শেষ আপডেট: 1st October 2024 20:56
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কানপুর টেস্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জেতার পাশাপাশি টিম ইন্ডিয়া এই সিরিজটা ২-০ ব্যবধানে নিজেদের পকেটে পুরে ফেলেছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে জসপ্রীত বুমরাহ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজা তিনটে করে উইকেট শিকার করার দৌলতে টাইগারবাহিনী মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায়।
ভারতের সামনে জয়ের জন্য ৯৫ রানের টার্গেট ছিল। টিম ইন্ডিয়া মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই সেই টার্গেট হাসিল করে নেয়। টিম ইন্ডিয়ার এই জয়ের নেপথ্যে একাধিক ক্রিকেটারের অবদান রয়েছে। তবে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ছোট্ট একটি সিদ্ধান্ত গোটা ম্যাচের রং একেবারে বদলে দেয়।
এই ম্যাচের প্রথম তিন দিন বৃষ্টির কারণে মাত্র ৩৫ ওভারই খেলা হয়েছিল। সেইসময় মনে হয়েছিল যে এই ম্যাচটা নিশ্চিতভাবে ড্র'র দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু চতুর্থ দিনের খেলা যখন শুরু হল, তখন রোহিত শর্মার একেবারে আলাদা মাইন্ডসেট দেখতে পাওয়া যায়। প্রথমে তিনি দলের বোলারদের উপর ভরসা রাখেন এবং মাত্র ২৩৩ রানে বাংলাদেশকে অলআউট করে দেন। প্রথম দিন ৩৫ ওভার খেলার পর বাংলাদেশ আর ৪০ ওভারও খেলতে পারেনি। ৭৪.২ ওভারেই তারা গুটিয়ে যায়। চতুর্থ দিনেই শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
এরপর আসে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাট করার পালা। টিম ইন্ডিয়ার দুই ওপেনার রোহিত শর্মা এবং যশস্বী জয়সওয়াল একেবারে রণংদেহি মেজাজে ব্যাট করতে নামেন। তাঁরা স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন যে টি-২০ স্টাইলে রান তুলবে ভারত। একদিকে হাসান মেহমুদের প্রথম ওভারে তিনটে বাউন্ডারি হাঁকান যশস্বী। অন্যদিকে, খালিদ আহমেদকে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে স্বাগত জানান। টেস্ট ক্রিকেটে রোহিত শর্মা চতুর্থ ব্যাটার যিনি জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করলেন।
এই দুই ব্যাটার দ্রুতগতিতে স্কোরবার্ড বদলাতে শুরু করেন। আর সেকারণেই মাত্র ৩ ওভারে ভারত ৫০ রানের চৌকাঠে পা রাখে। এই ফরম্যাটে ইতিপূর্বে কোনও দল এত দ্রুত দলগত হাফসেঞ্চুরি করেনি। এরপর টিম ইন্ডিয়া ১০০, ১৫০, ২০০ এবং ২৫০ রান করার ক্ষেত্রেও রেকর্ড কায়েম করেন। টিম ইন্ডিয়া বেশ কয়েকটি উইকেট হারালেও, স্কোরবোর্ডের উপর তার কোনও প্রভাব পড়েনি।
ভারতের হয়ে যশস্বী জয়সওয়াল ৭২ এবং কেএল রাহুল ৬৮ রান করেন। ২৮৫ রানের মাথায় আকাশ দীপের উইকেট পড়তে না পড়তেই রোহিত প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করার সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। টিম ইন্ডিয়া মাত্র ৩৪.৪ ওভারেই এই রানটা করে ফেলে। আর এভাবে মাত্র এক সেশনের মধ্যেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত ৫২ রানের গুরুত্বপূর্ণ লিড নিয়ে ফেলে।
ম্যাচের চতুর্থ দিনই বাংলাদেশ মাত্র ২৬ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারিয়ে ফেলে। পঞ্চম দিন বাংলাদেশ এই ম্যাচটা ড্র করতে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু, ভারতীয় বোলাররা একেবারে প্রস্তুত ছিলেন। অধিনায়ক রোহিত শর্মা উইকেটের দু'দিক থেকে জসপ্রীত বুমরাহ এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে কাজে লাগান। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ন মোমিনুল হকের উইকেট শিকার করলেন অশ্বিন। এরপর লিটন দাস এবং সাকিবের উইকেট শিকার করে রবীন্দ্র জাদেজা বাংলাদেশের মেরুদণ্ড কার্যত ভেঙে দেন।
বাংলাদেশের এই দুই ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর অভিজ্ঞ মুশফিকুর ব্যাট করতে নেমেছিলেন। তিনি একাই লড়াই চালিয়ে গেলেন। শেষপর্যন্ত ৩৭ রান করেন তিনি। আর এভাবেই বাংলাদেশ ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। টিম ইন্ডিয়ার সামনে জয়ের জন্য মাত্র ৯৫ রানের টার্গেট ছিল। ভারতীয় ক্রিকেট দল এই রানটা তিন উইকেট হারিয়ে অর্জন করে নেয়।