Date : 15th May, 2025 | Call 1800 452 567 | [email protected]
Shubhman Gill: 'ও তো প্রথম একাদশেই নিশ্চিত নয়!’, টিম ইন্ডিয়ার ভাবী টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে শুভমানে অনাস্থা শ্রীকান্তেরসাংবাদিক বিশ্বজিৎ রায় প্রয়াতএকাধিক জেলায় কালবৈশাখীর সতর্কতা, সপ্তাহের শেষে রাজ্যের আবহাওয়া রূপ বদলাবেলখনউয়ের কাছে দিল্লিগামী বিহারের বাসে আগুন, মৃত ৫নিশানায় শীর্ষ আদালত, রাষ্ট্রপতির অধিকার কি সুপ্রিম কোর্ট বেঁধে দিতে পারে? প্রশ্ন দ্রৌপদীরপ্রয়াত তাপস সাহা, ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তেহট্টের বিধায়কOperation Sindoor: পাকিস্তানের চিনা এয়ার ডিফেন্সকে বোকা বানাতে ভারতীয় সেনার সময় লেগেছিল মাত্র ২৩ মিনিট!লিলি-মার্শ-চ্যাপেলের একত্র অবসর অস্ট্রেলিয়াকে খাদের কিনারে নিয়ে যায়, ত্রিমূর্তির বিদায় কি ভারতকেও বিপদে ফেলবে?মণিপুরের ভারত-মায়ানমার সীমান্তে গুলির লড়াই, ১০ জঙ্গিকে খতম করল সেনাপুলওয়ামায় নতুন করে গুলির লড়াইয়ে খতম এক জইশ জঙ্গি, আরও ২-৩ জনের সন্ধান পেয়েছে সেনা
UEFA Euro 2024: Didier Deschamps

জিতেছেন বিশ্বকাপ, ইউরো, হারতে হয়েছিল মোরিনহোর কাছে; একনজরে ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশোঁ

Advertisement

খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বিশ্বকাপ, ইউরো। ফুটবল ক্লাব মার্সেইককে ইউরোপ সেরা করেছিলেন। কোচ হিসেবে এএস মোনাকোকে ইউরোপ সেরা লিগের ফাইনালে তুলেছিলেন। জিতেছেন বিশ্বকাপ। শুধু ইউরো জেতাটাই যা বাকি দিদিয়ের দেশোঁর।

জিতেছেন বিশ্বকাপ, ইউরো, হারতে হয়েছিল মোরিনহোর কাছে; একনজরে ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশোঁ

ইউরোর মহড়ায় দলের সেরা অস্ত্র, অধিনায়ক এমবাপের সঙ্গে দেশোঁ।

Advertisement

শেষ আপডেট: 1 July 2024 17:24

সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায় 

ইতালি ছিটকে গিয়েছে। নব্বই মিনিট ধরে এক গোলে পিছিয়ে থেকে শেষ অবধি ইনজুরি টাইমের গোলে টেনেটুনে পাশ করেছে ইংল্যান্ড। আজ ফ্রান্স কী করবে? নিঃসন্দেহে ইউরো যুদ্ধের শেষ ষোলোর মাহেন্দ্রক্ষণ আজকের ম্যাচ। ইতালি খেলেছে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে, ইংল্যান্ডের উল্টোদিকে ছিল স্লোভাকিয়া। সেখানে আজ তর্কাতীতভাবে শেষ ষোলোর সবচেয়ে ধুন্ধুমার যুদ্ধে মুখোমুখি ২০১৮ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী, দুই পড়শি দেশ ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। 

