মিশরকে হারিয়ে গোলের পিরামিডে চেপে বসল রাশিয়া
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মিশর বনাম রাশিয়া। ফুটবলের খবর না রাখা লোকজনও জানেন এই ম্যাচ কখনও হাই-ভোল্টেজ হতে পারে না। যাও বা রাশিয়ার ঝুলিতে একজন লেভ ইয়াসিনের নাম আছে মিশরের ঝুলিতে তাও নেই। মিশর মানে তো ইতিহাস বই, নীল নদ, পিরামিড, মমি এইসব। কিন্তু তবু
শেষ আপডেট: 19 June 2018 20:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মিশর বনাম রাশিয়া। ফুটবলের খবর না রাখা লোকজনও জানেন এই ম্যাচ কখনও হাই-ভোল্টেজ হতে পারে না। যাও বা রাশিয়ার ঝুলিতে একজন লেভ ইয়াসিনের নাম আছে মিশরের ঝুলিতে তাও নেই। মিশর মানে তো ইতিহাস বই, নীল নদ, পিরামিড, মমি এইসব। কিন্তু তবু এই ম্যাচটায় নজর ছিল সকলের। কারণ মিশর। কারণ মিশরের এখন একজন মো সালাহ আছেন।
প্রথম ম্যাচে উরুগুয়ের কাছে সালাহহীন মিশর হেরে গিয়েছিল ১-০ গোলে। তাও প্রায় আটকে যেতে বসে শেষ মুহূর্তে শাপমুক্তি হয়েছিল সুয়ারেজদের। তারপরই মিশরের কোচ বলেছিলেন পরের ম্যাচে তিনি সালাহকে খেলাবেন। ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে ইজিপ্ট ম্যানেজার হুঙ্কার ছেড়ে বলেছিলেন, ‘শেষ দেখে রাশিয়া ছাড়ব।’ বড় কোনও অঘটন না ঘটলে গ্রুপ লিগের তৃতীয় ম্যাচ খেলেই মস্কো ছাড়তে হবে মিশরকে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে হেরে দু’ম্যাচে আপাতত শূন্য। সালাহকে নামিয়েও খুব একটা কাজের কাজ হলো না এ দিন। কারণ আগ্রাসী রাশিয়ান স্ট্রাইকিং লাইন।
সৌদিকে ৫ গোল দেওয়ার পর অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞই তেমন একটা পাত্তা দেননি রুশ টিমকে। কারণ সৌদি কোনও ধরার মতো দলই নয়। তেল সাম্রাজ্যের সম্রাট মানেই তো আর ফুটবল বিশ্বের সব হওয়া যায় না। তাই প্রথম ম্যাচে রাশিয়ার জয় তেমন একটা গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু মিশরের বিরুদ্ধে যে ফুটবল এ দিন খেলল গোলোভিন, চেরিশেভরা তাতে অনেকেই বলছেন এ রাশিয়া বেগ দেবে অনেককেই।
প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল শুরু করে রাশিয়া। সাত মিনিটের মধ্যেই আদায় করে নেয় দুটি কর্ণার। এরপর আস্তে আস্তে খেলায় ফেরে মিশর। দু’দলই মাঝমাঠ জমাট করে আক্রমণে যেতে থাকে। বেশ কিছু গোলমুখী আক্রমণ হলেও গোল তুলে আনতে পারেনি কোনও দলই। ৪২ মিনিটের মাথায় টপ বক্সের উপর থেকে সালাহ’র ফ্লিক অল্পের জন্য বাইরে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শূন্য ভাবে।
[caption id="attachment_12915" align="alignleft" width="300"]
সেন্ট পিটার্সবুর্গে হতাশ মো সালাহ[/caption]
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে মিশর। ৪৭ মিনিটে রোমান জবনিনের শট ক্লিয়ার করতে গিয়ে গোলে ঢুকিয়ে দেন মিশরের ডিফেন্ডার আহমেদ ফাথি। এরপর ৫৯ মিনিটে মারিও ফার্নান্ডেজের সাজানো মাইনাস থেকে ২-০ করেন রাশিয়ান ‘চকো বয়’ ডেনিস চেরিশেভ। এই নিয়ে তাঁর তিন নম্বর গোল হয়ে গেল বিশ্বকাপে। ছুঁয়ে ফেললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে। এর তিন মিনিটের মাথায় আবার গোল চাপিয়ে দেয় রুশ দল। মাঝমাঠ অঞ্চল থেকে আসা একটা উঁচু বল বুকে রিসিভ করে মিশরে স্টপারকে ডজ করে নিখুঁত প্লেসিং-এ গোল করে যান অর্টেম জিউবা। আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি মিশর। ৭২ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে রুশ বক্সে বল পেয়ে যান সালাহ। ফাউল করলে পেনাল্টি পায় মিশর। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান লিভারপুল তারকা। এরপর আক্রমণ করলেও রুশ পোস্টের জাল আর নাড়াতে পারেননি সালাহরা। ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার সঙ্গে সঙ্গে আট গোল করে ফেলেছে রুশ দল। তাই দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া একপ্রকার পাকা আয়োজক দেশের। অন্যদিকে উরুগুয়ে পরের ম্যাচে নামবে সৌদির বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচ যদি সুয়ারেজ, কাভানিরা জিতে যায় তাহলে মিশর-সৌদি ম্যাচ হবে কেবল নিয়ম রক্ষার। ফেরার বিমানে উঠে পড়তে হবে মিশরের রূপকথাকে।