শেষ আপডেট: 30th September 2024 13:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সত্যজিৎ রায় পরিচালিত 'হীরক রাজার দেশে' সিনেমায় একটি জনপ্রিয় ডায়লগ রয়েছে। 'দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান।' ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাবেও আপাতত তেমনই একটা ছবি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাবের প্রাক্তন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত পদত্যাগ করেছেন। তবে কুয়াদ্রাতের এই সিদ্ধান্ত একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়। কলিঙ্গ সুপার কাপ ছাড়া তিনি ইস্টবেঙ্গল দলকে তেমন সাফল্য এনে দিতে পারেননি। গত ডুরান্ড মরশুমের লিগ পর্যায়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারানোর পর কুয়াদ্রাতকে কার্যত মাথায় তুলে ফেলেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। কত হইহল্লা, কত আবেগ! বৃষ্টিস্নাত যুবভারতীতে মিশে যাচ্ছিল লাল-হলুদ সমর্থক চোখের জল। মনে করা হয়েছিল, ম্যাজিশিয়ানের জাদুকাঠিতে ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য হয়ত বদলে যাবে।
কিন্তু, তেমনটা একেবারে হয়নি। ডুরান্ডের ফাইনালে সেই মোহনবাগানের কাছে হেরেই ডুরান্ড কাপ হাতছাড়া করতে হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে কলিঙ্গ সুপার কাপে জয় এই স্প্যানিশ কোচের সিভি-তে অনেকটাই অক্সিজেন জুগিয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে সাফল্যের ঝুলি একেবারে শূন্য। আর এবার ইন্ডিয়ান সুপার লিগে টানা তিনটে ম্যাচ হারের পর 'গো ব্যাক কুয়াদ্রাত' স্লোগান উঠতে শুরু করে। সেই রোষের সামনেই কার্যত নতি স্বীকার করলেন লাল-হলুদের প্রিয় প্রফেসর।
তবে কুয়াদ্রাতের এই পদত্যাগ আরও একজনের কথা মনে করিয়ে দেয়। একটা সময় তিনিও সাফল্যের চূড়ায় ছিলেন। কিন্তু, আই-লিগে টানা চার ম্যাচে হারের পর তাঁকেও সিংহাসনচ্যুত হতে হয়েছিল। তিনি আর কেউ নন, ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মরগ্যান। তাঁকেও পড়তে হয়েছিল সমর্থকদের রোষের মুখে। ২০১৭ সালের ৯ এপ্রিল মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হেরে যখন তিনি মাঠ ছাড়ছিলেন, সেইসময় লাল-হলুদ সমর্থকরা তাঁর গায়ে থুতুও ছিটিয়েছিলেন। তিন বছরের মেয়াদ শেষে পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে। তাঁর ছেড়ে আসা সিংহাসনে বসেছিলেন গোয়ার ম্যানেজার আর্মান্দো কোলাসেো
কুয়াদ্রাতকে অবশ্য অতটাও লজ্জার মুখে পড়তে হয়নি। ২০২৪-২৫ আইএসএল টুর্নামেন্টে আগামী ১৯ অক্টোবর মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। সেই ম্যাচে যদি ইস্টবেঙ্গল জিততে না পারত, তাহলে সমর্থকদের ক্ষোভের বিস্ফোরণ পারমানবিক বোমার থেকে কোনও অংশে কম হত না। সেই লজ্জার হাত থেকে অবশ্যই বাঁচলেন কুয়াদ্রাত। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে বিনো জর্জের হাতে। কলকাতা ডার্বির চাপ বিনো কীভাবে সামলান, সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে লাল-হলুদ সমর্থকরা।