরবর্তী বিশ্বকাপের আগে মোট ২৪টি একদিনের ম্যাচ খেলবে টিম ইন্ডিয়া। ততদিন পর্যন্ত কি অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব চালাতে পারবেন রোহিত? না পারলে বিকল্প মুখ কে? ওয়ান ডে আর টি-২০-তে দু’দফা আলাদা টিম বেছে নেবে টিম ম্যানেজমেন্ট? সেক্ষেত্রে আসন্ন আইপিএল হতে পারে খেলোয়াড় বাছাইয়ের কষ্টিপাথর। আগামি বিশ্বকাপের আগে এই ফর্ম্যাটেও মোটামুটি একটা স্থায়ী দল গড়ে তুলতে চান গম্ভীর।