
ক্রিকেটের ব্যাট তৈরিতে উইলো গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। তার কার্যকারিতাও সবর্জনবিদিত ছিল। কিন্তু সেই উইলোর জায়গা নিতে চলেছে বাঁশ।
ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় ক্রিকেটের ব্যাট তৈরিতে বাঁশের ব্যবহারে অভাবনীয় সাফল্য দেখা গেছে। যার ফলে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির খরচও কমিয়ে আনা যাচ্ছে কয়েকগুন।
ইংল্যান্ড কিংবা কাশ্মীরে জন্মানো উইলো গাছের কাঠ থেকেই সাধারণত বর্তমান সময়ে ব্যবহার করা ব্যাটগুলো তৈরি করা হয়। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন গবেষক, দারশিল শাহ এবং বেন টিঙ্কলার ডেভিস গবেষণা করে বের করেছেন, উইলো কাঠের চেয়ে অনেক কম খরচে বাঁশ দিয়ে ব্যাট তৈরি করা সম্ভব।
লন্ডন টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গবেষক দারশিল শাহ বলেন, ‘‘বাঁশের ব্যাটের সুইট স্পট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেটার আঘাতে ইনিংসের সূচনাতেও ইয়র্কার লেন্থের বলকে বাউন্ডারি বানানো যাবে। সবচেয়ে মজার বিষয় হল, এই ব্যাট দিয়ে সব ধরনের স্ট্রোক খেলা সম্ভব।’’
গার্ডিয়ান পত্রিকার দাবি, ‘‘ইংলিশ উইলো গাছের পরিমাণ কমে যাওয়া এবং কাঠ সরবরাহে সঙ্কট দেখা দেওয়ায় একটা বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। একটি গাছ রোপন করার পর এটা থেকে ভালমানের কাঠ সংগ্রহ করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগে। এ কারণে হয়তো নতুন করে গাছ লাগানোও হচ্ছে; কিন্তু অপ্রতুলতা দেখা দিয়েছে এরই মধ্যে। আবার সংগৃহীত কাঠ থেক ব্যাট তৈরি করতে গেলে ১৫ থেকে ৩০ ভাগ কাঠ নষ্ট হয়ে যায়, সেটিও একটি সমস্যা।’’
ওই দুই গবেষক জানিয়েছেন, বাঁশের ব্যাট অনেক কম দামে তৈরি করা সম্ভব। বাঁশ দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যে কারণে তার পরিমান নিয়ে ভাবতে হয় না। এরমধ্যে টেকসই উপাদানও রয়েছে। এর অঙ্কুরগুলি আগের গাছ থেকে বেড়ে ওঠে এবং সাত বছরের মধেই একটা পূর্ণ ব্যবহারযোগ্য বাঁশ পাওয়া যায়।’’
শাহ বলেন, ‘বাঁশের ব্যাট দিয়ে ক্রিকেট অপ্রচলিত দেশগুলো যেমন- জাপান, চীন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে দ্রুত ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব হবে।’
গবেষকদের মতে, তাদের ব্যাট উইলো কাঠের তৈরি ব্যাটের তুলনায় অনেক কঠিন এবং শক্তিশালী। শাহ বলেন, ‘‘উইলো ব্যাটের চেয়ে অনেক শক্ত এই ব্যাট এবং আমরা এই ব্যাট নিয়ে খুবই আশাবাদী।’’