শেষ আপডেট: 30th October 2024 13:16
'কোথায় ছিলে ওস্তাদ, তুমি কোথায় ছিলে...?' কোচ অস্কার ব্রুজোঁকে আপাতত এই একটাই প্রশ্ন করতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। এই ম্য়াচে তারা ৪-০ গোলে জয়লাভ করেছে। এই জয়ের পর মশালবাহিনীর উচ্ছ্বাস কার্যত বাঁধনছাড়া হয়ে গিয়েছে।
এতদিন ধরে অনেক সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান ক্লাবের সমর্থক তো বটেই, লাল-হলুদ সমর্থকদের একাংশও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকেই তুলেছিলেন একাধিক প্রশ্ন। অবশেষে যাবতীয় অপমানের জবাব দিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। বসুন্ধরার বিরুদ্ধে একে একে কামান গোলার মতো আছড়ে পড়ল আনোয়ার, শৌভিক, নন্দদের গোল।
এই ম্যাচের শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল দাপুটে পারফরম্যান্স করে। গত ম্যাচে পারো এফসি-র বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র করার পর যে আত্মবিশ্বাস তারা ফিরে পেয়েছিল, এবার সেই ডানাতেই ভর দিয়ে তারা উড়ে গেল। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল করলেন দিয়ামান্তাকোস।
লালচুনুঙ্গা দুর্দান্ত একটা ক্রস বক্সের মধ্যে বাড়িয়েছিলেন। প্রথমে দুটো দলের মধ্যেই বল নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। অবশেষে বলটা দিয়ামান্তাকোসের পায়ে আসে। প্রথম সুযোগেই তিনি বিপক্ষের জালে বলটা ঢুকিয়ে দেন।
২০ মিনিটের মাথায় ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ একটা শট! কয়েকমিনিট আগে নাওরেম মহেশ ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। অবশেষে সেই ব্যর্থতা পুষিয়ে দিলেন শৌভিক চক্রবর্তী। বসুন্ধরা অধিনায়ক তপু বর্মন বলটা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগালেন শৌভিক। বক্সের ঠিক বাইরে থেকে নিখুঁত শট শৌভিকের। বসুন্ধরার গোলকিপার কার্যত নীরব দর্শক হয়েই দাঁড়িয়ে রইলেন।
বসুন্ধরা এই জোড়া গোলের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই তৃতীয় গোল ইস্টবেঙ্গলের। ২৬ মিনিটে নন্দকুমারের পা থেকে লাল-হলুদ ব্রিগেডের তৃতীয় গোল আসে।
আর ৩৩ মিনিটে চতুর্থ গোল করলেন আনোয়ার আলি। যে আনোয়ারের পারফরম্যান্স নিয়ে এতদিন ধরে এত বিতর্ক হয়েছিল, এবার তিনি নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করলেন। ইস্টবেঙ্গল দলের এই সেন্টার-ব্যাক বাঁ পায়ের একটি বাঁকানো শটে গোল পরিসংখ্যানে আরও একটি পালক যোগ করলেন। তবে এক্ষেত্রে বসুন্ধরা ডিফেন্সের ব্যর্থতা আরও একবার প্রকট হয়ে উঠল। একটা লম্বা থ্রো-ইন তারা ক্লিয়ার করতে পারল না।
এই জয়ের পাশাপাশি চলতি এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কোয়ার্টার ফাইনাল টিকিট কার্যত কনফার্ম হয়ে গেল। ইস্টবেঙ্গল একদিন না একদিন ঘুরে দাঁড়াতই। কিন্তু, দীপাবলির আগের রাতে এই জয় মশালবাহিনীর আলো যে আরও উজ্জ্বল করবে, তা নিঃসন্দেহে বলা যেতেই পারে।