অথচ এ'হেন হাইভোল্টেজ ম্যাচেও ফুটবলপ্রেমীদের আশঙ্কার জায়গা খারাপ ফুটবল। ইউরোপের মধ্য ও আধুনিক যুগের ইতিহাসের অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিল ইংলিশ চ্যানেলের দুই পারের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ড-ফ্রান্স। তাদের দ্বৈরথের ছায়া এসে পড়েছিল ভারতেও। এদিকে ইউরোর মঞ্চে একেবারে হাত ধরাধরি করে খারাপ খেলার প্রতিযোগিতায় নেমেছে ইংরেজ ও ফরাসিরা। দুই দলই গ্রুপ পর্বে মাত্র দু'টি গোল করেছে। তার মধ্যেও আবার ফরাসিদের হাল আরও খারাপ। ওই দু'গোলের একটি গোল সেমসাইড, একটা আবার পেনাল্টি। একইরকম খারাপ অবস্থা বেলজিয়ামের। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ মিলিয়ে ওই দু'গোলই করেছে, দু'টোই রোমানিয়ার বিরুদ্ধে। স্লোভাকিয়ার কাছে হেরেছে, ইউক্রেনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে। এই অবস্থায় আজকের ম্যাচ যতই বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের রিপিট হোক, অনেকেরই আশঙ্কা, শেষ অবধি একটা দেখার মত ম্যাচ হবে তো?

ভাবনাটা কি দিদিয়ের দেশোঁর মাথাতেও নেই? গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় না কিন্তু! ফুটবলবিশ্বে ট্রফির দেবতা তাঁর ওপর অত্যাধিক দরাজ! বস্তুত, দেশোঁর মত সোনায় মোড়া ট্রফি পরিসংখ্যান ফুটবলদুনিয়ার অনেক রথী-মহারথীরও নেই। ১৯৯৩ সালে তরুণতম অধিনায়ক হিসেবে ফরাসি ক্লাব মার্সেইকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে তোলেন দেশোঁ। উল্টোদিকে ছিল এসি মিলান। যাদের ফুল ব্যাকে ফ্রাঙ্কো বারেসি, লেফট ব্যাকে পাওলো মালদিনি, সামনে সেন্টার মিডফিল্ডে ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড, ফরোয়ার্ডে মার্কো ভ্যান বাস্তেন। সেই তারায় মোড়া দলকে হারিয়ে জয়ী হয় মার্সেই। আজ অবধি ওই একবারই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রুপোর ট্রফি ঢুকেছে ফ্রান্সে। 

পরের মরসুমে জুভেন্তাসে যোগ দেন তিনি। কোচ তখন মার্সেলো লিপ্পি। আট বছর পরে তাঁর হাত ধরেই বিশ্বকাপ জিতেছিল ফাবিও কানাভারোর ইতালি। জুভেন্তাসের খ্যাতি তখন ধুন্ধুমার। দেশোঁর সঙ্গে খেলছেন জিনেদিন জিদান, আন্তোনিও কন্তে, এডগার ডেভিডস। ১৯৯৫-৯৬ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে আয়াখসকে হারিয়ে ইউরোপ সেরা হয় জুভেন্তাস। ১৯৯৮ সালের ১২ জুলাই প্যারিসের স্টেড দে' ফ্রান্সে যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে তিন গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি তুলছেন দেশোঁ, বলা হয়েছিল, ফরাসিরা জিতল ইতালীয় দর্শনে। দেশোঁ, জিদান, ক্যান্দেলা, লিলিয়ান থুরাম-সহ একাধিক ফুটবলার খেলতেন সেরি এ'র লিগে। দুই বছর পরে, ২০০০ সালের ইউরোতে একেবারে সরাসরি মুখোমুখি হয়েছিল দেশোঁর ফ্রান্স ও পাওলো মালদিনির ইতালি। আজুরিদের কোচ তখন কিংবদন্তী দিনো জফ। স্কোয়াডের একজন ফুটবলারও ইতালির বাইরে কোনও দেশের ক্লাবে খেলেন না! স্রেফ জুভেন্তাসের ফুটবলারই সাতজন। ছিলেন আলেজান্দ্রো দেল পিয়েরো, জামব্রোতা, ইনজাগি, কন্তে। রটারডামে নব্বই মিনিট এগিয়ে ছিল ইতালি। শেষে ইনজুরি টাইমে সমতা ফেরায় ফ্রান্স। থ্রিলারকে হার মানানো সেই ম্যাচে শেষে ডেভিড ত্রেজেগুয়ের গোল্ডেন গোলে খেতাব যায় ফ্রান্সে! 

