শেষ আপডেট: 25th October 2024 16:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কী হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের? শোনা যাচ্ছিল, বর্ডার-গাভাসকার ট্রফির আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজেই প্রস্তুতি সারতে চায় টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু, ভারতীয় ক্রিকেট দল আপাতত সিরিজ বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে। আর সেইসঙ্গে গড়েছে এক লজ্জার নজির।
একটা টেস্ট ম্যাচে এমন পরিসংখ্যান, তাও মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু, ব্যাক টু ব্যাক দুটো টেস্ট ম্যাচে রোহিত শর্মার দলকে এই চরম অপমানের মুখে পড়তে হল। ২৩ বছর আগে অর্থাৎ ২০০১ সালে যে লজ্জার সম্মুখীন হয়েছিল টিম ইন্ডিয়া, রোহিত শর্মার নেতৃত্বে আরও একবার সেই অন্ধকার অধ্যায় ফিরে এল। এই দায় কীভাবে এড়াবেন রোহিত শর্মা?
চলতি সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ম্যাচটা ভারতীয় ক্রিকেট দল বেঙ্গালুরুতে খেলতে নেমেছিল। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে টিম ইন্ডিয়া মাত্র ৪৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। ওই ম্যাচে কিউয়িরা ৩৫৬ রানের লিড নিয়েছিল। আর এই লিডই শেষপর্যন্ত ম্যাচের নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। ভারতকে ৮ উইকেটে ম্যাচটা হারতে হয়েছিল।
একটা ম্যাচে যদি এমন ফলাফল হয়, তাহলে চিন্তার কোনও কারণ থাকে না। কিন্তু, পুনেতে সেই একই গল্পের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাওয়া গেল। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচেও প্রায় একই হাল হয়েছে টিম ইন্ডিয়ার। প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ড যেখানে ৩৫৬ রানের লিড নিয়েছিল, দ্বিতীয় ম্যাচে সেখানে ১০৩ রানের লিড নেয়। অর্থাৎ ভারতের মাটিতে পরপর ২ ম্যাচে ১০০-র বেশি রানে লিড বিশ্বের বহু তাবড় তাবড় দেশই নিতে পারেনি। আর সেকারণেই ২৩ বছর পর আবার এমন বিরল পরিসংখ্যানের সাক্ষী থাকল ক্রিকেট বিশ্ব।
ইতিপূর্বে ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়া পরপর ২ ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে লিড নিয়েছিল। সেইসময় স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়া দল প্রথমে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ১৭৪ রানের লিড নিয়েছিল। এরপর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে লিড নিয়েছিল ২৭৪ রানের। তারপর থেকে ভারতে টেস্ট ম্যাচ খেলতে এসে কোনও দল এই রেকর্ড কায়েম করতে পারেনি।
তবে এবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়াকে সেই দিনটাও দেখতে হল। আপাতত দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে (৪২ ওভার শেষে) ২৮০ রানের লিড নিয়ে ফেলেছে। হাতে বাকি রয়েছে ৬ উইকেট। ৪০০ রানের কমে যে তারা থামতে চাইবে না, তা বলাই বাহুল্য। ফলে এই পরিস্থিতি থেকে টিম ইন্ডিয়ার পক্ষে ম্যাচ জেতা কার্যত অসম্ভব। কোনওরকমে যদি তারা ম্যাচটা ড্র করতে পারে, তাহলেই অনেক বড় প্রাপ্তি হবে।
পুনে টেস্ট ম্যাচ হেরে গেলে সিরিজ তো হাতছাড়া হবেই, উলটে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত উঠতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে। আপাতত WTC পয়েন্টস টেবিলে শীর্ষস্থানে রয়েছে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু, এই ম্যাচটা হেরে গেলে তাদের অনেকটাই ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এরপর আবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে হবে। ঘরের মাটিতে জেতার জন্য অজিরা আপাতত মুখিয়ে রয়েছে। ভারত যেখানে ঘরের মাটিতেই জিততে পারছে না, সেখানে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে প্রত্যেকটা ম্যাচ জিতবে এমন কল্পনাও বাতুলতা। সেকারণে আপাতত দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটা জেতার জন্য ভারতকে আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। যদি এই সিরিজে টিম ইন্ডিয়ার সামান্যতম আশাও অবশিষ্ট থাকে, তাহলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার স্বপ্নটাও বেঁচে থাকবে।