কোয়ার্টার ফাইনালে কি গোল খরা কাটবে এমবাপের?
শেষ আপডেট: 4th July 2024 14:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আগামীকাল, ইউরোর ধুন্ধুমার দুই কোয়ার্টার ফাইনাল যেন দুই প্রান্তে রয়েছে। একটা শ্যামবাজার হলে আর একটা রাসবিহারী!
প্রথমে, রাত সাড়ে ন'টা থেকে মুখোমুখি জার্মানি ও স্পেন। বলা হচ্ছে, এটাই নাকি বকলমে ইউরো ফাইনাল! দুই সবচেয়ে শক্তিশালী দল। গোলের হিসেবেও সবচেয়ে এগিয়ে। জার্মানি করেছে দশ গোল। স্পেন দিয়েছে আটটি। এই ম্যাচ যদি না হত, অক্লেশে বলে দেওয়া যেত, ইউরো ফাইনাল হতে পারে জার্মানি-স্পেন। গোলের হিসেবে জার্মান বম্বারদের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও, স্প্যানিশ আর্মাডা প্রায় অপ্রতিরোধ্য ফর্মে আছে। পুরো টুর্নামেন্টে একটিমাত্র গোল খেয়েছে। সেটাও সেমসাইড। জার্মানিও অবশ্য কম যাচ্ছে না। জুলিয়ান নাগেলসমানের হাতে প্রায় খোলনলচে বদলে গিয়েছে ডাই মানশাফটদের। জামাল মুসিয়ালা এই মুহূর্তে ইউরোর সর্বোচ্চ গোল করে সোনার বুটের দৌড়ে আছেন।
এদিকে সম্পূর্ণ উল্টো ছবি তার পরের ম্যাচ নিয়ে। যেখানে কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্সের মুখোমুখি হতে চলেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল।
ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশোঁ ঠিক কী করবেন, ফরাসি সংবাদমাধ্যমও বুঝে উঠতে পারছে না। স্রেফ পরিসংখ্যান দিয়ে দেখলেও, ফ্রান্সের দিকে তাকালে বুকের বাঁ দিকে চিনচিনে ব্যথা হতে পারে। এক বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন, পরের বিশ্বকাপে রানার্স আপ। এদিকে ইউরোতে এসে ফ্রান্সের অবস্থা চোখে দেখা যাচ্ছে না। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে। অথচ এখনও অবধি সারা টুর্নামেন্টে তিনটে গোল করেছে ফ্রান্স। যার দুটো সেমসাইড। একটা পেনাল্টি! অর্থাৎ, এখনও অবধি একটাও খোলা মাঠে গোল করেনি লা ব্লুজ-রা। তাঁদের 'সর্বোচ্চ স্কোরার', সেমসাইড।
গোদের ওপর বিষফোঁড়া, অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই নাক ভেঙে বসেছেন এমবাপে। খেলতে হচ্ছে মুখোশ পরে। সেটা পরে খেলা যে কতটা কষ্টকর, শেষ ষোলোর ম্যাচের আগে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এমবাপে। বিশ্বের অন্যতম সেরা অস্ত্র এমবাপেকে এখনও এমবাপে-সুলভ জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। মার্কাস থুরামকেও বসাতে হয়েছে। ওদিকে একইরকম ঘেঁটে আছেন আঁতোয়া গ্রিজমান। দেশের হয়ে ৮৪ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞ গ্রিজমানকে শেষ অবধি বসিয়ে দিয়েছেন দেশোঁ। তাতে মোটেও খুশি হ'ননি ফরাসি তারকা। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে আবার তাঁকে ডান উইং-এ খেলান দেশোঁ। দলে ফিরতে পেরে খুশি হলেও, নিজের এই নতুন পজিশনেও তেমন অভ্যস্ত নন গ্রিজমান। সাংবাদিক সম্মেলনে ঠারেঠোরে ঠুকেছেন দেশোঁকে, 'আমি শেষ রাইট উইং-এ খেলেছি, যখন আমি রিয়াল সোসিয়েদাদে খেলতাম।' বলা বাহুল্য, গ্রিজমান সোসিয়েদাদ ছেড়েছেন ২০১৪-তে। বেলজিয়াম ম্যাচেও কোনও লাভ হয়নি।
ফরাসি সাংবাদিকরা অবশ্য এখনও আশায় রয়েছেন। অনেকে বলছেন, আরে, উল্টোদিকের ছবিটাও তো দেখতে হবে। ফ্রান্স যেমন গোল দিতে পারেনি, তেমন গোলও তো খায়নি। টুর্নামেন্টে এখনও অবধি একটাই গোল খেয়েছে ফরাসিরা, পেনাল্টিতে দিয়েছেন রবার্ট লেওয়ানডস্কি। অতএব বলা যায়, প্রায় বাস্তিলের মতোই অভেদ্য পাঁচিল তুলে রেখেছেন ডিফেন্ডাররা। অথচ এই রক্ষণের মূল স্তম্ভ হিসেবে খেলা উইলিয়াম স্যালিবা শুরুতে দলে থাকবেন তাই কেউ ভাবেনি। সঙ্গে রয়েছে ইব্রাহিমা কন্তে। এদিকে আদ্রিয়ান র্যাবিও কার্ড দেখে থাকতে পারবেন না। ফলে দেশোঁকে সম্ভবত গ্রিজমানের সঙ্গে শুরু থেকে নামাতে হতে পারে অলিভিয়ের জিরুকে।
ইউরোর ইতিহাসে একটি মাত্র আত্মঘাতী গোলে ১-০ ম্যাচ জেতার নজির আছে মোট পাঁচবার। যার তিনটিই ফ্রান্সের। তার দুটো আবার এবারে। কোয়ার্টার ফাইনালে কি শেষ অবধি এমবাপে-গ্রিজমানরা মাঠে গোল করবেন? নাকি শেষ অবধি আবার সেই সেমসাইডের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে দেশোঁকে?