আট বছর পরে অবিশ্যি শোধ নিয়েছিল ইতালি। নিয়েছিলেন ওই লিপ্পিই। বার্লিনে জিনেদিন জিদানের একটা ঢুঁসোয় সব অঙ্ক গুলিয়ে গিয়েছিল ফ্রান্সের। আজ, এত বছর পরেও, ২০০৬ বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে কথা বলতে একটু অস্বস্তিতে পড়েন ফরাসিরা।

খেলোয়াড় হিসেবে দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বিশ্বকাপ, ইউরো জিতেছেন দেশোঁ। আর কিছু বাকি ছিল না তাঁর। কিন্তু কোচ হিসেবেও বেশ কিছু চমক আছে দেশোঁর। ভূমধ্যসাগরের তীরে একেবারে ফ্রান্সের গা ঘেঁষে রয়েছে পুঁচকে দেশ মোনাকো। আদতে একটা নগর-রাষ্ট্র, ভ্যাটিক্যান সিটির পরেই পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশ। অথচ এই মোনাকোতেই হয় পৃথিবীর অন্যতম তাবড় ফর্মুলা ওয়ান রেস মোনাকো গ্রাঁ পিঁ। পাল্লা দিয়ে জনপ্রিয় ফুটবল। যার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র, মোনাকোর বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব এএস মোনাকো। আলাদা সার্বভৌম রাষ্ট্র হলেও, এএস মোনাকো খেলে ফরাসি লিগ ওয়ানে। এখানেই মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে নিজের ফুটবলজীবন শুরু করেছিলেন কিলিয়ান এমবাপে। 

খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নিয়ে এএস মোনাকোয় প্রথম কোচিং শুরু করেন দেশোঁ। আর শুরুতেই চমক! ২০০৪ সালের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠে এএস মোনাকো। গেলশেনকার্খেনে হওয়া সেই ফাইনালে উল্টোদিকে ছিল পর্তুগালের পোর্তো। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ওই শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড-স্পেন-জার্মানি-ইতালির বাইরের দুই ক্লাব। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে ম্যাচটা হয়ে দাঁড়ায় দুই তুখোড় তরুণ কোচের মগজাস্ত্রের লড়াই। তিন গোলে মোনাকোকে চুরমার করে দেয় পোর্তো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তারায় ভরা আকাশে ওইদিন প্রথম পা রেখেছিলেন পরবর্তীকালের 'দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান', পোর্তোর কোচ হোসে মোরিনহো!

কোচ হিসেবে বিশ্বজয় করা হয়ে গিয়েছে তাঁর। পর পর দুইবার ফ্রান্সকে বিশ্বকাপ ফাইনালে তুলেছেন দেশোঁ। শুধু ইউরোপ জয়টাই যা অধরা রয়েছে তাঁর। অথচ সামনে কাঁটায় বিছোনো পথ। নাকে চোট পেয়ে কাবু কিলিয়ান এমবাপে। কার্যত একাই ম্যাচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু সেই ফর্ম এখনও নেই। এনগোলো কন্তে নজর কেড়েছেন। কিন্তু এমবাপে না থাকলে আঁতোয়া গ্রিজমানও গোলের নাগাল পাচ্ছেন না। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁকে বসাতে হয়েছে দেশোঁকে। অলিভিয়ের জিহুর ওপর আর ভরসা করা চলে না। এই অবস্থায় দেশোঁর সামনে কঠিন ফাঁড়া বেলজিয়াম। যাদের রোমেলু লুকাকু, কেভিন দে ব্রুইনও একইরকম নড়বড় করছেন।

দেশোঁর এখন সামনে বড় চিন্তা বেলজিয়াম। কিন্তু বেলজিয়ামকে হারালে দেশোঁর সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে চলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল। অবশ্য, যদি পর্তুগাল আজ স্লোভেনিয়াকে হারাতে পারে। সেক্ষেত্রে ২০১৬ ইউরো ফাইনালের একটা মধুর প্রতিশোধ অবশ্য নিতে পারবেন এমবাপেরা। তার জন্য অবশ্যই আজ রাতের দুই ম্যাচের দিকে নজর রাখতে হবে। 

Advertisement

Advertisement


ভিডিও স্টোরি