
মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ইস্টবেঙ্গলের, সাজানো চিত্রনাট্যে ‘খেলা হবে’ নিয়ে ক্ষোভও চরমে
প্রশংসার মধ্যেও ধোঁয়াশা যদিও কাটছে না। কয়েকমাস ধরে ক্লাব ও ইনভেস্টরের মধ্যে চুক্তিপত্র নিয়ে দড়ি টানাটানির পরে মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটল কোনও সই ছাড়াই। এটাকে কেউ সহজভাবে নিতে পারছে না। ময়দানে জোর জল্পনা, এগুলি আগে থেকে ঠিকই ছিল, শেষমেশ নবান্ন সভাঘরে এই নাটকের নিস্পত্তি টেনে নায়ক হওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
সব থেকে বড় কথা, কেন সই করা হল না শেষমেশ, কেনই বা স্রেফ মুখের কথার ভিত্তিতে দল আইএসএলে খেলবে, সেই নিয়েও গুঞ্জন। প্রাক্তন ফুটবলারদের একাংশ বলছেন, জোড়াতালি দেওয়া এই সম্পর্ক আগামীদিনে আবারও বিদ্রোহ করে উঠবে না তো? সেইসময় কী হবে?
এই নিয়ে লাল হলুদ সমর্থক থেকে শুরু করে প্রাক্তনদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। তাঁরা বলছেন, এতই যদি নাটক করার হতো, তা হলে আগে কেন করা হল না? তা হলে তো দলগঠন ঠিকঠাকভাবে করা যেত। আর যাই হোক আইএসএলে খেলার জন্যই তো এতকিছু।
আরও তাৎপর্যের বিষয় হচ্ছে, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের ফুটবলারদের তালিকা তৈরিই রয়েছে, ইনভেস্টর চাইলে তাঁরা দিয়ে দেবেন। তার মানে ভেতরে ভেতরে সব প্রস্তুত ছিল, কিন্তু বাইরে থেকে একটা অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে। এমনকি শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ এতদিনের যা হুমকি দিয়েছিল, তাও মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বেপাত্তা। তাঁরাও হাসিমুখে কর্তাদের হাত ধরাধরি করেছেন।
সব হওয়ার পরেও দলগঠনের কী হবে, কোচ কে হবেন দলের, সেই নিয়ে নানা সমীকরণ রয়েছে। হাতে অর্থ থাকলেও ভালমানের কোচ ও ফুটবলার পাওয়া যাবে, গ্যারান্টি নেই। আগামী ৩১ অগাস্ট ফিফার ফুটবলারদের ট্রান্সফার উইন্ডো বন্ধ হয়ে যাবে, ওই সময়সীমা বাড়ানোর কোনও বিষয় নেই। যা করতে হবে, এর মধ্যেই।
সেখানেই প্রশ্ন, কোচ কি সেই ব্রিটিশ রবি ফাউলারই? তিনি কোচ হয়ে এলে ফের ফুটবলারদের সঙ্গে করে নিয়ে আসবেন। তাতে আর যাইহোক সমস্যা কম। নতুন কোচ নিয়োগের সময় নেই। এমনিতে ইস্টবেঙ্গলের একটা প্রাক্তন ফুটবলারদের কমিটি রয়েছে, গতবার তারা অবশ্য দলগঠনে মত দিতে পারেননি। কারণ সেইসময় শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে রেনেডি সিং, বাইচুং ভুটিয়াদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। এবারও কি সেই কমিটি দলগঠন সারবে?
ইস্টবেঙ্গলের যে কমিটি রয়েছে, তাতে রয়েছেন সাধারণ মানের কয়েকজন তারকা, তালিকায় চন্দন দাস, ষষ্ঠী দুলে, দীপঙ্কর রায়রা রয়েছেন। অভিজ্ঞদের মধ্যে শুধু বিকাশ পাঁজি। কিন্তু বিকাশ আবার সাম্প্রতিক ফুটবলারদের সম্পর্কে কিছু জানেন না। ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের দলগঠন করতে বললে তাঁরাই ফের স্থানীয় ফুটবলারদের তালিকা করবেন। আর যদি গতবারের মতো রেনেডিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তারা বিশেষ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ফুটবলারদের বেশি রাখবেন, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। বাকি চার দিনের মধ্যে দলগঠন কী হয়, সেটাই দেখার বিষয়।