
ছোটবেলায় মাথায় কাঠের বোঝা তোলা মেয়ে আজ সোনা আনছে ওয়েট লিফটিংয়ে! সামনেই অলিম্পিক্স
অলিম্পিক্স পাঁচ মাস দূরে। ২০৩ কেজি বাড়িয়ে পৌঁছতে হবে ২১০-এ।
অলিম্পিক্সের ওয়েট লিফটিং বিভাগে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছেন সাইখম মীরাবাই চানু। খুব ছোটবেলাতেই স্থানীয় এক খেলোয়াড়ের চোখে পড়েছিল এই ওজন তোলার ক্ষমতা। তার পরেই শুরু অন্য এক লড়াই। ভাল গাইডেন্সও পেয়েছিলেন, তার পর আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি মণিপুরের মেয়েটিকে। তাঁর দিকেই এখন চোখ সারা দেশের। রিও-তে ভারোত্তোলনে ৪৮ কেজি বিভাগে পদক ফেলে এসেছিলেন অল্পের জন্য। টোকিওতে আর সেই ভুল করতে রাজি নন ভারোত্তোলন ভারতের পোস্টার গার্ল, ২৫ বছরের মীরাবাই চানু। তার আগে সামনের এপ্রিলেই কাজাখাস্তানে আছে এশিয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপ। সেটাই আপাতত পাখির চোখ মালেশ্বরীর অনুগামীর।
সম্প্রতি জাতীয় ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপ উপলক্ষে কলকাতায় এসেছেন তিনি। নিজের করা ২০১ কেজির রেকর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মঙ্গলবার। ২০৩ কেজির ওজন তুলে চমকে দিয়েছেন সকলকে। আর সেই সঙ্গেই কোচ বিজয় সিংয়ের চোখকে ফাঁকি দিয়েই দেদার খাচ্ছেন প্রিয় খাবার, মাছ। তাঁর বাংলাকে ভালবাসার অন্যতম কারণ এই খাবারটি। ফিশ তন্দুরি পেলে পৃথিবীর সমস্ত সেরা খাবার ত্যাগ করতে রাজি তিনি।
অলিম্পিক্সের আগে মীরাবাই চানুর লক্ষ্য, ম্যাজিক ফিগার ২১০ কেজি। চিনের ভারোত্তোলকের বিশ্ব রেকর্ড এই ওজনটি। এশিয়ান মিটের মাস দুয়েক হাতে আছে। আর অলিম্পিক্স পাঁচ মাস দূরে। ২০৩ কেজিকে বাড়িয়ে পৌঁছতে হবে ২১০-এ। এমনটা সম্ভব হবে কিনা, প্রশ্ন সেটাই। মীরাবাই অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। তাঁর মতে, পরিশ্রম করলে ফল আসবেই।
তাই এখন সারা দিন হাড়ভাঙা অনুশীলন চালাচ্ছেন মণিপুরী কন্যা। রোজ ১৪০ থেকে ১৪৫ কেজি ওজন তুলছেন নিয়ম মেনে। মেরি কমকে দেখে বড় হয়েছেন। মেরি কমের পরিশ্রম আর নিয়মানুবর্তিতা মীরাবাইয়ের পাথেয়। তাই কোনও ভাবেই ফাঁকি নেই প্র্যাকটিসে। ২০১৬-র রিও অলিম্পিক্সের ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখে যেন আরও বেশি সতর্ক তিনি। আর কোনও ভুল করতে রাজি নন দেশের সম্ভাব্য অলিম্পিক্স পদকজয়ী।
ইতিমধ্যেই অবশ্য কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছেন তিনি। সোনা রয়েছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও। ২০১৮ সালে দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়াসম্মান রাজীব খেলরত্ন পেয়েছেন। এবার চাই অলিম্পিক্স। নইলে যেন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে সাফল্যের তালিকা।