হার্দিক পান্ডিয়া
শেষ আপডেট: 17th March 2025 18:14
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আইপিএলে গতবার শেষতম স্থানে টুর্নামেন্ট শেষ করেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। পাঁচবারের বিজয়ী দলের এমন ছন্নছাড়া দশা শুধুমাত্র মাঠে নয়, প্রভাব ফেলেছিল মাঠের বাইরেও। আচমকা মরশুম শুরুর আগে অধিনায়ক বদল—রোহিত শর্মাকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে নেতৃত্বের রাশ তুলে দেওয়া সমর্থকদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। দলের অন্দরেও যে গড়বড় রয়েছে, সাজানো সংসারে ভাঙন শুরু হয়েছে—খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায় তার ছাপ ফুটে ওঠে। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়ায় যে, অধিনায়ককে বিদ্রুপ পর্যন্ত শুরু করেন সমর্থকরা। রোহিতের পক্ষে দাঁড়ানো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স সমর্থকদের একাংশ সরাসরি হার্দিকের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে।
এই অবস্থা থেকে ছ’মাসের মধ্যে বদলে যায় আমূল পরিস্থিতি। প্রথমে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়, তারপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাতে ঘরে ফেরা—টিম ইন্ডিয়ার সাফল্যের অন্যতম কাণ্ডারী হয়ে উঠেছেন হার্দিক। বদলে গেছে তাঁর দুনিয়া। অন্ধকার থেকে ফিরে এসেছেন আলোয়। এক মরশুম বাদে ফের আইপিএল। জাতীয় দলের দায়িত্বে আপাতত মুলতবি। নীল জার্সিতে আরেকবার ওয়াংখেড়েতে নামতে চলেছেন হার্দিক। সেই ওয়াংখেড়ে, যেখানে একটা সময় দলের সমর্থকরাই অধিনায়ককে কটূক্তিতে ভরিয়ে দিয়েছিল।
কামব্যাকের পর যদিও পুরোনো স্মৃতি মনে করতে রাজি নন হার্দিক। চান সামনে তাকাতে। সম্প্রতি জিওহটস্টারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ভারতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার খুলে বলেছেন তাঁর মনের কথা। হার্দিকের মতে, লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে দেওয়ায়টা তাঁর ধাতে নেই। জীবনে এমন সময় এসেছে, যখন জয় কিংবা সাফল্য নয়, টিকে থাকা, লড়ে যাওয়াটাই জীবনের মুখ্য হয়ে উঠেছিল।
হার্দিক বলেন, ‘আমি বুঝেছিলাম, চারদিকে যাই ঘটে চলুক না কেন, ক্রিকেটই হতে চলেছে আমার প্রিয়তম ক্ষেত্র। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাছিলাম। আর শেষমেশ যখন পরিশ্রমের ফল মিলল, তখন সেটা কল্পনা ও অনুমানের চেয়েও অনেকটা বেশি ছিল।‘
অল্পদিনের মধ্যে দুনিয়া বদলে যাওয়া নিয়েও নির্লিপ্ত হার্দিক। জানালেন, ‘ছ’মাসের মধ্যে টি-২০ বিশ্বকাপ জয় এবং তারপর দেশে ফিরে সম্মান ও ভালবাসা লাভ—সত্যি বলতে এটা আমার জীবনে ৩৬০ ডিগ্রির পরিবর্তন ছিল। আমি জানতাম না কখন সবকিছু বদলাবে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে আড়াই মাসে সব পালটে যায়। তাই হয়তো কথায় বলে—ভাগ্য সবকিছু লিখে রাখে।‘
নিজের জীবনের সূত্রে তরুণ, উঠতি ক্রিকেটারদের অনুপ্রেরণা জোগানোর মন্ত্রও দিয়েছেন হার্দিক। তাঁর বার্তা খুব স্পষ্ট: ‘নিজের উপর আস্থা রাখো। এই স্তরের ক্রিকেটে আত্ম-সন্দেহই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কখনও কখনও ক্রিকেটাররা প্রশ্ন করতে থাকেন—আমি এতকিছুর যোগ্য তো? এই সংশয় তাঁকে দক্ষতা থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দেয়। আসলে মানসিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ খুব গুরুত্বপূর্ণ।‘